মামুন মোল্লা (খুলনা) : আজ শুক্রবার ২৪ নভেম্বর, সকাল ১ টা ৫ মিনিটের সময় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম, সেবা এর সভাপতিত্বে বয়রাস্থ পুলিশ লাইন্সের মাল্টিপারপাস হলে গ্রান্ড কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গ্রান্ড কল্যাণ সভার শুরুর প্রথমেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও শ্রীমদভগবদগীতা থেকে পাঠের মধ্য দিয়ে হেমন্তের রৌদ্র উজ্জ্বল স্নিগ্ধ সকালে আয়োজিত সভার কার্যক্রম শুরু হয়। পুলিশ কমিশনার কল্যাণ সভার শুরুতেই বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত সকল পদমর্যাদার অফিসার ও ফোর্সদের সমস্যার কথা অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করেন। পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন দাবী এবং প্রত্যাশা পূরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা গ্রান্ড কল্যাণ সভায় উপস্থিত অফিসার ও ফোর্সদের বক্তব্য শ্রবণের শেষে সকল পদমযাদার অফিসার ফোর্সেদেরকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। পুলিশ কমিশনার তার বক্তব্যে বলেন, পুলিশ একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। আমাদের মূল দায়িত্ব হচ্ছে ডিসিপ্লিন মেইন্টেন করা। সেজন্য কেএমপির সকল পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার ও ফোর্সকে অবশ্যই ডিসিপ্লিন মেনে সঠিকভাবে ইউনিফর্ম পরিধান এবং উত্তম টার্ন আউট মেনে চলতে নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি ক্লথিং স্টোর, রেশন স্টোর ও অস্ত্রাগার’র ইনচার্জদের কে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন।
মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স এবং পুলিশের কোন সদস্য প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ও পারিপার্শ্বিক কোনো ভাবে মাদক বা জুয়ার সাথে জড়িয়ে না যায় সে ব্যাপারে সকলকে সর্তক করেন এবং কেউ জড়িত থাকলে কঠোর কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে মর্মে হুশিয়ারি প্রদান করেন। সরকারি যানবহন যথাযথ ব্যবহার করাসহ ডিউটি শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। সকল পুলিশ সদস্যদের উন্নত মানের রেশন সামগ্রী বিতরণের প্রতিশ্রুতি দেন। পুলিশ লাইন্স, থানা ফাঁড়ি, ক্যাম্পের অস্ত্র গুলির হেফাজত পরিপূর্ণ সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ব্যত্যয় না ঘটে নিশ্চিত করার জন্য উর্ধ্বতন সকল কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করেন। পুলিশ লাইন্স, থানা ফাঁড়ি, ক্যাম্পের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কেএমপি’র সকল অফিসে ব্যবহৃত কম্পিউটার এবং ইলেকট্রনিক সামগ্রী ব্যবহারে আরো যত্নশীল হতে হবে ও সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করার নির্দেশনা প্রদান করেন। মহানগরীর সকল পুলিশ ইউনিট কর্তৃক উদ্ধার কৃত ভিকটিমদেরকে ‘ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের’ মাধ্যমে হস্তান্তর নির্দেশনা প্রদান করেন। যথাযথ নিয়ম মেনে পুলিশ সদস্যদের কে রাস্তায় মোটরসাইকেল চালানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। আমদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের সময় নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে ডিউটি পালনের নির্দেশ প্রদান করেন। এরপর পুলিশ কমিশনার মহোদয় কেএমপিতে সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত ৫ জন অতিরিক্ত ডিআইজি, ১ জন পুলিশ সুপার এবং ০১ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার’দেরকে অভিনন্দন জানান।
সবশেষে পুলিশ কমিশনার তার বক্তব্যে হ্যালো কেএমপি অ্যাপস্ ব্যবহারের জন্য প্রচার-প্রচারণা করতে নির্দেশনা দেন। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কেএমপি’র আগামীতে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার অভিব্যক্তি ব্যক্ত করে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের আভিযানিক সাফল্যে এবং সর্বপরি ডিসিপ্লিনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। কেএমপিকে একটি জনবান্ধব বসবাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করার করার এবং চলমান অভিযান অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তার গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য সমাপ্ত করেন।
কেএমপি হতে স্বেচ্ছায় অবসরপ্রাপ্ত ২ জন পুলিশ সদস্য এএসআই (নি:) মাছুমা বেনতে এ কাদের এবং নায়েক দুলাল চন্দ্র মল্লিক’দেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা, ক্রেস্ট ও উপহার প্রদান করেন। একই সাথে তাদের অবসরকালীন সময় সার্বাঙ্গিণ মঙ্গল কামনা এবং সুস্থ ও সুন্দরভাবে জীবন অতিবাহিত করতে পারে সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য যে, বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল খুলনার ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা: সৈয়দ একেএমএন করিম সভার শুরুতে দৈনন্দিন স্বাস্থ্য সেবা ও ডেঙ্গু সচেতনতা বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করেন।
উক্ত গ্রান্ড কল্যাণ সভায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এএন্ডও) সরদার রাকিবুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মোঃ সাজিদ হোসেন, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বিশেষ পুলিশ সুপার (সিটিএসবি) রাশিদা বেগম, পিপিএম-সেবা, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ডিবি) বি.এম নুরুজ্জামান, বিপিএম, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস অ্যান্ড সাপ্লাই) এম.এম শাকিলুজ্জামান, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ, পিপিএম ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ইএন্ডডি) মোঃ কামরুল ইসলাম; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (এফএন্ডবি) শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) জনাব মনিরা সুলতানা ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (আরসিডি) মোহাম্মদ শাহরিয়ার মিয়াজী এবং বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল খুলনার ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক জনাব ডা: সৈয়দ একেএমএন করিম-সহ অতিঃ ডেপুটি পুলিশ কমিশনারবৃন্দ, সহকারি পুলিশ কমিশনারবৃন্দ, অফিসার ইনচার্জবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।