সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত কোটায়  প্রতিটি বিলাসবহুল গাড়ী আমদানীতে রাস্ট্রের ক্ষতি প্রায় ৪ কোটি টাকা 

Uncategorized আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী রাজনীতি সারাদেশ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক  : একজন সংসদ সদস্যের শুল্কমুক্ত কোটায় আমদানি করা বিলাসবহুল গাড়িতে সরকারের প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এসব শুল্কমুক্ত কোটায় সংসদ সদস্যদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি নিষিদ্ধ  করা এখন সময়ের দাবীতে পরিনত হয়েছে, এমনটা ই দাবি করেন দেশের অভিজ্ঞ মহল।


বিজ্ঞাপন

অভিজ্ঞ মহলের মতে,   এইচএম এরশাদের সময়ে ১৯৮৮ সালে প্রথম এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানির ‍সুযোগ দেওয়া হয়। এ নিয়ে সে সময় ব্যাপক সমালোচনা হলেও পরের সব সরকারই সে সুযোগ বহাল রেখেছে।

একজন ভারতীয় সংসদ সদস্য যেখানে ১৩০০ সিসির গাড়ী ব্যাবহার করেন, বাংলাদেশের সংসদ সদস্যরা সেখানে বিনা শুল্কে ১৬৫০ সিসি থেকে ৪৫০০ সিসির মোটর বা জিপ ডিজেল, পেট্রোল, হাইব্রিড অথবা বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানি করতে পারবেন।

সংসদ সদস্যরা এখন থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় হাইব্রিড এবং বৈদ্যুতিক গাড়িও আমদানি করার সুযোগ পাবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত বুধবার এ বিষয়ে এক আদেশ জারি করেছে, যেখানে নিয়ম ও শর্ত আগের মতই রেখে হাইব্রিড আর ইলেক্ট্রিক গাড়ির ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআর সদস্য (শুল্ক নীতি) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া গণমাধ্যমে  বলেন, “আগে সংসদ সদস্যদের জন্য গাড়ি আমদানির তালিকায় হাইব্রিড ও ইলেক্ট্রিক গাড়ি ছিল না। অথচ বহির্বিশ্বে এখন এই দুই ধরনের গাড়ির চাহিদা ব্যাপক। “তাই সংসদ সদস্যরা চাইলে যেন হাইব্রিড ও ইলেক্ট্রিক গাড়ি আমদানি করতে পারেন, সেই সুযোগ রেখে আমরা এসআরও জারি করলাম।”

পুরোপুরি বিদেশে তৈরি ১৬০০ থেকে ২০০০ সিসি সিলিন্ডার ক্যাপাসিটির একটি গাড়ি আমদানি করতে এখন ২২১ শতাংশ কর ও শুল্ক দিতে হয়। ২০০০ থেকে ৩০০০ সিসিতে এর পরিমাণ হয় ৩৬৫ শতাংশ। আর ৩০০০ থেকে ৪০০০ সিসির ক্ষেত্রে ৮২৬ শতাংশ কর ও শুল্ক গুণতে হয়।

আন্তর্জাতিক বাজারে ৪০০০ সিসির একটি নতুন টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার-ভি ৮ এর দাম যদি ৭০ হাজার ডলারের মত হয়, তাহলে বাংলাদেশে টাকায় তা হয় ৬০ লাখ টাকার বেশি। বাংলাদেশে আনার পর শুল্ক কর মিলিয়ে তার দাম দাঁড়ায় ৫ কোটি টাকার মত।

অর্থাৎ, একজন সাধারণ নাগরিককে যখন ওই গাড়ি আমদানি করতে ৫ কোটি টাকা গুনতে হবে, একজন এমপি মাফ পাবেন প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। অবশ্য পরিবেশবান্ধব বিবেচনায় হাইব্রিড গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্ক-কর কিছুটা কম। ৪ হাজার সিসির একটি নতুন হাইব্রিড গাড়ির জন্য ২১২ শতাংশ শুল্ক-কর দিতে হয়।

এইচএম এরশাদের সময়ে ১৯৮৮ সালে প্রথম এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানির ‍সুযোগ দেওয়া হয়। এ নিয়ে সে সময় ব্যাপক সমালোচনা হলেও পরের সব সরকারই সে সুযোগ বহাল রেখেছে।

ওই সুবিধায় গাড়ি আমদানির পর বিক্রি করে দেওয়ার বেশ কিছু ঘটনা আলোচনায় এলে ২০১০ সালে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে কিছু শর্ত আরোপ করা হয়।

সে অনুযায়ী একাধিকবার নির্বাচিত এমপিরা সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় গাড়ি আনতে পারেন। প্রথম গাড়ি কেনার ৫ বছর পর সংসদ সদস্য থাকলে দ্বিতীয় গাড়ি আনা যায়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *