পিবিআই কিশোরগঞ্জ কর্তৃক ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলার গ্রেফতারকৃত আসামি কুখ্যাত সুমন ডাকাত।

নিজস্ব প্রতিনিধি : কুখ্যাত ডাকাত সুমন সরকার (৪০), পিতা-মৃত আঃ সালাম সরকার ওরফে সালামত সরকার, মাতা-মৃত জোবেদা খাতুন, সাং-সাধারচর, ০২ নং-উত্তর সাধারচর ইউপি, থানা-শিবপুর, জেলা-নরসিংদীকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই কিশোরগঞ্জ জেলা, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।

জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার ৫ ডিসেম্বর, রাত অনুমান ১০ টা ১৫ মিনিটের সময় গাজীপুর জেলার কাশিমপুর থানা এলাকা থেকে বাদী মোঃ নবী হোসেন কর্তৃক দায়েরকৃত ডাকাতি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ২২ সেপ্টেম্বর , ২০২০ সালে রাত অনুমান ১১ টার সময় বাদীর পরিবারের সদস্যগণ যার যার ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত অনুমান ২ টার সময় বাদীর বসত ঘরের পূর্ব-দক্ষিণ পাশের রুমে থাকা বাদীর মেয়ে হাফসা (১৪) ও ভাতিজী আফছানা মিমি (১২) দ্বয়ের রুমের ভিতরে আলমারি ভাঙ্গার শব্দ শুনে বাদী ঘুম থেকে উঠে লাইট জ্বালিয়ে অজ্ঞাতনামা লোকদের দেখে আটক করার চেষ্টা করলে তারা বাদীদের সাথে ধস্তাধস্তি করে দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে ১ টি মটর সাইকেল ও প্রাইভেটকার যোগে দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে বাদী দেখতে পান যে, ডাকাতদল তার বসত ঘরের ক্যাচি গেইটের তালা কেটে ১ টি মটর সাইকেল, আলমারী হতে ১,৭০,০০০ টাকা, স্বর্ণের দুল, ৩ টি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। এ সংক্রান্তে ভূক্তভোগী মোঃ নাবী হোসেন (৪২), পিতা-হাজী মোঃ সুরুজ আলী, সাং-ইমামেরচর, থানা-ভৈরব, জেলা-কিশোরগঞ্জ বাদী হয়ে ভৈরব থানায় এজাহারভুক্ত ১ জন সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন আসামী করে ভৈরব থানার মামলা নং-৩৮, তারিখঃ-২৬/১০/২০২০ , ধারা-৩৫৭/৩৮০ সংযোজিত ৩৯৫/৩৯৭ দঃ বিঃ দায়ের করলে অফিসার ইনর্চাজ, ভৈরব থানা মামলাটি রুজু করত: এসআই (নিঃ) আঃ ছালাম এর উপর তদন্তভার অর্পণ করেন। বাদীর নারাজীর প্রেক্ষিতে ও বিজ্ঞ আদালতের নিদের্শে মামলাটি পিবিআই কিশোরগঞ্জ জেলা গত ৫ নভেম্বর, গ্রহণ করে।
পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর সার্বিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় এবং পিবিআই কিশোরগঞ্জ ইউনিট ইনচার্জ, পুলিশ সুপার, মোঃ শাহাদাত হোসেন, পিপিএম এর সার্বিক সহযোগিতায় এসআই (নিঃ) আবু কালাম মামলাটির তদন্ত শুরু করেন।
তদন্তে জানা যায় যে, আসামীরা যথা সুমন, আব্দুল্লাহ, রুবেল, আসাবুদ্দিন, আলামিন, আমজাদ, রিপন, জাহাঙ্গীর এবং জিল্লু সমবয়সী ও পরস্পরে বন্ধু। উক্ত আসামীদের একটি সংঘবদ্ধ চুরি/ছিনতাই/ডাকাতি সিন্ডিকেট রয়েছে এবং উক্ত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তারা র্দীঘদিন থেকে সড়ক ও নৌ পথে চুরি/ছিনতাই/ডাকাতি করে আসছে।
ঘটনার সাত দিন আগে আসামী সুমন, আব্দুল্লাহ ও জিল্লু মিলে ডাকাতি করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক আসামীরা সুমন, আব্দুল্লাহ, রুবেল, আসাবুদ্দিন, আলামিন, আমজাদ, রিপন, জাহাঙ্গীর এবং জিল্লু বাদী মোঃ নাবী হোসেনের বাড়ীর পিছনের মিলিত হয়।
এরপর আসামী আমজাদ ও জাহাঙ্গীর কাটার দিয়া তালা কাটলে রুবেল, রিপন, আল-আমিন এবং সুমন দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে ১ টি মটর সাইকেল, আলমারী হতে ১,৭০,০০০ টাকা, এক জোড়া স্বর্ণের দুল, ৩ টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আসামী সুমন, জিল্লু ও আব্দুল্লাহ প্রত্যেকে ডাকাতির ১০,০০০ টাকা ও ১ টি করে মোবাইল নেয়। তারা চক্রের বাকী সদস্যদেরকে ৭/৮ হাজার টাকা করে দেয়। তারা স্বর্ণের দুল ১৫,০০০ টাকায় আব্দুল্লাহ এর মার নিকট বিক্রয় করে প্রত্যেকে ২/৩ হাজার টাকা করে ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। এছাড়াও আসামীরা ডাকাতি করা মোটর সাইকেলটি তাদের বন্ধু দ্বীন ইসলামের কাছে ৫০,০০০ টাকায় বিক্রি করে প্রত্যেকে ৫০০০ টাকা করে নিয়ে যার যার মত চলে যায়।
আজ বুধবার ৬ ডিসেম্বর, গ্রেফতারকৃত আসামী সুমন সরকার (৪০) কে আদালতে প্রেরণ করা হলে সে নিজেকে জড়িয়ে উক্ত ডাকাতির ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।