ডেঙ্গুর প্রকোপের মধ্যে স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট লাঘবে ভোক্তা অধিদপ্তর কর্তৃক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, পাইকারি,  খুচরা  ব্যাবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে মতবিনিময় 

Uncategorized আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  ডেঙ্গুর প্রকোপের মধ্যেই ঔষধের পাইকারী ও খুচরা বাজারে  স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট লাঘব করতে স্যালাইন  উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, পাইকারি, খুচরা ব্যাবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে স্যালাইনের  মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।


বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, বুধবার  ১৩ সেপ্টেম্বর, সকাল সাড়ে  ১০ টায়  জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে  স্যালাইনের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে পাইকারি, খুচরা বিক্রেতা ও সংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়। উল্লেখিত  সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান।


বিজ্ঞাপন

উক্ত  সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো: আশরাফ উদ্দিনসহ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালকগণ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি, এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) এর প্রতিনিধি, এফবিসিসিআই এর পরিচালক, ক্যাবের প্রতিনিধি, এনএসআই এর প্রতিনিধি, ডিজিএফআই এর প্রতিনিধি, অপসোনিন, লিবরা ইনফিউশন লি:, পপুলার ফার্মাসিটিক্যাল লি:, বেক্সিমকোসহ স্যালাইন উৎপাদনকারী বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির প্রতিনিধিবৃন্দ, বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন ফার্মেসির প্রতিনিধিবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

সভার শুরুতেই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক  মতবিনিময় সভার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। এক্ষেত্রে তিনি বলেন, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ ও ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কার্য প্রতিরোধের লক্ষ্যে অধিদপ্তর নিয়মিত বাজার অভিযান পরিচালনা ও অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে নকল ও ভেজালের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ভোক্তাবৃন্দ কোন পণ্য বা সেবা ক্রয় করে প্রতারিত হলে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করে থাকেন। তিনি বলেন, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্যক্রম প্রতিরোধে নিয়মিত বাজার তদারকি/অভিযান করা হয়ে থাকে।

মহাপরিচালক বলেন, দেশে বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ডাক্তারগণ এই ক্ষেত্রে স্যালাইন সাজেস্ট করেন। তাই সাম্প্রতিক সময়ে দেশীয় বাজারে স্যালাইনের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। সেই সুযোগে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে স্যালাইন মজুদ করে বাজারে স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে এবং এম,আর,পি অপেক্ষা বেশি মূল্যে স্যালাইন বিক্রয়ের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। সে প্রেক্ষিতে অধিদপ্তর কর্তৃক ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে স্যালাইনের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে অভিযান পরিচালিত হয়। মহাপরিচালক সভায় অভিযান থেকে প্রাপ্ত অসঙ্গতিসমূহ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বেশ কিছু ফার্মেসিতে স্যালাইন কিনতে গেলে ভোক্তাদের ফার্মেসি থেকে প্রথমে বলা হয় স্যালাইন নেই। পরবর্তীতে ভোক্তাদের নিকট অতিরিক্ত মূল্যে স্যালাইন বিক্রয় করতে দেখা যায়। এটা তো খোলা পণ্য নয়; এতে এমআরপি রয়েছে তাই অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় করার কোন সুযোগ নেই।

এরপর  তিনি অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডলকে বিগত দিনগুলোতে স্যালাইনের মূল্য ও মজুদের উপর পরিচালিত অভিযানের বিষয়ে সভায় বলার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, অভিযান পরিচালনাকালে স্যালাইন বিক্রির ক্ষেত্রে প্রাপ্ত অসংগতি যথা, ভোক্তা কর্তৃক স্যালাইন ক্রয় করতে গেলে অধিকাংশ ফার্মেসি থেকে বলা হয় স্যালাইন নেই অথবা বিক্রি হবে না; তবে বেশি টাকা দিলে স্যালাইন বিক্রয় করে, ৮৭ টাকার স্যালাইন ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রয় করা, মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রয়ের জন্য সংরক্ষণ করা, মেয়াদ উত্তীর্ণ টেস্ট কিট বা রিএজেন্ট দিয়ে টেস্ট করা, ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রয় করা, যথাযথ তাপমাত্রায় ঔষধ সংরক্ষণ না করা ইত্যাদি বিষয় পরিলক্ষিত হয়।

আলোচনায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক  মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, অধিকাংশ কোম্পানিগুলো এসেনসিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেড এর মাধ্যমে বা নিজেরা হাসপাতালে ঔষুধ সরবরাহ করে এবং কিছু ঔষধ বিভিন্ন ফার্মেসিতে সরবরাহ করে। বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতে স্যালাইনের চাহিদা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে ৭ লক্ষ স্যালাইন আমদানির প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সংকটকালীন এ সময়ে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীগণ স্যালাইনের চাহিদা বৃদ্ধির এ সুযোগটি নিয়েছে। আমাদের অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মনিটরিং করছে। স্যালাইন বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলের মাধ্যমে জানার সুযোগ আছে কোথায় কত মূল্যে স্যালাইন বিক্রয় হচ্ছে? ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর একটি কমিটির মাধ্যমে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে থাকে। স্যালাইন বেশি মূল্যে বিক্রয় করা হলে প্রমাণসহ আমাদের কাছে অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। আমার মতে স্যালাইনের সংকট হওয়ার কথা নয়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে। আইনের বাইরে কেউ নয়। যারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু পরিস্থিতির কারণে স্যালাইনের চাহিদা বেড়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত স্যালাইন মজুদ রয়েছে। তাই স্যালাইনের সংকট তৈরি হওয়ার কথা নয়। কৃত্রিমভাবে এই সংকট তৈরি করা হয়েছে। এই সংকট তৈরির সাথে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা দরকার।

আলোচনায় অপসোনিন, লিবরা ইনফিউশন লি:, পপুলার ফার্মাসিটিক্যাল লি:, বেক্সিমকোসহ বিভিন্ন স্যালাইন উৎপাদনকারী ফার্মাসিটিক্যালসের প্রতিনিধিগণ বলেন, বর্তমানে ছয়টি ফার্মাসিটিক্যালস কোম্পানি স্যালাইন উৎপাদন করে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে ভোক্তার স্বার্থে আমরা পূর্বের চেয়ে বেশি পরিমাণে স্যালাইন উৎপাদন করছি। পূর্বের দুই শিফটের পরিবর্তে বর্তমানে তিন শিফটে স্যালাইন উৎপাদন করা হচ্ছে। এমনকি সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্রবারও স্যালাইন উৎপাদন করা হচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তৃক পূর্বে প্রতি মাসে ৪৪ লক্ষ স্যালাইন উৎপাদন করা হতো। বর্তমানে চাহিদা বৃদ্ধির কারণে প্রতি মাসে ৫৩ লক্ষ স্যালাইন উৎপাদন করা হচ্ছে। দেশে পর্যাপ্ত স্যালাইন এর উৎপাদন হচ্ছে। এই আলোচনায় লিবরা ইনফিউশন লি: এর প্রতিনিধি বলেন, আমাদের প্রতিদিন ৫০ হাজার স্যালাইন উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে কিন্তু আর্থিক সক্ষমতার অভাবে বর্তমানে প্রতিদিন ১৫-২০ হাজার স্যালাইন উৎপাদন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তার জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির পরিচালক বলেন, স্যালাইন এর ক্ষেত্রে ডিস্ট্রিবিউশন লাইনে স্বচ্ছতা নেই। কোম্পানিগুলো কোন ইনভয়েস দেয় না। আমাদের ৮০% ফার্মেসি গত প্রায় দুই মাস যাবত কোন স্যালাইন পাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে স্যালাইনের সরবরাহ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

সভায় এফবিসিসিআই এর অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, বর্তমানে ভোক্তা অধিদপ্তরের কাজ প্রশংসনীয়। ডেঙ্গুর পাশাপাশি ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগের জন্য স্যালাইন দরকার। জীবন রক্ষাকারী ওষুধ নিয়ে কেন কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হবে? অসৎ ব্যবসায়ীদের পাশে এফবিসিসিআই থাকবে না। তিনি অসৎ ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স বাতিল করার কথা বলেন। এক্ষেত্রে ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে সকলকে সহযোগিতার করার বিষয়েও বলেন। এক্ষেত্রে জয়েন্ট এনফোর্সমেন্ট করা গেলে ভালো ফলাফল আশা করা যায়। তিনি পরিশেষে বলেন, এই বিশৃঙ্খলা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এক্ষেত্রে সকলের সমন্বিত প্রয়াস দরকার।

আলোচনায় ক্যাবের প্রতিনিধি বলেন, ভোক্তা অধিকার রক্ষায় ভোক্তা অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। ভোক্তা অধিদপ্তর কে তাদের কার্যক্রমের জন্য ধন্যবাদ জানাই। ব্যবসায়ীদের সততা ও শুদ্ধাচারের চর্চা করতে হবে। আজকের আলোচনায় আমরা দেখেছি কৃত্রিম ভাবে স্যালাইনের সংকট তৈরি করা হয়েছে। ভোক্তার স্বার্থে কৃত্রিম ভাবে স্যালাইনের সংকট তৈরি করার পেছনে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। ভোক্তা অধিকার নিশ্চিতে সকল সংস্থার সমন্বিত ভাবে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি বলেন, ডেঙ্গুর কারণে স্যালাইনে চাহিদা কত বেড়েছে তা এই সেক্টরের জানা নেয়। চাহিদা কত জানা থাকলে উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে সমন্বয় করা সহজ হত। তিনি আরও বলেন, বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি স্যালাইন এর দাম বেশি নেয়া কোনভাবেই কাম্য নয়। এই সভায় পরিলক্ষিত হয়েছে কৃত্রিম ভাবে স্যালাইনের এ সংকট তৈরি করা হয়েছে। স্যালাইনের মূল্য বৃদ্ধি পাবে মনে করে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী স্যালাইনের অবৈধ মজুদ করে এ সংকট তৈরি করেছে। তাই স্যালাইন এর মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা দরকার। স্যালাইনের দাম না বাড়ানোর ঘোষণা দিলে তারা আর স্টক করবে না। তাছাড়া করোনাকালীন সময়ের মতো তাৎক্ষনিক বিনা শুল্কে স্যালাইন আমদানির ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

আলোচনায় মহাপরিচালক বলেন, আমাদের দেশ ফার্মাসিটিক্যাল সেক্টরে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা এই সেক্টর নিয়ে গর্ব করি। সেখানে স্যালাইন নিয়ে এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তিনি স্যালাইন উৎপাদনকারী ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোকে এই সংকট কালে স্যালাইন উৎপাদন বৃদ্ধি করায় ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, লিবরা ইনফিউশন লি: উৎপাদন সক্ষমতা থাকা সত্বেও আর্থিক সমস্যার কারণে কম পরিমাণ স্যালাইন উৎপাদন করছে তাই আমরা লিবরা ইনফিউশনকে তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী স্যালাইন উৎপাদন করতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের নিকট সুপারিশ করবো। মহাপরিচালক বলেন, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য এই সেক্টরের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নিকট আমার অনুরোধ থাকবে তারা যেন নির্লিপ্ত না থেকে এক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে রোগীর আত্মীয়-স্বজনের আবেগকে কাজে লাগিয়ে যে সব অসাধু ব্যবসায়ী এর সুযোগ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সভায় মহাপরিচালক আরও বলেন, সারা আগামীকাল থেকে স্যালাইনের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে সারা বাংলাদেশে কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে। আমরা কোথাও যদি অভিযান পরিচালনাকালে স্যালাইনের অবৈধ মজুদ দেখি; তবে ওই প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয়া হবে। তারপর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের লাইন্সে বাতিল করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ার সুপারিশ করা হবে। এছাড়াও বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নিকট সুপারিশ করা হবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সমিতি থেকে সদস্য পদ যেন বাতিল করা হয়।

মহাপরিচালক সভার শেষে বলেন, আজকের সভার আলোচনায় প্রাপ্ত সুপারিশসমূহ সরকারের নিকট তুলে ধরা হবে। তিনি বলেন, আমরা চাই এই ক্ষেত্রটা একটা শৃঙ্খলায় আসুক। এ লক্ষ্যে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতি এবং বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির সাথে সমন্বয় করে কাজ করে এই সেক্টরে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা করা হবে। তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতে হলে শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে ব্যবসা করতে হবে। এই সেক্টেরে স্থিতিশীলতা না আসা পর্যন্ত আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, মিডিয়া আমাদের সমাজের দর্পণ। স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট ও অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আপনারা নিউজ করেছেন বলেই তার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরে এই সেক্টরে কাজ করতে পারছি। আপনাদের অনুসন্ধানী রিপোর্ট আমাদের কাজে সহযোগিতা করছে। মহাপরিচালক সভা শেষে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।

আলোচনা শেষে মহাপরিচালক স্যালাইনের মূল্য স্থিতিশীল এবং সরবরাহ যেন স্বাভাবিক থাকে সে লক্ষ্যে সকলে সমন্বিতভাবে কাজ করবে সে বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *