নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা-১৮ আসনে বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করে আওয়ামী লীগের ফরম কিনেছেন। সবাই নৌকার মাঝি হতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে কে নৌকার টিকিট পাবেন তা নিয়ে এখন আলোচনা তুঙ্গে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. খসরু চৌধুরী সিআইপি। তিনি এবার এ আসনে নৌকার প্রার্থী হচ্ছেন এমন আলোচনা চলছে সর্বত্র। সম্প্রতি প্রকাশিত একাধিক জরিপে ঢাকা-১৮ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তার নাম উঠে এসেছে।
এ প্রসঙ্গে বৃহত্তর উত্তরা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উত্তরখান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মিলন বলেন, দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় ধরে খসরু চৌধুরী ঢাকা-১৮ আসনের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ঢাকা-১৮ আসনের প্রতিটি ওয়ার্ডে তার প্রতিষ্ঠিত সেবামূলক প্রতিষ্ঠান কে সি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নিম্নআয়ের অসহায় মানুষ, কর্মহীন, বেকার জনগোষ্ঠী, ফুটপাত ও বস্তিতে থাকা পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময়ে ঢাকা-১৮ আসনের প্রতিটি ওয়ার্ডে কে সি ফাউন্ডেশনের কর্মী বাহিনীদের নিয়ে ত্রাণ তৎপরতা চালিয়েছেন। স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিটি শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে তিনি মাসব্যাপী আলোচনা সভা ও খাবার বিতরণের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রতি বছর শীতের সময় তার পক্ষ থেকে ঢাকা-১৮ আসনের সাতটি থানা ও ১৪টি ওয়ার্ডের হাজার হাজার পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ করছেন। ঢাকা-১৮ আসনে যেখানেই মানুষ বিপদে পড়েছে সেখানেই পৌঁছেছে খসরু চৌধুরীর সহযোগিতা। নিজস্ব অর্থায়নে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল করে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন। ঢাকা-১৮ আসনের দক্ষিণখান ও উত্তরাখানে তার মালিকানাধীন নিপা গ্রুপে ৩০ হাজারেরও অধিক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। প্রায় জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে মনোনয়ন দেওয়া হলে ঢাকা-১৮ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে যোগ্য খসরু চৌধুরী সিআইপি।
সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী সালাউদ্দিন পিন্টু বলেন, ঢাকা-১৮ আসনের জনপ্রিয় নেতা খসরু চৌধুরী সিআইপি। তিনি জনবান্ধব, কর্মীবান্ধব, দলবান্ধব আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি সারা জীবন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন, নীতি-নৈতিকতার চর্চা করেছেন। অসহায় গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানো তার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত হাতিয়ার হিসাবে স্মার্ট উত্তরা গড়তে তাকেই ঢাকা-১৮ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চাই।
এ বিষয়ে মো. খসরু চৌধুরী বলেন, আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছি। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের সহযোগী হতে চাই। স্মার্ট ঢাকা-১৮ গড়া আমার অঙ্গীকার।
তিনি আরো বলেন, ঢাকা-১৮ আসনের প্রতিটি ওয়ার্ডের মানুষ প্রতিনিয়ত জলাবদ্ধতা ও ড্রেনেজ সমস্যায় ভুগছে। আমার প্রথম কাজ হবে সর্বাধিক অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই সমস্যাটির সমাধান করা এবং সিটি করপোরেশনের সাথে সমন্বয়পূর্বক স্বল্পতম সময়ের মধ্যে টেকসই পরিবর্তন নিশ্চিত করা। প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে একটি কবরস্থান এবং একটি খেলার মাঠ থাকবে। বাসিন্দাদের আর সমাধির জন্য দূরে যেতে হবে না। শিশুরা মানসম্মত শিক্ষা পাবে। বিশেষ মনিটরিং টুলস থাকবে যাতে স্কুলগুলো সর্বোত্তম কার্য সম্পাদনের জন্য দায়বদ্ধ থাকে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিদেশে পড়ার জন্য বিনামূল্যে পরামর্শ সেবা দেওয়া হবে।
একটি উপযুক্ত স্থানে একটি কারিগরি ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে যেখানে যুবকরা কারিগরি প্রশিক্ষণ পাবে। শুধু তাই নয়, দেশে-বিদেশে তাদের কর্মসংস্থানের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা হবে। প্রতিটি বড় বাজার এলাকায় বিনামূল্যে ইন্টারনেট হটস্পট থাকবে যাতে বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের উন্নতির জন্য প্রযুক্তির সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করতে পারে। ঢাকা-১৮ এর সকল জনগণ অর্ধবার্ষিক বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্পেইন উপভোগ করবেন যেখানে এক্স-রে, চক্ষু, নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সহ মৌলিক ওষুধ সুবিধাসহ অভিজ্ঞ ডাক্তার উপস্থিত থাকবেন। ঢাকা-১৮ এর প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভালো, মেধাবী কিন্তু দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পূর্ণ উপবৃত্তি প্রদান করা হবে। আমি অবশ্যই এটা নিশ্চিত করব।
মো. খসরু চৌধুরী বলেন, আমি নিরলসভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান ব্যবস্থায় কাজ করব যাতে একজন শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী চাকরি নিয়ে স্নাতক হয়। এটি তাদের সমাজে মূল্য সংযোজন করতে আরো অনুপ্রাণিত করবে।
আমাদের আসনে যানজটের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই যানজট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাব। প্রতিটি বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। যেসব এলাকায় প্রাথমিকভাবে গ্যাসের আওতাভুক্ত করা হবে না সেসব এলাকায় এলপিজি পয়েন্ট থাকবে। যেখানে সম্ভাব্য সর্বনিম্ন বাজারদর থাকবে। আমি তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও গাইড করার জন্য একটি অত্যাধুনিক যুব উদ্যোক্তা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার শপথ করছি। কেন্দ্র যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলবে। তারা পরে নিজেদের মতো করে ব্যবসা শুরু করবে। এমনকি স্টার্টআপের জন্য সীমিত আকারে তহবিল থাকবে।
প্রতিটি মসজিদে শিশুদের মৌলিক ইসলামি শিক্ষা বিনামূল্যে প্রদান করা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে ১০টি কেন্দ্র (মসজিদ) থাকবে যেখানে এই সুবিধাটি প্রদান করা হবে।
ঢাকা-১৮ হবে মাদকমুক্ত। সন্ত্রাসের ভয় ছাড়াই মানুষ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করবে। এই আসন জনগণ দ্বারা পরিচালিত হবে। যেখানে থাকবে না কোন সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজ।
তিনি বলেন, আমি জনগণের সেবক হতে চাই। যেখানে আমার আসনের জনগণ কষ্ট পাবে সেখানে আমি কখনই স্বস্তিতে থাকতে পারবো না। সকল সামাজিক সমস্যা দূরীকরণে সর্বদা জনগণের পাশে থাকবো। আমি স্থান করে নিতে চাই আপনাদের হৃদয়ে, কথার মাধ্যমে নয়, আমার কাজের মাধ্যমে। আমি ঢাকা-১৮ কে সকল আসনের মধ্যে সেরা করার প্রয়াশ নিয়ে এগিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।