নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গ্রেপ্তার হওয়া বাউল শিল্পী শরিয়ত বয়াতিকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনিরা হক মনি। আদেশের বিষয়টি তিনি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল গিয়াস উদ্দিন আহমেদ।
মনিরা হক বলেন, ‘গত রোববার তারা জামিন আবেদন উপস্থাপনের পর রাষ্ট্রপক্ষ সময় নিয়েছিল। বুধবার সেই শুনানি শেষে আদালত রুল দিয়েছে। শরিয়ত বয়াতির যে ভিডিওকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, ৫১ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের সেই ভিডিওর অনুলিখন আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমরা বলেছি, শরিয়ত বয়াতির ভিডিওটি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে মামলা করা হয়েছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘সেখানে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার মত কিছু নাই। তাছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৮/২ ধারা তার জন্য প্রয়োজ্য নয়। ফলে তার বিরুদ্ধে এ মামলাই চলে না। এসব যুক্তি উপস্থাপন করে আমরা জামিন চেয়েছিলাম। আদালত রুল জারি করেছে।’
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আগধল্লা গ্রামের বাউল শরিয়ত বয়াতি (৩৫) গত ২৪ ডিসেম্বর ঢাকার ধামরাই উপজেলার একটি বাউল গানের আসরে যান। সেখানে পালা গানে ইসলাম ও কোরআন হাদিস নিয়ে কিছু কথা বলেন। ইউটিউবে তার এ বক্তব্য নিজগ্রামের কিছু মানুষ দেখে। এরপর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছে বলে লোকজন অভিযোগ এনে শরিয়ত বয়াতির বিচারের দাবিতে এলাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেন।
এরপর গত ৯ জানুয়ারি শরিয়ত বয়াতির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের অভিযোগে মির্জাপুর উপজেলার আগধল্যা গ্রামের মো. ফরিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন। ১১ জানুয়ারি ভোরে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বাশিল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওইদিনই টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আসলাম মিয়ার আদালতে হাজির করে মির্জাপুর থানা পুলিশ দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে শরিয়ত বয়াতিকে টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠান।
এরপর জামিন আবেদন করলে টাঙ্গাইলের জেলা ও দায়রা জজ আদালত শরিয়ত বয়াতির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।