চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্যের আইপি জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারের  রাজস্ব ফাঁকি :  জালিয়াতি চক্রের ১ সদস্য কে  গ্রেফতার করলো পিবিআই 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত চট্টগ্রাম জাতীয় প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি (চট্টগ্রাম) :  চট্টগ্রাম বন্দরে আইপি জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আমদানি পণ্য খালাস করে নেওয়া চক্রের ০১ সদস্যকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো। গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম রাজিব দাশ প্রঃ লিটন (৫১)। তিনি C&F প্রতিষ্ঠানের অধীনে জেটি সরকার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ১৪/০৯/২০২৫ খ্রি. তারিখ তাকে গ্রেফতার করা হয়।


বিজ্ঞাপন

গত ২৪ মার্চ  সকাল ৯ থেকে  হতে বিকাল ৫ টার  মধ্যে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান Talisman Ltd. ভারত থেকে বন্ড সুবিধার আওতায় প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার ৩০,০০০ পিস ও লেদার বেল্ট ৮২,০০০ পিস আমদানি করে। তাদের নিযুক্ত সিএন্ডএফ এজেন্ট Arif Maritime International C&F Ltd. বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে পণ্য খালাস করে নেয়। C&F দাখিলকৃত উক্ত চালানের জন্য ব্যবহৃত Import Permit (IP) No. IB2403200032240320, Dt: 24.03.2020 বেপজা সিস্টেমে যাচাই করলে জাল প্রমাণিত হয়। C&F এজেন্ট: Arif Maritime International C&F Ltd. এর সত্ত্বাধিকারী অরূপ কুমার সিনহা,  মোঃ ইব্রাহীম  মোঃ মিজানুর রহমান পণ্য চালানটি জালিয়াতীর মাধ্যমে খালাস করেছেন বলে  কাস্টম হাউস চট্টগ্রামের প্রাথমিত তদন্তে ওঠে আসে।

এই ঘটনায় সান্টু হাওলাদার, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, কাস্টম হাউস চট্টগ্রাম বাদী হয়ে ইপিজেড থানার মামলা নং- ০৪, তারিখ-০৫/০৮/২০২১ইং, ধারাঃ ৪৬৮/৪৭১ পেনাল কোড তৎসহ The Custom Act, 1969 এর ১৫৬(১৪) ধারায় মামলা দায়ের করেন।


বিজ্ঞাপন

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকার নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোতে ন্যস্ত হয় এবং ইন্সপেক্টর (নিঃ) মর্জিনা আকতার মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন।


বিজ্ঞাপন

পিবিআই প্রধান, অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ মোস্তফা কামাল এর সঠিক  দিক নির্দেশনায় এবং পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান এর তত্ত্বাবধানে ইন্সপেক্টর (নিঃ) মর্জিনা আকতারের নেতৃত্বে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর তদন্ত টিম গত ১৪ সেপ্টেম্বর,  ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে C&F প্রতিষ্ঠানের সাবেক জেটি সরকার আসামী ১। রাজিব দাশ প্রঃ লিটন (৫১), পিতা-মৃত চিত্ত রঞ্জন দাশ, সাং-কেলিশহর (নবারুণ ক্লাবের পার্শ্বে চিত্ত রঞ্জন দাশের বাড়ি), পটিয়া, চট্টগ্রাম কে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানাধীন আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর,  বিধি মোতাবেক তাকে আদালতে প্রেরণ করা হলে সে ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ এর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ ও আসামীর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনায় জানা যায় যে, আসামী রাজিব দাশ প্রঃ লিটন তার C&F প্রতিষ্ঠানের অধীনে জেটি সরকার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও মামলার এজাহারনামীয় ২নং আসামী মোঃ ইব্রাহিম এবং ৩নং আসামী মোঃ মিজানুর রহমানের সহায়তায় বিগত ২৪/০৩/২০২০ ইং তারিখ সকাল ৯ থেকে  বিকাল ৫ টার মধ্যে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান Talisman Ltd, Plot# 07-10 & 13-16, DEPZ, Extension Area, Ganakbari, Savar, Ashulia, Dhaka-1349; (BIN:000440412-0403) কর্তৃক ইন্ডিয়া হতে বন্ড সুবিধায় আওতায় প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার ৩০,০০০ পিস ও লেদার বেল্ট ৮২,০০০ পিস আমদানি করে।

তারা C&F প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজসে আইপি জালিয়াতির মাধ্যমে শুল্ক সুবিধা গ্রহণ পূর্বক জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে  উল্লেখিত পণ্য সমূহ খালাস করে নেয়।

সে C&F প্রতিষ্ঠানের মালিক এজাহারনামীয় ২ নং আসামী মোঃ ইব্রাহীমের নির্দেশে বন্দর হতে উল্লেখিত পণ্যসম্যুহ ডেলিভারির জন্য প্রস্তুতকৃত ডেলিভারী ডকুমেন্ট (ডি/ডি) সহযোগী আসামী জসিমের কাছে পৌঁছে দেন মর্মে স্বীকার করে।

সে উক্ত প্রতিষ্ঠানের জেটি সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে অপরাপর আসামীদের পরস্পর যোগসাজসে আইপি জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কাস্টমস হতে শুল্ক সুবিধা গ্রহণ পূর্বক জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর হতে পণ্য খালাস চক্রের সদস্য হিসেবে হিসেবে তার মালিক মোঃ ইব্রাহীমের নির্দেশে সহযোগী অপর আসামী মোঃ জসিমের নিকট প্রেরণ করে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

এ বিষয়ে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বলেন, “দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা ঘটনার বিষয়ে নিবিড়ভাবে তদন্ত শুরু করি। তথ্য-প্রযুক্তি ও বিশ্বস্ত সোর্সের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ঘটনার সাথে জড়িত C&F প্রতিষ্ঠানের সাবকে জেটি সরকার রাজিব দাশ প্রঃ লিটন (৫১) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে। বিধি মোতাবেক তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে সে ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *