বিনোদন ডেস্ক
আসছে ২৭ ডিসেম্বর কলকাতায় মুক্তি পেতে যাচ্ছে জয়া-প্রসেনজিৎ অভিনীত সিনেমা ‘রবিবার’। অতনু ঘোষ পরিচালিত এই সিনেমাটিতে প্রথমবার একসঙ্গে অভিনয় করছেন জয়া আহসান ও ওপার বাংলার সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। মুক্তির দিন যত ঘনিয়ে আসছে রবিবার টিম সিনেমার প্রচারণায় ততই ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এদিকে কলকাতায় মুক্তির পরের সপ্তাহে অর্থাৎ নতুন বছরের শুরুতেই সিনেমাটি বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য মুক্তি দেয়া হবে।

ছবি মুক্তিকে সামনে রেখে এরইমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রচারণা। এদিকে প্রচারণায় অংশ নিতে এখন কলকাতায় অবস্থান করছেন জয়া আহসান। ছবির টিজারের পর সর্বমহলে প্রশংসা কুড়াচ্ছে ছবিটি। এখন শুধু মুক্তির অপেক্ষা। দর্শক কতটা গ্রহণ করে, সেই দিনই গুনছে ছবির টিম।

এই প্রথম ওরা একসঙ্গে। জুটিটার মধ্যে একটা ম্যাজিক আছে। আসলে প্রসেনজিৎ-জয়া দু’জনেই নিজেদের পালটে ফেলার একটা মস্ত বড় ক্ষমতা রাখে! আগে যা করিনি এ বার সেটা করব, এই মনটা খুব শক্তিশালী ওদের। দু’জনেই ‘রবিবার’-এর ওই দুটো চরিত্রে নিজেদের পুরে ফেলেছেন। এখন সিনেমার অভিনয়ে অভিনেতার অভিজ্ঞতার চেয়ে মনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে। এটা কিন্তু খেয়াল করতে হবে। সারা বিশ্বেই তাই। আমি কত দিন ধরে অভিনয় করছি সেই অভিজ্ঞতার চেয়ে আমি ওই চরিত্রে নিজেকে কতটা বসাচ্ছি সেটাই আসল।
সেখান থেকে বেরিয়ে চরিত্র হয়ে ওঠার যে কঠিন কাজ সেটা প্রসেনজিৎ-জয়া ‘রবিবার’-এ করে দেখিয়েছে। কাজ করতে করতে অভিনেতাদের হাসি, মজার দৃশ্য, সব এক রকম হয়ে যায়। এই গতানুগতিক অভিনয়ে নিঃসন্দেহে পারফেকশন আছে! কিন্তু সেটা একরকম! এটা তাঁদের অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। তাঁরা অসম্ভব আত্মবিশ্বাসী! ভাবছেন, আমি এটা দারুণ পারি। কিন্তু প্রসেনজিৎ-জয়া তা ভাবেন না। ওঁরা ভাবেন আমরা তো পারি না! জয়া আহসান ও প্রসেনজিৎ জুটি নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন ছবিটির নির্মাতা অতনু ঘোষ।
জুটি বাঁধার আগে ছবিটির চরিত্রটির জন্য আলাদাভাবে প্রস্তুতিও নিয়েছেন জয়া-প্রসেনজিৎ। এই বিষয়ে প্রসেনজিৎ জানান, চরিত্র দুটো ফুটিয়ে তুলতে আমাদের অসম্ভব মানসিক পরিশ্রম করতে হয়েছে। এর পুরো কৃতিত্ব পরিচালকের। এমনি এমনি সেন্সর বোর্ড ‘ইউএ’ দেয়নি। সেক্স, ভায়োলেন্স কিচ্ছু নেই।
জয়ার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘কন্ঠ’ সিনেমায় জয়ার অভিনয় দেখেছিলাম, তখন থেকেই তার সঙ্গে কাজ করার একটা ইচ্ছা ছিল। জয়া ভাল অভিনেত্রী জানতাম। কিন্তু ওর মধ্যে ভাল কাজের মারাত্মক একটা খিদে রয়েছে। এই জায়গা থেকে ওকে আমি রেসপেক্ট করি।
দুই বাংলার শিল্পী এক হয়ে এখন অনেক কাজ হচ্ছে। তারপরও কেন ইন্ডাস্ট্রি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে না বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নে প্রসেনজিৎ বলেন, এই বাংলা ওই বাংলা এই যে ভাগ করে ফেলাটা এটা প্রাচীন থেকেই হয়ে আসছে। এই ভাগাভাগির জন্যই ইচ্ছা ও চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আমরা কোটি কোটি বাঙালির কাছে পৌঁছতে পারছি না। আমরা শিল্পী! এই যে নাটক, গান, সিনেমা, কবিতা সবকিছু মিলিয়েই আমরা একটা পরিবার। সবাইকে এক হয়ে কাজ করে যেতে হবে।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিটা যেহেতু বড় ক্যানভাস সেহেতু সেই বটগাছের ডালপালা ছড়িয়ে দিতে সবাইকে এক হয়ে, একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সেটা হোক এপার বাংলা কিংবা ওপার বাংলা। একই ভাষাভাষীর মানুষ তো আমরা। ভাষা, সংস্কৃতি দুটোই তো এক। তবে এখন যে অবস্থা দেখছি আমি তো আমার ছেলেকে বলব, ‘তুই বাংলা সিনেমা করিস না।’। অনেকটা বছর তো দিয়েছি ইন্ডাস্ট্রিতে, অনেক কিছুই দেখেছি। যে মানুষটা ৩০-৩৫ বছর নিজের শ্রম দিয়েছে এই ইন্ডাস্ট্রিকে, তার পক্ষে এই কথাটা বলা কতটা কষ্টের বুঝতে পারছেন?
নতুন বছর নিয়ে আগেই পরিকল্পনা সাজিয়ে রেখেছেন এই টলিউড সুপারস্টার। পরিকল্পনানুযায়ীই কাজ করবেন। শুধু তাই নয়, আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তার ডেট লকড। তিনি জানান, পরিকল্পনা তো আগেই করা। ২০২২ সালের শেষ মাস পর্যন্ত শিডিউল দেওয়া। কবে কোন ছবি করব, কবে রিলিজ় হবে সবকিছুই। এরপর দেখা যাক কি হয়!