মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী (গোপালগঞ্জ) : গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৯নং সাতপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রনব বিশ্বাস বাপি’র বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে গত ৬ ডিসেম্বর সাতপাড় দীননাথ গয়ালী চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি শান্তনু বালা কৃষ্ণ গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে ও শান্তনু বালা কৃষ্ণ এর সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাতপাড় দীননাথ গয়ালী চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের মালিকানাধীন কয়েকটি দোকান ঘর জরুরি ভিত্তিতে রাস্তার পাশ থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে আনার পাশাপাশি সংস্কার ও ছাত্র-ছাত্রীদের বসার বেঞ্চ তৈরীর জন্য বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত সোমবার (২৭ নভেম্বর)২০২৩ তারিখে স্কুল মাঠ সীমানার বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকটি গাছ কর্তন করি।
পর দিন মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সাতপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রনব বিশ্বাস বাপি তার লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় তিনি গাছগুলো সরকারি বলে মনগড়া ভাবে দাবি করেন। পাশাপাশি স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের বিভিন্ন প্রকার মামলা হামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
একপর্যায়ে চেয়ারম্যান বাপি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসারের নাম ব্যবহার করে মোটা অংকের টাকা ঘুষ দাবী করেন। তিনি বলেন, ইউএনও স্যার ছোটখাটো ঘুষ খায় না, যদি মামলার হাত থেকে রেহাই পেতে চাও দেড় লাখ টাকা দিতে হবে। এক লাখ টাকা ইউএনও স্যার কে দিবো, বাকি ৫০ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের খরচ হিসাবে রাখবো। এ অনৈতিক প্রস্তাবে স্কুল কমিটির সদস্যরা রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হন ইউপি চেয়ারম্যান বাপি। পরে তার লাঠিয়াল বাহিনী ও চৌকিদারদের দিয়ে রাতের আঁধারে গাছগুলো ইউনিয়ন পরিষদের নিয়ে আঁটকে রাখেন।
লিখিত অভিযোগ থেকে আরো জানা যায়, চেয়ারম্যান প্রণব বিশ্বাস বাপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন ব্যাপি ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক বরাদ্দ আত্মসাৎ করা সহ শালিশ মিমাংসার নামে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি একাধিক নারীকেলেঙ্গরী সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। চেয়ারম্যান প্রণব বিশ্বাস বাপি এলাকার বড় বংশের মানুষ ও বেপরোয়া হওয়ায় তার ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলে না।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাতপাড় দীননাথ গয়ালী চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য বিপ্লব বালা, গৌতম বিশ্বাস, প্রদীপ বিশ্বাসের সাথে কথা বলে এবং সাতপাড় ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে চেয়ারম্যান বাপি’র বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী সাংবাদিকদের জানান, চেয়ারম্যান বাপি ছাত্রী ধর্ষণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন নারী কেলেঙ্কারির সাথে যুক্ত। তার একাধিক অসামাজিক ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি আমাদের ইউনিয়নের জন্য লজ্জাজনক।
এবিষয়ে চেয়ারম্যান প্রনব বিশ্বাস বাপি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন চাঁদা দাবি করিনি। শুধু গাছগুলো আমার হেফাজতে রেখেছি।