স্পোর্টস ডেস্ক : ঠিক চার বছর আগে এই সময়েই প্রথম দিন-রাতের টেস্ট দেখেছিল বিশ্ব ক্রিকেট। অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হওয়া সেই যাত্রা ভারতে পৌঁছতে পৌঁছতে লেগে গেল চার বছর। কোন সন্দেহ নেই, ভারতে দিন-রাতের টেস্ট আয়োজন করার কৃতিত্ব একমাত্র বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীর। বিসিসিআইয়ের আসনে বসার পরেই বুঝে যান ভারতে টেস্ট ক্রিকেটের আকর্ষণ ফেরাতে গেলে চমক একটা দিতেই হবে।
দক্ষিণ বিরুদ্ধে তিন টেস্টের সিরিজে তিনটা মাঠেই কার্যত ফাঁকা গ্যালারি দেখা গিয়েছিল। সেই গ্যালারি ভরানোর জন্য দিন-রাতের টেস্টের প্রস্তাব একেবারে জাদুবলের মতো কাজ করল। সৌরভের এই জাদুবলের জন্যই টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে মানুষের চাহিদা একদম তুঙ্গে। ইডেন টেস্টের প্রথম তিন দিনের টিকিট প্রায় শেষ। সবাই এখন অপেক্ষায় ইডেনের ঐতিহাসিক টেস্টের সাক্ষী থাকতে।
অথচ গত বছরই দিন-রাতের টেস্ট নিয়ে কী চরম অনীহা ছিল ভারতের। তখন অবশ্য বোর্ড প্রশাসন চালাচ্ছিল সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত প্রশাসক কমিটি। তারা সাফ জানিয়ে দেয়, টেস্টের এই নতুন সংস্করণ তারা বিশ্বাস করে না। অস্ট্রেলিয়া চেয়েছিল গত বছর ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজে অ্যাডিলেডে একটি দিন-রাতের টেস্ট খেলুক ভারত।
কিন্তু বিসিসিআইয়ের অনীহাতেই সব বানচাল হয়ে যায়। কোচ রবি শাস্ত্রীও জানিয়ে দেন, এখনই দিন-রাতের টেস্ট খেলার জন্য প্রস্তুত নয় ভারত। উল্লেখ্য, এই অ্যাডিলেড থেকেই যাত্রা শুরু করেছিল দিন-রাতের টেস্ট। ২০১৫ সালের নভেম্বরে ঐতিহাসিক সেই দিন-রাতের টেস্টে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড। মাত্র তিন দিনে শেষ হয়ে যাওয়া সেই টেস্টে কাঠখড় পুড়িয়ে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।
এরপর থেকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দিন-রাতের টেস্ট নিয়মিত ব্যাপার। সব থেকে সফল দল অস্ট্রেলিয়াই। এখনও পর্যন্ত দিন-রাতের মোট ১১টা টেস্ট হয়েছে, ইডেনেরটা হবে দ্বাদশ টেস্ট। এর মধ্যে পাঁচটা খেলেছে অস্ট্রেলিয়া এবং সবকয়টাতেই তারাই জিতেছে।
অস্ট্রেলিয়ার দেখানো পথ প্রথম অনুসরণ করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। ২০১৬ সালে দুবাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দিন-রাতের টেস্ট আয়োজন করে তারা। ওই টেস্টে কিন্তু বোলারদের থেকে ব্যাটসম্যানদের দাপট অনেক বেশি ছিল। ৩০০ রান করেন পাকিস্তানের আজহার আলি। ওই টেস্টে জিতেছিল পাকিস্তান।
এর পর একে একে দিন-রাতের টেস্টের তালিকায় নাম লেখাল দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে। কিন্তু ভারতই একমাত্র প্রথম সারির টেস্ট খেলিয়ে দেশ ছিল, যাদের প্রথম থেকেই এই অনীহা। বাংলাদেশেরও অবশ্য দিন-রাতের টেস্ট খেলার কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না।
যা-ই হোক, টেস্ট ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে যে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অভিনবত্ব আনতেই হবে, সেটা ভারতীয় ক্রিকেট মহলকে বুঝিয়ে দিয়েছেন সৌরভ। এবার পালা ইডেনে সেই ঐতিহাসিক টেস্টের।