নিজস্ব প্রতিবেদক : চোখের দৃষ্টি না থাকলে কী হবে? শিল্পের অনন্যতায় সুরের ঢেউ তুললেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা। দুনিয়ার আলো না দেখা অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকা এই মানুষগুলো সংস্কৃতির আলোর দ্যুতি ছড়ালেন চোখভর্তি আলোয় ভরা মানুষের সামনে। সুরে সুরে মুগ্ধতার রেশ ছড়িয়ে নিজেদের ঝলমলে প্রতিভার ছাপ রাখলেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা।
আর তাদের সেই সুরে স্নাত হয়ে মোহনীয়তার তরঙ্গে হারিয়ে গেলেন দর্শক-শ্রোতারা। এমন চিত্রই ছিল জাতীয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সংস্থার ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে।
আলোচনা, কেককাটা, আর্থিক অনুদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আয়োজনে উদযাপিত হলো জাতীয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সংস্থার ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
নিজেদের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেওয়া এই আয়োজনে অংশ নিলেন সারা দেশের ৬ শতাধিক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। বুধবার রাজধানীর বকশীবাজারের নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ আয়োজন।
কুরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে বেলা ১১টায় আয়োজনের উদ্বোধন ঘটে। এর পর জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন সংস্থার সদস্যরা। এর পর কেককাটার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনব্যাপী আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। সংস্থার চেয়ারম্যান নুরুল আলম সিদ্দিকের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব আইয়ুব আলী হাওলাদারের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী, জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের উপপরিচালক ভবেন্দ্র নাথ বাড়ৈ, লালবাগ জোনের উপপুলিশ কমিশনার মো. জাফর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৭ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওমর বিন আবদাল আজিজ (তামিম) প্রমুখ।
জমকালো এই আয়োজনে সারা দেশের ১০০ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর প্রত্যেককে ৩ হাজার করে মোট ৩ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়।
এ ছাড়া ২০ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে মাসিক ১ হাজার টাকা করে দুই মাসের জন্য ৪০ হাজার টাকা বয়স্কভাতা প্রদান করা হয়।
অন্যদিকে ৫০ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর মাঝে ৩ হাজার টাকা করে মোট ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নগদ অর্থ প্রদানের পাশাপাশি ৮ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে পুনর্বাসনের জন্য আটটি সেলাই মেশিন, ১২ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে গৃহনির্মাণের জন্য ১৫ হাজার টাকা করে মোট ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নগদ অর্থ, ২৪ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে ৩ হাজার টাকা করে ৭২ হাজার টাকা চিকিৎসা সহায়তা, ১৪ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য ৫ হাজার টাকা করে ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
আর চারজন মৃতব্যক্তির দাফন বাবদ ৩ হাজার টাকা করে ১২ হাজার টাকা দেওয়া হয় এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ১৮০ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সদস্যকে ৫ হাজার টাকা করে ৯ লাখ টাকা অর্থ প্রদান করা হয়।