বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। এর লোগো।
নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণে পণ্যের মান প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণে বিএসটিআই’র (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন) কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে দেশের ১০ জেলায় বিএসটিআই’র আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের ৩০ জুন মেয়াদে সরকারের এ সিদ্ধান্ত শতভাগ বাস্তবায়ন হবে বলে শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
দেশীয় শিল্পের বিকাশে পণ্য পরীক্ষণ ও মানসম্মত পণ্য উৎপাদন এবং আমদানিতে সহায়তা করার পাশাপাশি পণ্য রফতানি সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে ‘১০ জেলায় বিএসটিআই’র আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, নওগাঁ, পাবনা, যশোর, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, দিনাজপুর ও পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলায় বিএসটিআই’র এসব আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন করা হবে। গত ৩১ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ৪৩৩ কোটি ১১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বিএসটিআই। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে ২৪৩ কোটি ৩৭ লাখ ৭৩ কোটি টাকা। বাকি ১৮৯ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ কোটি টাকা যোগান দেওয়া হবে সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে। ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় প্রকল্প এলাকায় ৩০ হাজার ৯২০ দশমিক ৪৭ বর্গমিটার অনাবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে। গবেষণাগারের জন্য যন্ত্রপাতি কেনা হবে। প্রকল্প এলাকায় ৫ দশমিক ১৪ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। গবেষণার জন্য আসবাবপত্র, অফিস সরঞ্জাম, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি কেনা হবে। একই সঙ্গে কমিশন ও বীমা খরচও পরিশোধ করা হবে। চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের এডিপিতে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, দেশের কর্মসৃজন ও প্রবৃদ্ধির জন্য শিল্পায়নকে কার্যকর করতে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও রফতানিখাতকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে উৎপাদিত ও আমদানিকৃত পণ্যের বাংলাদেশ মান অনুযায়ী পরীক্ষণের মাধ্যমে মানসম্মত পণ্য উৎপাদনের লাইসেন্স ও আমদানিকৃত পণ্যের ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
ফলে দেশে মানসম্মত শিল্প প্রতিষ্ঠানের সম্প্রসারণ ঘটবে, যা দেশে-বিদেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এবং জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান বাড়বে। এছাড়াও প্রকল্পটি জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইন-২০০৯ এ বিবৃত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম গণমাধ্যম কে জানিয়েছেন, দেশীয় শিল্পের বিকাশে বিএসটিআই’র আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো সহায়ক হবে। রফতানি বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। নিম্নমানের পণ্য উৎপাদন, বিক্রি-বিতরণ হ্রাস পাবে এবং ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষা করা সহজ হবে।