ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন
নিজস্ব প্রতিনিধি : বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন-২০২০ এর খসড়া চূড়ান্ত করা বৈঠক নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ, নীতি নির্ধারণী এই বৈঠকে অনেককেই ডাকা হয়নি। যেসব প্রতিষ্ঠানকে ডাকা হয়েছে তারা অনেকেই রেজিস্ট্রেশনহীন নাম সর্বস্ব, অস্তিত্বহীন ও ভূঁইফোড় প্রতিষ্ঠান।
ভূঁইফোড় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন-২০২০ এর খসড়া আইন চূড়ান্ত করা হলে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হবে, যা প্রশ্নবিদ্ধ করবে বর্তমান সরকারের শিক্ষা খাতের বিপুল সাফল্য ও অগ্রগতিকে বলে মনে করেন কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, আজ বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় আন্ত:মন্ত্রণালয় ও স্টেকহোল্ডারদের ওই সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (আইন-১ শাখা) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত অনেক সংগঠন বিষ্ময় প্রকাশ করে অভিযোগ করে, আন্ত:মন্ত্রণালয় ও স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ে এ ধরনের বৈঠক করা নজিরবিহীন ঘটনা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রীতিতে এর আগে এ ধরনের বৈঠক আর ডাকা হয়নি।
তারা আরও অভিযোগ করে, বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে অধিকাংশের কোনো রেজিস্ট্রেশনই নেই। অনেক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নাম্ব সর্বস্ব, অস্তিত্বহীন ও ভূঁইফোড়। যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে তাদের একাধিক প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা একই। এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত ২০, ২১ ও ২২ নং এর কোনো রেজিস্ট্রেশন খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন। এমনকী ১৩ ও ২৩ এবং ১২ ও ২৫ নং প্রতিষ্ঠানের হোল্ডিং ও স্থান ঠিকানা একই।
অভিযোগে বলা হয়, বৈঠকে সক্রিয় ও রেজিস্টার্ড অনেক সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এছাড়া সারাদেশে ২৬টি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ থাকলেও এই চিঠিতে মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
এসব অভিযোগের বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (আইন-১ শাখা) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন-২০২০ এর খসড়া চূড়ান্ত করা বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে। অনেকেই হয়ত বাদ পড়তে পারেন। তবে তালিকায় থাকা অনেকেই এর আগে মতামত দিয়েছিল। আমরা তো আর সবাইকে চিনি না। তবে কেউ যদি বৈঠকে থাকতে চায় তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমার সাথে যোগাযোগ করলেই হবে। তারা সবাই এই বৈঠকে আসলে আমরাই উপকৃত হবো। আমাদের এই নীতিমালা আরও সমৃদ্ধ হবে।
নানান অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে এর আগে যারা মতামত দিয়েছিল আমরা তাদের ঠিকানাগুলোই জানি। আমরা তো আর সবার ঠিকানা জানিনা। কারণ আমরা তো আর তাদের নিয়ে কাজ করিনা। আমরা শুধু আইনটা নিয়ে কাজ করি। এটা অনেকের মতামত নিয়ে আমরা করেছি। এটা তো এখন প্রাইমারি ধাপ। আরও অনেক ধাপ বাকি।
এদিকে ইউনানী আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাখাতের স্টেকহোল্ডার অধ্যাপক আতাউর রহমান খান মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন।
অভিযোগে বলা হয়, অদৃশ্য কারণে প্রতিষ্ঠিত ও এ খাতের নিবেদিত সংগঠন, সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে অপেশাদার অনেক সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যা মারাত্মক অসঙ্গতি।
এছাড়াও কয়েকটি ইউনানী আয়ুর্বেদিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দাবি, অবিলম্বে আবার নতুন করে বৈঠক ডাকা হোক। সেখানে স্নাতকমানের কলেজের অধ্যক্ষদের ডাকা উচিত।