মিষ্টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে বিএসটিআই এর রংপুর  বিভাগীয় কার্যালয়ের  মতবিনিময় ও গণশুনানি অনুষ্ঠিত

Uncategorized আইন ও আদালত জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন রংপুর সারাদেশ

 

নিজস্ব প্রতিনিধি  : আজ বুধবার  ১৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন  (বিএসটিআই) এর রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের সভাকক্ষে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সেবা গ্রহীতাদের সাথে গণশুনানী, অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থাপনা, তথ্য অধিকার আইন এবং সেবা প্রদান প্রতিশ্রæতি বিষয়ে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মফিজ উদ্দিন আহমাদ, উপপরিচালক (মেট্রোলজি) ও বিভাগীয় অফিস প্রধান, বিএসটিআই, রংপুর।সভায় উপস্থিত ছিলেন ছিলেন রংপুর  বিভাগের প্রতিনিধিত্বকারী ১৪ জন মিষ্টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক।


বিজ্ঞাপন

প্রথমে উপস্থিত সকলকে বিএসটিআই, রংপুর অফিসের প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। মিষ্টি শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের বাস্তবিক সমস্যাসমূহের সমাধান এবং কারখানার স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত অবস্থা উন্নয়ন বিষয়ে আলোকপাত করেন প্রকৌঃ জুনায়েদ আহমেদ, ফিল্ড অফিসার (সিএম)। পন্যসমূহের মোড়কজাতকরণ বিধিমালা এবং মানসম্মত মোড়ক নিয়ে আলোচনা করেন মোঃ আজিজুল হাকিম, সহকারী পরিচালক (মেট)। পণ্যের গুণগতমানের পরীক্ষণ ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা বিষয়ে আলোচনা করেন মোঃ মাহবুবুর রহমান সরকার, সহকারী পরিচালক (রসায়ন)। প্রকৌঃ মোঃ জাহিদুর রহমান, সহকারী পরিচালক (সিএম) এর সঞ্চালনায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য  অংশীজনের অংশগ্রহণে গণশুনানী এবং অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্টেকহোল্ডারগণের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মোঃ ইনজামামুল আলম, মেসার্স বৈশাখী মিস্টি মেলা, রংপুর সর্বাধিক সংখ্যক প্রতিষ্ঠানকে এই লাইসেন্স এর আওতায় আনার অনুরোধ জানান এবং পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে উৎপাদনের সাথে জড়িত কারিগরকে প্রশিক্ষণ প্রদান করার জন্য বলেন। নীলসাগর গ্রুপের প্রতিনিধি কাজী শরিফুল ইসলাম বলেন, মিষ্টির টেস্ট ফি এবং লাইসেন্স ফি কমানো হলে প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো হবে। মান অনুযায়ী পণ্য উৎপাদনের জন্য তার প্রতিষ্ঠান সচেষ্ট থাকবে।

গোওসিয়া হোটেল, ঠাকুরগাঁও এর প্রতিনিধি জনাব মিলন বলেন, মিষ্টি পণ্য বিএসটিআই’র বাধ্যতামূলক হওয়ায় বিএসটিআই কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা মিষ্টির কারখানাগুলোতে মনিটরিং বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান। পুষ্টি, রংপুর এর প্রতিনিধি জনাব সুমন চন্দ্র রায় বলেন, মিষ্টির লাইসেন্স গ্রহণের প্রক্রিয়া আরও সহজ করা প্রয়োজন। তিনি বিভিন্ন ধরনের ফি কমানোর জন্য অনুরোধ জানান। পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি ও গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত মান নিয়ন্ত্রণের মনিটরিং করার অনুরোধ জানান।

সাঈদ সুইটস, রংপুর এর প্রতিনিধি জনাব মোঃ মশিউর জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন মিষ্টি কারখানায় ভেজাল মিষ্টি তৈরী করছে। তারা ঘনচিনি, রং, সোডা, চিনির গাদ, চিনির পঁচা সিড়া ইত্যাদি ব্যবহার করছে। এগুলো দ্রত মনিটরিং করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিএসটিআই ভেজাল মিষ্টি থেকে সাধারন মানুষকে বিরত রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

মধুমুখী মিষ্টি বিতান (মৌবন), রংপুর এর প্রতিনিধি মোঃ জিল্লুর রহমান বলেন, মিষ্টির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গুলোতে ঘনঘন পরিদর্শন বা ফলোআপ করা জরুরী। এছাড়া লাইসেন্স এবং মোড়ক এর সনদ গ্রহণে গ্রাহকের কোন হয়রানীর শিকার না হন সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য অনুরোধ জানান।

গাইবান্ধা মিষ্টান্ন ভান্ডার, গাইবান্ধা এর প্রতিনিধি মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, মিষ্টি পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য গরুর খাদ্যের প্রতি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। গরুর খাবার যদি মান সম্মত হয় তবে প্রাপ্ত দুধ থেকে গুণগত মানের মিষ্টি উৎপাদন করা সম্ভব।

বিএসটিআই’কে তাদের চৌকস অফিসার দ্বারা মিষ্টির দোকান গুলো তদারকির মাধ্যমে মিষ্টির গুনগত মান ঠিক রাখা সম্ভব। অসৎ ব্যক্তিরা যেন কোনভাবেই এই গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য শিল্পে অসৎ কার্যক্রম চালাতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখাতে অনুরোধ জানান। তিনি আরও বলেন আমরা জনসাধারণ সজাগ থাকলেই এই দুগ্ধজাত মিষ্টি বিশ্ব নন্দিত হবে।

পরিশেষে সভাপতি রংপুর বিভাগের মিষ্টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সম্মানিত সদস্যগণকে এ সভায় যোগদান করার জন্য ধন্যবাদ জানান। সভাপতি জানান যে, বিএসটিআই’র লাইসেন্স এর ফি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের উপর নির্ভর করে তাই নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ফি সমূহ কমানের জন্য যে দাবী করেছেন তা মহাপরিচালক মহোদয়কে রেজুলেশনের মাধ্যমে অবগত করা হবে।

বিএসটিআই লাইসেন্স এর আবেদনের সময় অস্থায়ী লেবেল গ্রহণ করলেও কিউ আর কোড প্রদানের পর ছাপানো লেবেল জমাদান সাপেক্ষে লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। সাদা প্যাকেটে ভিতরে স্টিকার দিয়ে কোন পন্য বাজারজাত করা যাবে না।

প্রতারক চক্রের মিথ্যা প্রলোভনে অনলাইন প্রতারণার শিকার না হওয়ার জন্য উপস্থিত সবাইকে সতর্ক করেন এবং বর্তমানেও বিএসটিআই’র সকল লেনদেন অনলাইন মাধ্যমে হচ্ছে না বলে জানান। ২০৪১ এ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের সকল উন্নয়ন মূলক কাজে কাধে কাধ রেখে এগিয়ে যেতে হবে। ভোক্তার স্বার্থ রক্ষার্থে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে।

তিনি সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী উল্লেখিত সময়সীমার মধ্যে লাইসেন্স / সনদপত্র প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করার আহবান জানান। বিএসটিআইতে আগত সেবাগ্রহীদের প্রতি অন্যায়, বৈষম্যমূলক বা হয়রানিমূলক আচরণ করা যাবে না মর্মে নির্দেশনা প্রদান করেন। স্টেকহোল্ডারদের উন্নয়নের জন্য পরামর্শের প্রয়োজন হলে যোগযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *