নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রথমবারের মতো ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যান চলাচল বন্ধ থাকার সময় কমিয়ে এনেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পূর্বে যে কোনো নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগে ও পরে ২৪ ঘণ্টা সবধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হতো। তবে আসছে ঢাকা সিটির ভোট গ্রহণের জন্য তা কমিয়ে ১৮ ঘণ্টা করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ৩১ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা থেকে ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগের মতোই সব পরিবহন চলতে পারবে। উল্লিখিত সময়ে বন্ধ থাকবে সব ধরনের গণপরিবহনও।
গতকাল সোমবার ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজধানীতে যান চলাচল বন্ধ থাকলে জনসাধারণের ব্যাপক ভোগান্তি হয়। সে জন্য কমিশন আরো শিথিল হতে চেয়েছিল। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের মুভমেন্টের সুবিধার্থে সব যান চলাচল বন্ধের পক্ষে অনড়। তাই শিথিলতা আর করা হচ্ছে না। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই বন্ধ থাকবে গণপরিবহন।
এ বিষয়ে ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান বলেন, ২২ জানুয়ারির বৈঠকে সবকিছু চূড়ান্ত করা হবে। তবে কমিশন চায় না জনসাধারণের কোনো অসুবিধা হোক। আবার ভোটের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে আগে ৭৮ ঘণ্টা বাইক চলাচলে বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিলেও তা পরিবর্তন করে ৫৪ ঘণ্টায় নামিয়ে এনেছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে ৩০ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা থেকে ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত বাইক চলাচল বন্ধ থাকবে।
ইসির উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান যান চলাচলে কড়াকড়ির সময় কমিয়ে আনার নির্দেশনাটি বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবের কাছে পাঠিয়েছেন।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিবসের পূর্ববর্তী মধ্যরাত অর্থাৎ ৩১ জানুয়ারি দিনগত রাত ১১টা থেকে ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বেবিট্যাক্সি/অটোরিকশা, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ ভ্যান, কার (ব্যক্তিগত বাদে), বাস, ট্রাক, টেম্পো চলাচল বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে ৩০ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা থেকে ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
তবে মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন যানবাহনের ওপর উপরোল্লিখিত নিষেধাজ্ঞা রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী/তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য।
এছাড়া নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি সাংবাদিক পরিচয়পত্র থাকতে হবে, নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং কতিপয় জরুরি কাজ যেমন-অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য উল্লিখিত যানবাহন ও মোটরসাইকেল চলাচলের ক্ষেত্রে উক্ত নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
আবার জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর ও জরুরি পণ্য, ওষুধ, খাদ্য ইত্যাদি দ্রব্যাদি সরবরাহসহ অন্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এরূপ নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মহাসড়ক ছাড়াও আন্তঃজেলা বা মহানগর থেকে বের হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মহাসড়ক ও প্রধান প্রধান রাস্তার সংযোগ সড়ক বা উক্ত রূপ সব রাস্তায় নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে হবে।
ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার (রেন্ট-এ-কার বা ভাড়ায় চালিত গাড়ি ব্যাতিত) ও প্রতিবন্ধী ভোটারদের সহায়তায় নিয়োজিত গাড়ির ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল থাকবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।