নিজস্ব প্রতিবেদক : হলি আর্টিজানে হামলার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের সবাই হয়তো কোনো অভিযানে নিহত হয়েছেন, নয়তো গ্রেফতার হয়ে জেলখানায় রয়েছেন। এমন ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি আর বাংলাদেশে না ঘটে, সে লক্ষ্যে পুলিশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার তিন বছর উপলক্ষে নিহতদের স্মরণে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। মনিরুল ইসলাম বলেন, তিন বছর আগে আজকের এদিনে হলি আর্টিজানে নৃশংস জঙ্গি হামলায় দুই পুলিশ সদস্যসহ ২২ জন নিহত হয়েছেন। প্রথমেই নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং তাদের পরিবার সেই শোক কাটিয়ে উঠুক সে কামনা করছি। এ হামলার সঙ্গে নব্য জেএমবির যারা জড়িত ছিলেন, তাদের সবাই হয়তো বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়েছেন, নয়তো গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছেন। এর বিচার কাজ চলছে, আমরা আশা করছি, দ্রুত বিচার কাজ শেষ হবে। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে নিহতের পরিবার একটু হলেও মানসিক সান্ত¡না পাবেন। তিনি বলেন, নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ, সরাসরি অভিযান, সচেতনতামূলক কর্মসূচিসহ ডিএমপির নানা উদ্যোগ রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ জঙ্গিমুক্ত হবে। হলি আর্টিজানে হামলার তিন বছর পর বাংলাদেশে জঙ্গিদের বর্তমান অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, জঙ্গিদের যে সাংগঠিক কাঠামো তা আমরা বিভিন্ন অভিযানে ভেঙে দিতে সক্ষম হয়েছি। জঙ্গিদের আমরা দমন করতে পারলেও, জঙ্গিবাদ মতাদর্শে বিশ্বাস করে কিংবা উগ্রবাদ বা জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ ব্যক্তি এখনো সমাজে বিদ্যমান। তারা অনুকূল পরিবেশ পেলে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে পারে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কখনো কখনো জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। কিন্তু সেটা যাতে না পারে, সেজন্য আইনি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি নাগরিক উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জঙ্গি হামলা ঠেকানো সম্ভব হবে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বড় ধরনের হামলার আশঙ্কা নেই। ছোট খাট হামলাও যেন না ঘটাতে পারে, সেজন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। সিরিয়ায় আইএসে যেসব বাংলাদেশিরা যোগ দিয়েছিল, তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত যারা সিরিয়ায় গিয়েছিল, তাদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া কঠিন। তবে বাংলাদেশ থেকে কিংবা অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত যারা সে দেশে গেছেন, তাদের অনেকেই নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, জীবিতদের কেউ দেশে ফেরত আসতে চাইলে, তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। এজন্য দেশের ইমিগ্রেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব স্থানে আমাদের তৎপরতা রয়েছে। এসময় মনিরুল ইসলামসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হলি আর্টিজান বেকারির সামনে তৈরি মঞ্চে নিহতদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এরপর গুলশান পুরাতন থানার সামনে হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলায় শহীদ দুই পুলিশ কর্মকর্তার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।