স্বরূপকাঠীর জুলুহারে অসহায় কর্মহীন মানুষদের খাদ্য সহায়তা

জীবন-যাপন সারাদেশ স্বাস্থ্য

 

নিজস্ব প্রতিনিধি : বাংলাদেশে এখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ৮ মার্চ যখন করোনা আক্রান্ত প্রথম শনাক্ত হয়, তখন তা ছিলো এক অঙ্কের কোটায়। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক রয়েছেন। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৫০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তে টেস্ট করা হয়েছে এক হাজার ৭৪০টি। এখন পর্যন্ত মোট টেস্ট করা হয়েছে ১৪ হাজার ৮৬৮টি। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও শনাক্ত হয়েছে ২১৯ জন এবং করোনায় মোট শনাক্ত হলেন এক হাজার ২৩১ জন। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন সাত জন এবং এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৪৯ জন। বৈশ্বয়িক করোনা মোকাবেলায় ইতোমধ্যে শহর থেকে গ্রামের এক প্রকার গৃহবন্দী হিসেবে দিন যাপন করছে। অনেকে ঘর থেকে বের হতে না পারায় অসহায় হয়ে পড়েছেন। এরকম অসহায়দের পাশে দাড়িয়েছেন পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠীর সমুদয়কাঠীর এ জেড এম জাকির তহশিলদারের নেতৃত্বে একদল সমাজ হিতৈশী। এ বিষয় জাকির তহশিলদার জানান গত ১০ এপ্রিল শুক্রবার আল্লাহর অশেষ রহমতে জুলুহার, মেসন্ডা, শ্রীপতিকাঠী তিনটি গ্রামের অসহায় কর্মহীন ১৪০টি পরিবারের মধ্যে খাদ্য সহায়তা পৌছে দিতে পেরেছি। এর জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি। এই কাজ সহায়তার মূল উৎসাহ দানকারী আবু বকর মাষ্টারে এর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সেই সাথে এরূপ একটি মহান কাজে উৎসাহ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। এই খাদ্য সহায়তা প্রকল্পটি আমার একার অর্থায়নে হয়নি, যারা অর্থ ও শ্রম দিয়ে যারা সর্বাধিক চেষ্টা করেছেন তারা হলেন মনিরুজ্জামান চান ভাই, মো. মহসীন, মো. চান মিয়া, ফরিদ খান, মিরাজ হোসেন, গৌতম পাল, মিন্টু মহুরী, পলাশ গুহ, মাকসুদ খান, প্রভাষক মঞ্জুরুল হাসান, মাষ্টার ফারুক হোসেন, মেসন্ডা মসজিদের ইমাম জনাব ইলিয়াস হোসেন।
অসহায় ও কর্মহীন মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেয়ার জন্য আমরা যখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বৈঠক করি তখন সকলের মতামত গ্রহণ করে যারা আমাদের গ্রামের লোক তবে গ্রামের বাহিরে থাকে তাদের সাথে আলাপ করে তাদের সহায়তা পাওয়া কিনা সেজন্য তাদের ফোন দিয়ে অবহিত করা হয় এবং তাদের আর্থিক সহযোগিতা চাওয়া যায়, ঐ বৈঠকে বসে আমাকে এক বড় ভাই উচ্চ শিক্ষিত অর্থনৈতিক ভাবে খুবই ভালো তার নিকট ফোন দিলাম তিনি বললেন ভালো উদ্যোগ, জিজ্ঞাস করলাম আপনি কি সহযোগিতা করতে পারবেন? তিনি জবাবে জানালেন আমি আগামী দিন বিকাশে পাঠাব। জিজ্ঞেস করলাম কত? উত্তরে বলল পাঠিয়ে তার পর বলব। এরপর আর এক বড় ভাইয়ের নিকট ফোন দিলাম তিনি বললেন আগামী দিন বাড়ি আসছি, যদি দেখা না হয় তবে বিকাশে পাঠাব। পরের দিন ফোন দিয়ে জানান বড়দাদা ছোট ভাইয়ের সাথে আলাপ করে ভালো কিছু সহায়তা দিন কিন্তু তিনি তার সহযোগিতা করলেন না। পরবর্তীতে জানতে পারলাম পাড়ায় হিন্দু সমাজ কিছু সংখ্যক লোকদের সহায়তা দেন।
আবু বকর মাষ্টারের নির্দেশনা মতে আরেক ছোট ভাই উচ্চ শিক্ষিত তথা অর্থনৈতিক ভাবে খুবই প্রতিষ্ঠিত তার সাথে আলোচনা করলাম, তিনি জানালেন ঢাকায় জুমেশ্রী নামে একটা সমিতি আছে তারা সহায়তা প্রদান করবে। জেনে খুবই ভালো লাগলো। কারণ খাদ্য সহায়তাটা একটু ভালো মানের হবে। কিন্তু চার/পাচ দিন অপেক্ষা করে দেখলাম তাদের ব্যানারে এই সহায়তা দিতে হবে। আমাদের বৈঠকে সবাই জানান আমরা কোন ব্যানারে যাব না। আমরা নিজেদের আর্থিক সহযোগিতায় যদি পাঁচজনকে দিতে পারি সেটা দিব। আসলে একটি ভালো উদ্যোগ তা দিন দিন অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছে। মন খুব খারাপ লাগলেও, মনবল হারায়নি আমার। কারণ আমার কিছু পরিচিত লোক আছে তাদের নিকট ফোন দিলাম তারা আমাকে সহযোগিতা করল। পিন্টু দাস, অনুপ চক্রবর্তী, নজরুল মাষ্টার, সুজন দাস, ঊত্তম হালদার এদের সহযোগিতা ও উৎসাহ বর্ননাতীত।
যা হোক আমার এই সামাজিক কর্মকান্ড উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত তারপরও যাহারা বেশি বেশি উৎসাহ তথা পথ দেখিয়েছেন তার মধ্যে অন্যতম আমার চাচাত ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আবুবক্কর সিদ্দিক ও সেহাংগলের হানিফ খান (রিপন স্যার) আমি তাদের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পরিশেষে মহান আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাচ্ছি যে, হে আল্লাহ আমার দ্বারা যেন কল্যাণ মূলক কাজ হয়। আমি যেন পিতার আর্দশ নিয়ে চলতে পারি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *