বিশেষ প্রতিবেদক : চিকিৎসকের দেয়া ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই রাজধানীর ফার্মেসিগুলোতে বিক্রি হচ্ছে নিয়ে জ্বর, ঠান্ডা ও এন্টিবায়োটিক ওষুধ। করোনা প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়া রাজধানীবাসী এসব ওষুধগুলো কিনে ঘরে রাখছেন বলে জানা গেছে। ফলে ফার্মেসিগুলোতে জ্বর, ঠান্ডা ও এন্টিবায়োটিক ওষুধের চাহিদা আগের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে। বিশেষ করে প্যারাসিটালমল জাতীয় ওষুধের চাহিদা সবচেয়ে বেড়েছে।
গত তিন দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ফার্মেসি ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ওষুধ বিক্রয়কারী ফার্মেসি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সকল ধরণের প্যারাসিটামল ওষুধের চাহিদা আগের চাইতে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বেড়েছে ঠান্ডা ও কাশির ওষুধের চাহিদা।
মানিকনগর, মুগদা, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, মোহাম্মদপুর, আদাবর, দারুসসালাম, কামরাঙ্গীর চর, হাজারীবাগের, গাবতলী, মিরপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ফার্মেসীগুলোতে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদীয়া হাউজিং এলাকার ‘জোহরা ফার্মেসি’নামে একটি ফার্মেসির মালিক ফৌজিয়া আফরিনের ভাষ্য, গত তিন দিনে প্যারাসিটামলের চাহিদা অপ্রত্যাশিত হারে বেড়েছে। ফৌজিয়া বলেন, ‘প্যারাসিটামলের মধ্যে নাপা ও নাপা এক্সটেন্ডের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে চাহিদার তুলনায় সাপ্লাই নেই। অনেককেই ফেরত দিতে হচ্ছে। সম্ভবত প্রয়োজনের তুলনায় বাড়তি ওষুধ অনেকে মজুদ করে রাখার চেষ্টা করছেন।
‘পাশাপাশি ঠান্ডা ও কাশির ওষুধের চাহিদা অনেকটা বেড়েছে। কেউ কেউ ঠান্ডা ও কাশির জন্য এন্টিবায়োটিক চাচ্ছেন। কিন্তু প্রেসক্রিপশন নেই। ফলে আমরা তা বিক্রি করতে পারছি না।’-বলেন ফৌজিয়া। তার মতে কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট এজিথ্রোমাইসিন, ইভেরাসহ সকল ওষুধের চাহিদাই এখন বেশি।
ফৌজিয়ার মতো একই তথ্য জানিয়েছেন একই এলাকার তারেক মেডিসিন কর্নারের মালিক রেজাউল করিম বলেন, প্যারাসিটামলের চাহিদা সব সময়ই বেশি থাকে। তবে এখন আগের তুলনায় চাহিদা বেড়েছে। আমার কাছে সব ধরণের প্যারাসিটামল মানে ট্যাবলেট থেকে সিরাপ পর্যন্ত সব কিছুরই চাহিদা রয়েছে। তবে পর্যাপ্ত ওষুধ পাচ্ছি না।
চাহিদার তুলনায় নাপার সরবরাহ কম হওয়ায় বেড়েছে দাম। মোহাম্মদপুরের টাউন হলের বেশ কিছু ফার্মেসি ঘুরেও নাপা ট্যাবলেট পাননি মো. সোহেল। পরে একটি ফার্মেসিতে পাওয়া গেলেও এক পাতা নাপার জন্য তাকে গুণতে হয়েছে ১৫ টাকা।
আবার মিরপুর ১ নম্বর, গাবতলি, মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিং এলাকায় প্রতি পাতা নাপা ট্যাবলেট ১৫ থেকে ২০ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা গেছে। যদিও প্রতি পাতা নাপার বাজার মূল্য ১০ টাকা। উপায় না পেয়ে বাড়তি দামেই ওষুধ কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
ফার্মেসি মালিকদের ভাষ্যমতে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় নাপার চাহিদা বেড়েছে। কোম্পানি থেকে যা পাওয়া যাচ্ছে, তা দিয়ে চলছে না। ফলে ভিন্ন মাধ্যমে বাড়তি দামে ওষুধটি কিনতে হচ্ছে তাদেরকেও। সেজন্য দাম বেড়েছে। আবার প্রয়োজনের তুলনায় অনেকে অতিরিক্ত ওষুধ কিনে রাখায় দাম বাড়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন ফার্মেসি মালিকরা।
এদিকে মোহাম্মদপুরের নবীনগর, ঢাকা উদ্যান, আদাবরের সুনিবিড় হাউজিং, আদাবর ১০, আদাবর ১৬, ১৭ নম্বর এলাকা, দারুসসালাম, গৈদারটেক, সেকেরটেক, কামরাঙ্গীর চর, হাজারীবাগের বউবাজার, মিরপুর এলাকায় চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই এন্টোবায়োটিক ওষুধ বিক্রির চিত্র দেখা গেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে এজিথ্রোমাইসিন ও অ্যামক্সসিসিলিন।