নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকের হাতে ক্ষতিপূরণের অর্থের চেক হস্তান্তরে যেন কোনো ধরণের বিলম্ব না হয় সে ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ। জেলা প্রশাসকের অনুমোদন শেষে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত ক্ষতিপূরণের অর্থের চেক হস্তান্তর নিশ্চিত করার জন্য বিভাগীয় কমিশনারদের এই নির্দেশ দেন ভূমিমন্ত্রী।
গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিভাগীয় কমিশনার সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এই বক্তব্য রাখেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ। ভূমি সচিব মোঃ খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, ভূমি আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম শামিমুল হক, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডল, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, দেশের সকল বিভাগীয় কমিশনারসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, আর্থ-সামাজিক ও শিল্প উন্নয়নসহ দেশের বৃহৎ স্বার্থে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া একটি জরুরী বিষয়। এ নিয়ে মনে কষ্ট থাকলেও দেশের উন্নয়নের জন্য সাধারণ মানুষ তাঁদের জমি দিতে রাজি থাকেন। তবে অনেক মানুষ হারায় তার শতবছরের পৈত্রিক ভিটে-বাড়ী, অনেকে হারায় পূর্ব-পুরুষদের সমাধি আবার অনেকে কৃষিজমি। এমতাবস্থায়, ক্ষতিপূরণের চেক পেতে বিলম্ব হওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কেবল আর্থিক ক্ষতি নয়, মনস্তাত্ত্বিক আঘাতও।
অধিগ্রহণে ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের সমাজের সমাজের শত্রু উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তারা প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বে বাস্তবায়নকৃত দেশের স্বাভাবিক উন্নয়ন কাজের বাধা সৃষ্টি করছে, সেই সঙ্গে সরকারকেও বিব্রত করছে। অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রকৃত ভূমি মালিকদের পদে পদে হয়রানিকারীদের বিরুদ্ধে টেকসই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেন ভূমিমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের ইতোমধ্যে চেক হস্তান্তর প্রক্রিয়া ডিজিটাইজেশনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও অধিগ্রহণকৃত জমির প্রকৃত মালিকদের ভোগান্তি কমাতে আইবাসের মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, সর্বশেষ সার্ভে নিয়োগ পরীক্ষায় যোগ্য ব্যক্তি থাকলেও অনেক পদ ফাঁকা রাখতে হয়েছে। কারণ সার্ভে সংশ্লিষ্ট গ্রেডের পদে জেলা কোটা তথা জেলাওয়ারী পদ বিতরণের শতকরা হারের বাধ্যবাধকতা থাকায় এক জেলার জন্য প্রযোজ্য পদে অন্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়োগ প্রদান করা সম্ভব হয়নি। দেশের অন্যান্য প্রান্তে আরও সার্ভে ইনস্টিটিউট হলে এই পরিস্থিতি এড়ানো যাবে বলে মন্ত্রী এসসময় মত প্রকাশ করেন। প্রয়োজনে আরও সার্ভে ইন্সটিটিউট স্থাপন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন মন্ত্রী।
সভায় প্রদর্শিত এক সচিত্র প্রদর্শনীতে (PowerPoint presentation) দেখা যায় বিগত এক মাসে খতিয়ান ডেলিভারির দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, মাগুরা, খুলনা ও নেত্রকোনা জেলা। ভূমি সচিব আশা প্রকাশ করেন অন্যান্য জেলাও দ্রুত অগ্রগতি লাভ করবে। জনবল, সায়রাত মহাল, ভূমি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম, ভূমি অফিস, দানকৃত ও দেবোত্তর সম্পদ ইত্যাদি। সহ প্রভৃতি ভূমি বিষয়ক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় সমন্বয় সভায়।