নিজস্ব প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে সাইফুল আলম নামে পুলিশের এক এসআই এবং সাইফুল ইসলাম নামে অপর এক কনস্টেবলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে আরো তিন সোর্সসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী আবু জাফর বাদী হয়ে মামলা দায়ের পর তাদের গ্রেফতার করা হয়।
তবে এ নিয়ে পুলিশের কোনো কর্মকর্তাই মুখ খুলতে রাজি হননি।
জেলা পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করলেও কোনো রকম মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
এস আই সাইফুল আলম এবং কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম সীতাকুণ্ড মডেল থানায় কর্মরত ছিলেন।
মামলার বাদী আবু জাফর বলেন, ‘পুলিশ আমার কাছে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছিল। আমি সব কিছু জানিয়ে মামলা করেছি।’
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, গত ২০ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে পিক-আপ গাড়ি কিনতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আসেন আবু জাফর নামে এক ব্যক্তি। গাড়ি বিক্রেতা তৌহিদের সঙ্গে তার গাড়ির দাম নিয়ে বনিবনা না হওয়া তিনি পুনরায় ঢাকা চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী শ্যামলী কাউন্টারে চলে আসেন। বাস কাউন্টারে বসে অপেক্ষা করার সময় দু’জন লোক তার দু’পাশে বসে তাকে আটকে ফেলে।
ওই দু’লোকের ফোন পেয়েই কিছুক্ষণের মধ্যে প্রাইভেট কারে করে সেখানে উপস্থিত হন এসআই সাইফুল আলম এবং কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম। আবু জাফরের কাছে ইয়াবা থাকার নাম করে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর শরীরে ইয়াবা থাকার সন্দেহে সীতাকুণ্ডে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে এক্সরে’ও করে। কিন্তু ইয়াবা না পেলেও সাথে থাকা ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন ওই দুই পুলিশ সদস্য। এমনকি সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নেন তারা।
টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পুলিশ সদস্যরা আবু জাফরকে পুনরায় ওই প্রাইভেটকারে করে শ্যামলী কাউন্টারে পৌঁছে দেয়। কিন্তু শ্যামলী কাউন্টারে পৌঁছার আগে আবু জাফর কান্নাকাটি শুরু করলে তখন পুলিশ সদস্যরা তাকে বলে ‘বাঁচবি না কি মরবি’। আবু জাফর বাঁচার আকুতি জানালে তারা তাকে শাসিয়ে দেয়। যাতে কাউকে টাকা নেয়ার কথা না বলে।
পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই দুই পুলিশ সদস্য ছাড়াও সোর্স রিপন, হারুন এবং রাজু নামে ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন আবু জাফর। এরপরই ওই দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
অবশ্য অভিযোগ পাওয়ার পরপরই অভিযুক্ত এস আই সাইফুল আলম এবং কনস্টেবল সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা।