নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা সদরঘাটে একটি লঞ্চের ধাক্কায় নৌকা ডুবে বুড়িগঙ্গায় নিখোঁজ ভাই-বোনের লাশ উদ্ধার করেছেন নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রাসেল শিকদার জানান, শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে সদরঘাটের এক নম্বর পন্টুন বরাবর মাঝ নদীতে নৌকাডুবির ওই র্ঘটনা ঘটে। বেলা ১২টার পর মিনিট দশেকের ব্যবধানে কাছাকাছি এলাকা থেকে শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করা হয় বলে সদরঘাট নৌ থানার ওসি মো. রেজাউল জানান। মৃত শিশু দুটির মধ্যে ১২ বছর বয়সী ভাইটির নাম মিশকাত। আর তার বোন নুসরাতের বয়স ৫ বছর। তাদের বাবা বাবুল ফরাজী কেরানীগঞ্জ এলাকায় ব্যবসা করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার উত্তমপুর গ্রামে। মিশকাতরা বরিশালে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিল বেড়াতে। বাবুল ফরাজী কেরানীগঞ্জেই ছিলেন। তাই রাতের লঞ্চে বরিশাল থেকে মামা শামীম হাওলাদারের সঙ্গে ঢাকায় ফেরে মিশকাতরা। ভোরে ঢাকা সদরঘাটে পৌঁছানোর পর নৌকায় করে কেরানীগঞ্জের বাসায় ফেরার পথে তারা দুর্ঘটনায় পড়ে। শামীম হাওলাদার জানান, তার বোন জোসনা, তাদের তিন সন্তান মিশকাত, নুসরাত ও এক বছর বয়সী নুসাইবা ছিল ওই নৌকায়। মাঝ নদীতে এমভি পুবালী-৫ লঞ্চের ধাক্কায় নৌকাটি ডুবে যায়। নুসাইবা ছিল আমার কোলে। ধাক্কা লাগার পর দেখলাম আমরা লঞ্চের নিচে, পানির মধ্যে। কোনো রকমে সাঁতরে বের হই। জোসনাও বের হয়। কিন্তু মিশকাত আর নুসরাতকে পাওয়া গেল না। খবর পেয়ে মিশকাতদের বাবা বাবুল ফরাজী কেরানীগঞ্জ থেকে সদরঘাটে ছুটে আসেন। পুলিশ ও ঘাটে থাকা নৌকাগুলো তাৎক্ষণিকভাবে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও নৌবাহিনীর ডুবুরিরা নদীতে নেমে তল্লাশি শুরু করেন। কোস্ট গার্ড ও আইডব্লিউটিএ-এর উদ্ধারকর্মীরাও তল্লাশি অভিযানে অংশ নেন। সদরঘাট নৌ থানার ওসি মো. রেজাউল জানান, এক নম্বর পন্টুন বরাবর নদী থেকে প্রথামে মিশকাতের লাশ উদ্ধার করেন নৌবাহিনীর ডুবুরিরা। কিছুক্ষণ পর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা কাছাকাছি এলাকায় নদী থেকে নুসরাতের লাশ উদ্ধার করেন। বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক মো. সেলিম বলেন, পুবালী লঞ্চটি সদরঘাটে যাত্রী নামিয়ে কেরানীগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। নৌকাটি লঞ্চের পেছন দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা ঘটে। মাঝি দেখেশুনে চালালে এ দুর্ঘটনা হত না।