নইন আবু নাঈম তালুকদার, (বাগেরহাট) : ঢাকার সাভার এলাকায় চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্রী ও গৃহবধু ধর্ষণ মামলার আসামি শরণখোলায় আত্মগোপনে থাকা মোসলেম মোল্লা (৪০) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৬ এর একটি দল। ২ ফেব্রæয়ারী শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী ইকোপার্ক এলাকা থেকে রাব-৬ তাকে আটক করে।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে দশটার দিকে ঢাকার সাভার মডেল থানাধিন বেগুনবাড়ি গুদারাঘাট থেকে নৌকা যোগে পাচকানি ঘাট এলাকায় নিজ বাড়ি যাওয়ার পথে নদীর মধ্যে কলেজ পড়ুয়া গৃহবধু কসমেটিক দোকানের সেলসম্যানকে ধর্ষণ করে মোসলেম মোল্লা। ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে যায় মামলার অন্যতম আসামী মোসলেম মোল্লা।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও র্যাব-৬ সূত্রে জানা যায় সাভার মডেল থানাধিন বেগুনবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ও কসমেটিক দোকানের সেলসম্যান কলেজ পড়–য়া গৃহবধূ (২১) মিরপুর-১ এ একটি কসমেটিকের দোকানে চাকরি করে। সেখান থেকে রাতে বাড়ি ফেরার পথে গত ২৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে দশটার দিকে সাভার মডেল থানাধিন বেগুনবাড়ি গুদারাঘাট এলাকা থেকে সেলিম মাঝি নামে এক ব্যক্তির নৌকায় উঠে পাঁচকানির কাউন্দিয়া ঘাট এলাকায় যাওয়ার জন্য। এ সময় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা মামলার মূল আসামি সাভার সদর উপজেলার আমিন বাজার এলাকার বাসিন্দা মৃত সফিউল্লাহর পুত্র মোসলেম মোল্লা ও তার সাথে নৌকা উঠে। নৌকা নদীর মাঝখানে পৌছার পর মাঝি সেলিমের সহযোগীতায় মোসলেম মোল্লা ওই কলেজ পড়ুয়া গৃহবধূকে জোর করে ধর্ষণ করে।
এ সময় ডাক চিৎকার দিলে তাকে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে নৌকায় থাকা সেলিম মিয়ার সহযোগীতায় কয়েকবার তাকে ধর্ষণ করলে সে অচেতন হয়ে যায়। পরে ওরা নৌকায় তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এ সময় গুদারাঘাটের অপরপ্রান্তে অপেক্ষমান ওই মেয়ের স্বামী ও শ্বশুর দেরি হওয়ায় অন্য একটি নৌকায় তাকে খুঁজতে বেড় হয়।
পরে রাত সাড়ে বারোটার দিকে অচেতন অবস্থায় নৌকার মধ্যে খুঁজে পায় তাকে। পরে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সুস্থ হলে পরের দিন ২৮ জানুয়ারি মোসলেম মোল্লা ও সেলিম কে আসামি করে সাভার মডেল থানায় একটি নারী নির্যাত ও ধর্ষণ আইনে মামলা দায়ের করলে আসামীরা আত্মগোপনে চলে যায়। আত্মগোপনে থাকা ধর্ষক মোসলেম মোল্লার মোবাইল ট্রাকিং করে র্যাব জানতে পারে সে বাগেরহাটের শরণখোলা অবস্থান করছে।
পরে র্যাব-৬ এর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার মোঃ বদরুদ্দোজার নেতৃত্বে ব্যাবের একটি দল ২ ফেব্রæয়ারী রাত সাড়ে ৭টার দিকে শরনখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী ইকো পার্ক এলাকায় ঘোরাঘুরি করার সময় মোসলেম মোল্লাকে র্যাবের চৌকস দল ধরে ফেলে।
এ সময় ধর্ষক র্যাবের দুইজনকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আবারও র্যাব সদস্যরা তাকে ধরতে সক্ষম হয়। ওই রাতেই তাকে খুলনায় র্যাবের কার্য্যালয় নিয়ে যায়।
র্যাব সূত্র আরও জানায় ধর্ষক মোসলেম মোল্লা শরণখোলা উপজেলার কদমতলা গ্রামের তার এক পূর্ব পরিচিত জনৈক ব্যক্তি বাড়িতে আশ্রয় নেয় এবং তাকে জানায় সে বেড়াতে এসেছে কিন্তু তিনি জানতেন না যে মোসলেম মোল্লা ধর্ষন মামলার আসামী।
এব্যপারে র্যাব-৬ এর কোম্পানি কমান্ডার মোঃ বদরুদ্দোজা বলেন, মোবাইল ট্রাকিং ও বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ধর্ষণ মামলার আসামিকে শরণখোলা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাবাদে তিনি ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। তাকে সাভার মডেল থানায় হস্তান্তর করা হবে।