মো:রফিকুল ইসলাম,(নড়াইল) : নড়াইলে শেফা নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা’র অভিযোগ নিহত শেফার স্বজনদের। গত (২৫ জানুয়ারী) বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে মীর্জাপুর শেফা’র শশুর বাড়িতে এ হত্যার ঘটনা ঘটে,তবে মৃত-শেফার স্বামীসহ পরিবারের সদস্য’রা পলাতক রয়েছে।
নিহত এক সন্তানের জননী শেফা নড়াইল সদর উপজেলার বড়গাতী গ্রামের আক্তার খানের মেয়ে এবং একই উপজেলার মীর্জাপুর গ্রামের নয়ন শেখ এর ছেলে প্লাবন এর সাথে পারিবারিক ভাবে শেফা’র বিবাহ হয়।
বিবাহের পর থেকে প্লাবন ও শেফার মধ্যে কলহ লেগেই থাকে এবং শেফাকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন স্বামী প্লাবন। শেফা গর্ববতি অবস্থায় ৬ মাস বাবার বাড়ি থেকে সিজারের মাধ্যমে ছেলে সন্তান জন্মদেন তবে স্ত্রী সন্তানের কোন খোঁজখবর নেননি স্বামী প্লাবনসহ তার পরিবার। গত ২ মাস আগে প্লাবনের বাবা ও প্লাবন তার শশুর বাড়ি গিয়ে স্ত্রী শেফা’র সাথে আর কোন ঝামেলা করবে না বলে অনুনয় বিনয় করে শেফাকে প্লাবনের নিজ বাড়ি মির্জাপুর গ্রামে নিয়ে আসেন এবং গত বৃহস্পতিবার প্লাবনকে মোবাইল ফোন কেনার জন্য টাকা দিলে,শেফা বৃহস্পতিবার সন্ধার পরে স্থানীয় বাজারে গিয়ে মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ পায়,পরে বাড়ি চলে যায় শেফা এবং মধ্য রাতে খবর আসে শেফা মারা গেছে।
এমন কি আজকে শেফা মরার পরেও হাসপাতালে প্লাবনসহ তার বাড়ির কেউ আসেনি। প্লাবন ও তার পরিবার শেফাকে গলা টিপে হত্যা করেছে,বলে দাবী স্বজনদের। মীর্জাপুর গ্রামের প্লাবনের প্রতিবেশি শেফা’র মামা বলেন,এদের বাড়ি থেকে আমার বাড়ি এক মিনিটের পথ অথচ আমাকে ঘটনার বিষয়ে জানানো হয়েছে অনেক পরে,আমি যেয়ে দেখি আমার ভাগিনীর গলায় কালো দাগ,মূখে ওরনা দিয়ে ঢেকে রেখেছে,শেফাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান।
শেফার বড় দুলাভাই একই গ্রামের সেলিম শেখ জানান,প্লাবনের মামা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এসে আমাকে ডেকে বলে শেফা অসুস্থ হয়েছে আপনি দ্রুত আসেন। আমি ও আমার স্ত্রী দ্রুত তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখি শেফা’র লাশ খাটের পরে শোয়ানো এবং আশেপাশে রক্ত পড়ে আছে। এরপর আমি দ্রুত স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে,শেফা মারা গেছে বলে জানান।
শেফার মেঝো দুলাভাই একই উপজেলার তারাপুর গ্রামের ইমরুল মোল্যা বলেন,প্লাবন রাত সাড়ে ১২টার দিকে ফোন দিয়ে বলে শেফার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে আপনি দ্রুত আসেন। আমি প্লাবনদের বাড়িতে গিয়ে দেখি শেফার লাশ মেঝেতে পড়ে আছে এবং আমিসহ আমার শশুর বাড়ির লোকজন শেফা’র গলায় স্পষ্ট কালো দাগ দেখতে পাই। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই পারিবারিক কলহ চলছিল,শেফাকে হত্যার দিনেও স্মার্ট ফোন কেনার জন্য প্লাবনকে টাকা দেওয়া হয়েছিল।
মীর্জাপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই-এস এম রেজাউল করিম জানান,মীর্জাপুর গ্রামের এক গৃহবধূর আত্মহত্যা করছে,লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে হত্যা নাকি আত্মহত্যা।