নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, মানুষকে তার মৌলিক অধিকার থেকে যে বঞ্চিত করে, সে ডাকাত। ভোট ডাকাতির চেয়েও বড় ডাকাতি মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা।
তিনি বলেন, বাক স্বাধীনতা বাংলাদেশের সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। এটা থেকে বঞ্চিত করার ক্ষমতা কেউ রাখে না। যারা মানবাধিকার লংঘন করে তারা মহা অপরাধী।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস-২০১৯’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ড. কামাল বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। আর এই স্বাধীন দেশের মানুষ যেন তাদের অধিকার ভোগ করতে পারে সেজন্য মাত্র এক বছরের মধ্যে একটি সংবিধান প্রণয়ন করেছি। জনগণ ক্ষমতার মালিক, তাই তাদের আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েই সংবিধান করেছি। কিন্তু আজ বাক স্বাধীনতা নেই। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, পাকিস্তানিরা ভেবেছিল ঢাকা আর চট্টগ্রাম শহরের কিছু লোককে গুলি করে মারলেই সবাই ভয় পাবে। গ্রাম অঞ্চলের লোক যে প্রতিবাদ করতে পারে সেটা সেটা তারা জানত না। বাঙালি জাতি নির্যাতন সহ্য করার জাতি না। আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করে, রক্ত দিয়ে যেমন স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের অধিকার আদায় করি। আমাদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার রক্ষা করতে হলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং আন্দোলন করতে হবে।
বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, দেশের বিচার ব্যবস্থাকে অস্তিত্বহীন করাই আমাদের সরকারের কাজ। দেশে মূর্খতার শাসন চলছে। আমরা যে লেখালেখি করে, রক্ত দিয়ে, সংগ্রাম করে, যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। আজ ভোটাধিকার হারিয়ে ফেলার মাধ্যমে সব হারিয়ে ফেলেছি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের অধিকার ক্ষুণ্ন করে যে ক্ষমতায় আছে সেটা অনেক বড় লজ্জার ব্যাপার। কোনো দাবি আদায়ের মতো সরকার আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। আমরা চেষ্টা করেছি বিদ্যা দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে দেশ গড়ার। কিন্তু আজ মানুষের অধিকার নেই। মানুষকে বিচারহীনতায় ভুগতে হচ্ছে।
সরকার আন্তর্জাতিকভাবে কোনো মর্যাদা পাচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল হুদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক তালুকদার মনিরুজ্জামান মনিরের সঞ্চালনায় সভায় সাবেক মন্ত্রী শেখ শহিদুল ইসলাম, সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত মো. মোফাজ্জাল করিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।