সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে গতকাল শনিবার ১৮ নভেম্বর দুপুর ১২টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, ঢাকা থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা, গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুন। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শেষে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী আল মামুন বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাপ্তির বিষয়ে এবার আমি শতভাগ আশাবাদী। কারণ ছাত্রজীবন থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে আমি প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিলাম। বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির পাশাপাশি এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও সম্পৃক্ত রয়েছি।
একজন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রশ্নে সবসময় আপোষহীন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল রাজনীতি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সবসময় দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হিসেবে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছি। ছাত্রজীবন থেকে সাঘাটা-ফুলছড়ির স্থানীয় রাজনীতিতেও নেতাকর্মীদেরকে সময় দিয়েছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন সংকটকালীন সময় যেমন বন্যা, খরা ও শীতে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা সফল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাকে গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দিলে নির্বাচিত হয়ে সাঘাটা-ফুলছড়ির সার্বিক উন্নয়ন ও জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে নিরলসভাবে কাজ করার সুযোগ পাবো। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টার সংগ্রামে একজন সারথী হয়ে ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সফল উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নত ও সমৃদ্ধ ডিজিটাল সাঘাটা-ফুলছড়িকে স্মার্ট সাঘাটা-ফুলছড়িতে রূপান্তর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
নদী ভাঙ্গন সাঘাটা-ফুলছড়ির একটি বড় সমস্যা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনকে স্থায়ীভাবে প্রতিরোধের ব্যবস্থাকরণ, আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত নদী কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র তৈরী, বালাসী-বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত টানেল নির্মাণ, শিল্প-কলকারখানা, হাইটেক পার্ক, আইসিটি সেন্টার ও তৈরী পোশাক কারখানা স্থাপন করে প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। রাজধানীর সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ, দ্রুত গ্যাস সংযোগের ব্যবস্থাকরণ, সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণের চেষ্টা করা হবে।
চর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণের পাশাপাশি চরাঞ্চলে মানসম্মত শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষকদের ভাগ্যেন্নয়ন, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরী করে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। দুই উপজেলার সর্বস্তরে ঘুষ, দুর্নীতি, মাদক, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করে জবাবদিহিতার মাধ্যমে সর্বোচ্চ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলা পরিচালিত হবে। সমগ্র দেশে এই দুটি উপজেলাকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। দলীয় মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা সবসময় যৌক্তিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেন।
সাঘাটা-ফুলছড়ির সকল শ্রেণী পেশার মানুষ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মরা আমাকে নিয়ে অনেক বেশী আশাবাদী। দীর্ঘদিন যাবত আমি এলাকার মানুষদের পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। মনোনয়ন পেলে আমি সকলের সমর্থন ও সহযোগিতা নিয়ে বিপুল ভোটে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে পারবো বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। এজন্য আমি সকলের দোয়া/আশীর্বাদ ও সমর্থন কামনা করি। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরকারের কোন বিকল্প নেই।
স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামাত ২০০১ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে টার্গেট করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্মম নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছিল। সামপ্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মৌলবাদ কায়েম করে স্বাধীন বাংলাদেশকে তারা পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল। ২৬ হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। বিএনপি-জামাতের সেই ভয়াবহ নিকষ কালো দিনগুলো এদেশের জনগণ আর দেখতে চায় না। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকার পক্ষে রায় দিতে হবে। কারণ নৌকা মানেই উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও অগ্রযাত্রা।”