নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে মশা মারার ওষুধের কার্যকারিতা না থাকার বিষয়টি সামনে আসায় এ ওষুধ পরীক্ষা করতে সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। ইচ্ছে করলেই এমন কেমিকেল পরিবেশে ছিটাতে পারি না, যা দিয়ে মশা মারতে গিয়ে মানুষ মারা যাবে, মানুষের ক্ষতি হবে, বলেছেন তিনি। বুধবার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের চতুর্থদিনের দ্বিতীয় কার্যঅধিবেশনে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মন্ত্রী। ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে ও ভেজাল ওষুধ নিয়ে কী নির্দেশনা দেওয়া হলো- ডিসিদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আগামি ২৫ থেকে ৩১ জুলাই সারা দেশে মশা নিধন সপ্তাহ পালন করা হবে। এ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মশার ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা চলছে। আমি ইচ্ছে করলেই এমন কোনো ওষুধ পরিবেশে প্রয়োগ করতে পারি না যেটা মশা মারতে গিয়ে মানুষের ক্ষতি হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে আমাদের ওষুধের অনুমতি নিতে হয়। তারা যেটার অনুমোদন দেয় আমরা সেটাই ব্যবহার করি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, মশার ওষুধ ভেজালরোধে দুই সিটি করপোরেশন নিয়ে গতকাল (গত মঙ্গলবার) বৈঠক করেছি। সেখানে বলা হয়েছে সিটি করপোরেশন যে ওষুধ ব্যবহার করছে সেটার মান নিয়ে কোনো ত্রুটি আছে কিনা তা আবার পরীক্ষা করতে দেখতে। ডিসিদের কী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে? এর উত্তরে তিনি বলেন, তাদের ওপর যে দায়িত্ব দেওয়া আছে তা সঠিকভাবে পালন করার জন্য বলা হয়েছে। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সবই স্থানীয় মন্ত্রণালয়ের আওতায়। সেজন্য আমরা দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেছি। দারিদ্র্য বিমোচন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা, ইউনিয়ন পরিষদকে শক্তিশালী করা, তাদের বরাদ্দ যাতে সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় তা দায়িত্বের সঙ্গে দেখাশোনা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাজুল ইসলাম বলেন, এ ছাড়া রাস্তা-ঘাটের মান বাড়ানোসহ গ্রামের অর্থনীতি উন্নয়নে যেসব বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যেমন- কৃষি খাতের পরিবর্তন, সুপেয় পানি সরবরাহ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, গ্রামকে শহরে রূপান্তর করার যে অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন সেগুলো বাস্তবায়ন করার বিষয়টি বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসকদের আর্থিক ক্ষমতা ও প্রশাসক নিয়োগের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে? এর উত্তরে তিনি বলেন, যেসব জেলা পরিষদের প্রশাসকের কার্যকাল মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে, সেখানে প্রশাসক নিয়োগ করার জন্য আইনগত বিধি বিধানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সক্ষমতা না থাকলে পৌরসভা হিসেবে থাকা ঠিক নয়: আয়-ব্যয় নির্বাহ করতে সক্ষম না হলে পৌরসভা থাকবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালীসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে পৌরসভাকে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এজন্য আয় বাড়াতে হবে, সেখান থেকেই ব্যয় হবে। আর এ উদ্দেশ্যেই পৌরসভা গঠন করা হয়েছে। যারা এ কাজ করতে পারবে না বা ব্যয় নির্বাহ করতে পারবে না, তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেসব পৌরসভা থাকবে না। তাজুল ইসলাম বলেন, আমার মনে হয় যেসব পৌরসভা নিজেদের আয়-ব্যয় নির্বাহ করতে সক্ষম না হয়। তাহলে সেসব পৌরসভা থাকবে না।তাদের ব্যর্থতার জন্য পৌরসভার কর্মচারীরা কষ্ট পাবে এটাও ঠিক হবে না। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে পৌরসভাকর্মীদের আন্দোলন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশ পরিচালনায় যে ব্যবস্থাপনা আছে তা বিবেচনায় নিয়ে তাদের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি সরকার পক্ষ থেকে সাহায্য করার সুযোগ থাকে তাহলে সাহায্য করা হবে। তারা আমার কাছে এসেছিলেন। তাদের কথা শুনেছি, এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যা করা দরকার করবো। যদি আপদকালীন সহযোগিতা করা যায় তাহলে আমরা করবো।