ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ফর্মুলারীর বাইরে গিয়ে তৈরি করা হচ্ছে সর্ব রোগের মহা ঔষধ 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  রাজধানী সহ দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলে অপরিচ্ছন্ন আর স্যাতসেতে পরিবেশে বিভিন্ন প্রকার জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর কেমিক্যাল নামক অপদ্রব্য দিয়ে -ই তৈরি করা হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় ইউনানি ফর্মুলারী ও বাংলাদেশ জাতীয় আয়ুর্বেদিক ফর্মুলারীর বাইরে কথিত ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ সামগ্রী। এসব ঔষধ সেবনে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মহলের। কারন এসব কথিত ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরিকালে মানা হয় না কোন প্রকার ঔষধ তৈরির নীতিমালা, এসব সর্বরোগের মহা ঔষধের কার্যক্ষমতা বাড়াতে ব্যাবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের স্টোর ওয়েভ, সিপ্রোহেপ্টামাডিন, সিলডেনাফিন সাইট্রেড, ট্রাডালাফিন সাইট্রেড, কেফেইন অপিয়াম উদ্বুদ্ধ অপিয়েট বা আফিম। ভগ্ন স্বাস্থ, বাত ব্যাথা, জ্বর, ও যৌনদুর্বলতা কে পুঁজি করে কথিত ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরি ও বিপণনের মাধ্যমে অতি দ্রুত থেকে দ্রুততম সময়ের ব্যাবধানে রাতারাতি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এসব অপকর্ম চলছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সদর দপ্তরের নথি সংশ্লীষ্ট কর্মকর্তা এবং জেলা কার্যলয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যাক্ষ্য ও পরোক্ষ্য যোগসাজশে। ডেক্সামিথাসন গ্রুপের ঔষধ মূলত জীবন রক্ষাকারী ঔষধ হিসেবে ব্যাবহার করা হলেও ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির মালিকরা ভিটামিন ঔষধ প্রস্তুতকালে এই কেমিক্যাল ব্যাবহার করে ফলে তাতক্ষনিক ভাবে মানবদেহের স্থুলতা বৃদ্ধি পেলেও জনস্বাস্থ্যে এর বিরুপ প্রতিক্রিয়া অতিব ভয়াবহ। মানব দেহে প্রতিনিয়ত এধরণের কেমিক্যাল প্রবেশের ফলে লিভার কিডনি ও হার্টে পানি জমে লিভার ও কিডনি বিকল হওয়াসহ হার্ট এট্যাকের ঝুঁকি শতভাগ।


বিজ্ঞাপন

এসব জানা সত্বেও ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির মালিকেরা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি পূর্ণ এসব কথিত ভিটামিন ঔষধ অতি স্বল্প মুল্যে বাজারজা করে নিজেরা লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশের জনসাধারণ । এসব বিতর্কিত কথিত ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির মধ্যে ঢাকার ডেলকো ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, নেচার ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, হামজা ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, হ্যাপি ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, আশুলিয়া সাভার এলাকার চিত্রা ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, গুড হেল্থ ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, গুড লাইফ ল্যাবরেটরীজ আয়ু, বোটানিক ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, জেনিয়াল ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, বায়ো-সাইন্স ল্যাবরেটরীজ আয়ু এবং রবিন ল্যাবরেটরীজ আয়ু লি: উল্লেখযোগ্য। এসব কথিত ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির মালিকরা প্রতিনিয়ত জনস্বাস্থ্য বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থেকে ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাতের মাধ্যমে দেশের জনসাধারণের জনস্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে । এসব অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, কবিরাজ ও হেকিমদের একটি মহল, নাম ও পরিচয় গোপন রাখার শর্তে তারা জানান, বর্তমানে বোটানিক ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, জেনিয়াল ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, গুড হেল্থ ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, গুড লাইফ ল্যাবরেটরীজ আয়ু, হামজা ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, নেচার ল্যাবরেটরীজ ইউনানি ও হ্যাপি ল্যাবরেটরীজ ইউনানি সহ উল্লেখিত ঔষধ কোম্পানির উৎপাদিত ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া করোনা মহামারির মতো ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও এসব বিষয় থেকে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে। কারণ এসব ঔষধ সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার প্রভাব ধীরে ধীরে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এসব ঔষধ সেবনে বিকৃত-মস্তিস্ক, যৌনবিকারগ্রস্ত, সামাজিক অবক্ষয়, পারিবারিক কোন্দল, সহজাত প্রবৃত্তি বৃদ্ধি সহ হিংসাত্মক ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। জাতীয় ও জনস্বার্থে দেশের জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি নিশ্চিত করতে উল্লেখিত ঔষধ কোম্পানির বিরুদ্ধে আজকের এই প্রতিবেদন।


বিজ্ঞাপন

বোটানিক ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি) সাভার :  ঢাকা এর উৎপাদন লাইসেন্স নাম্বার -ইউ-২৭৩। উক্ত কোম্পানি গ্রো-ভিট (আরক লাহসুন) নামক ৪৫০ মিলি সিরাপ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে যার কার্যকারিতা সাধারণ দুর্বলতা,ক্ষুধা মন্ধা,আহারে অরুচি, স্নায়ুবিক দুর্বলতা শীতকাতরতা বহুমুত্র ও বায়ু সঞ্চার, এর ডি.এ.আর নাম্বার -২৭৩-এ-৬২, ব্যাচ নাম্বার -৩৪, উৎপাদন তারিখ -সেপ্টেম্বর -২০২৩, মেয়াদ উত্তির্নের তারিখ – সেপ্টেম্বর -২০২৫, মুল্য -৪০০ টাকা। ডেইলি -ভিটা (শরবত আনার) ৪৫০ মিলি সিরাপ, এর কার্যকারিতা রুচিবর্ধক, পুষ্টি বর্ধক, সাধারণ দুর্বলতা প্রমশক,ভিটামিন -এ ও ভিটামিন -সিএর অভাব ও রক্ত স্বল্পতায় কার্যকর, এর ডি.এ.আর নাম্বার ইউ-১২-এ-০৫৯, ব্যাচ নাম্বার -৪০, উৎপাদন তারিখ অক্টোবর -২০২৩, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ – অক্টোবর- ২০২৫, মূল্য -৩৬০ টাকা। এছাড়াও উক্ত ডেইলি ভিটা নামক ভিটামিন ঔষধ এর মোড়কে ( মার্কেটের বাই জনকল্যাণ ডিসট্রিবিউশন সাভার ঢাকা) মুদ্রিত আছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নিয়ম অনুসারে ঔষধ অধিদপ্তর থেকে অনুমোদিত কোন কোম্পানির ঔষধের মোড়কে অন্য কোন বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যেক্তির নাম মুদ্রণ করতে হলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে অবশ্য ই অনুমোদন নিতে হবে এ ক্ষেত্রে আলোচিত ও সমালোচিত তথা বিতর্কিত ইউনানি ঔষধ কোম্পানি বোটানিক ল্যাবরেটরীজ কর্তৃপক্ষ কি আদৌও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়েছেন ?

পিউভিট (শরবত ছেহাত আফজা) ৪৫০ মিলি সিরাপ এর কার্যকারিতা সাধারণ বলকারক, স্বাস্থ্যবর্ধক, ও পরিপাকতন্ত্রের শক্তি বর্ধক, এর ডি.এ.আর নাম্বার -ইউ-১২-এ-০৫১, ব্যাচ নাম্বার -৪২, উৎপাদন তারিখ সেপ্টেম্বর -২০২৩, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ সেপ্টেম্বর- ২০২৫ এবং মূল্য – ৩৬০ টাকা। আনার দানা ( হাব্বে য়ারকান) ৩০ টি ট্যাবলেট পটে বাজারজাত করছে এর কার্যকারিতা জন্ডিস,নারীর প্রতিবন্ধকতা, আহারে অরুচি অসাধারণ দুর্বলতা পিণ্ড বিস্মরণ, যকৃতে দুর্বলতা, ও যকৃত প্রদাহে কার্যকর, এর ডি. এ. আর নাম্বার -ইউ -এ-১৫, ব্যাচ নাম্বার অস্পষ্ট, উৎপাদন তারিখ সেপ্টেম্বর- ২০২৩, মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ সেপ্টেম্বর- ২০২৫, মূল্য ৩৬০ টাকা। বি -ট্যাব (হাব্বে কাবেদ নৌশদনী) ৩০ টি ট্যাবলেট এর পট, এর কার্যকারিতা, পাকস্থলী দুর্বলতা, হজমকারী, শক্তিবর্ধক, যকৃত প্রদাহে, ক্ষুধামন্দা ও রুচি বৃদ্ধি কারক, এর ডি.এ.আর নাম্বার- ইউ-১২ -এ -০১৭,ব্যাচ নাম্বার -৪৯, উৎপাদন তারিখ আগস্ট- ২০২৩, মেয়াদ উত্তীনের তারিখ আগস্ট- ২০২৫, মূল্য ৩৫০ টাকা। হেলফিট (হাব্বে হেলতীত) ৩০ টি ট্যাবলেট এর পট, এর কার্যকারিতা রুচি বর্ধক ও হজমিকারক, ডিএআর নাম্বার -ইউ- ১০-এ-০২৫, ব্যাচ নাম্বার -২৪, উৎপাদন তারিখ মার্চ- ২০২৩, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ মার্চ- ২০২৫, মূল্য ৩৮০ টাকা। ঔষধ শিল্পের সাথে জড়িত এমন একটি সূত্র জানায় ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির মধ্যে প্রায় শতাধিক কোম্পানির ব্যবসা একাই বোটানিক ল্যাবরেটরীজ ইউনানির মালিক বিপ্লব করছে, বোটানিক ল্যাবরেটরী ইউনানির ঔষধ কম মূল্যে বিক্রি করায় বোটানিকের ঔষধ রাজধানী সহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মুড়িমুড়কির মত বিক্রি হচ্ছে। ৩৫০ ও ৪০০ টাকার ঔষধ  রীতিমত ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি করায় বোটানিক ল্যাবরেটরীজের ঔষধ বাজারে প্রায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়েছে। দেশের স্বনামধন্য ঔষধ ব্যবসায়ীদের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে বোটানিক ল্যাবরেটরীজের ঔষধ।

মেসার্স গুড হেলথ ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড ইউনানী : নতুন পাড়া হেমায়েতপুর সাভার ঢাকা স্মারক নং ডি.জি.ডি.এ ইউনানী ১৪৭/০৯/২৫৮ তারিখ ১৫/০৯/২০১৯ মোতাবেক প্রতিষ্ঠানের কারখানা, (0১) হাব্বে হায়াতীন মুরাকাব (ক্যাপসুল) বাণিজ্যিক নাম লুমাটন, (০২) হ্যাকো হায়াতীন মুরাকাব জওয়াহারদাত (ক্যাপসুল) বাণিজ্যিক নাম জিএইচ -ভিট, (০৩) ইভেনিং পিমরোজ (ক্যাপসুল) বাণিজ্যিক নাম ইপিওজি, (০৪) আরব আজীব (তরল) বাণিজ্যিক নাম জিএইচ-২০,০৬ মরহুম আজিম (মলম) বাণিজ্যিক নাম-টাররাসিল (০৬) এই ছয়টি পদের বাজারজাতকরণ স্থগিত করা হলো । উক্ত প্রোডাক্টগুলি সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল মোঃ মাহবুবুর রহমান নির্দেশে ওষুধ গুলো বিক্রি বাজারজাত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো বলে নির্দেশনা জারি করেছিলেন। এছাড়া ও মালিক আবু মুসার আরেকটি কোম্পানি রয়েছে, যার নাম গুড লাইফ আয়ুর্বেদিক ল্যাঃ লিঃ, উৎপাদন লাইসেন্স নাম্বার নং- আয়ু- ০৪৪ এবং গুড হেলথ লিঃ ইউনানী এই দুটি কোম্পানির ঔষধ বর্তমানে বাজারে মুড়িমুড়কির মত চলছে , পিউমিন মাল্টি ভিটামিন ও মাল্টি মিনারেল সিরাপ ৪৫০মিঃ, ডি এ আর নং -আয়ু-০৫২-এ-০২৩, ভেনাপ্রো ৪৫০ মিঃ ডি এ আর নং -ইউ-১৪৭-এ-০১৭, এলভা ৪৫০ মিঃ ডি এ আর নং -আয়ু-০৫২-এ-০৪, জিংকোমিক্স ৪৫০ মিঃ, আয়ু- ০৫২-এ-০২২, ইকোরেক্স ৪৫০ মিঃ ভি এ আর নং -আয়ু-০৫২-এ-০৩২,এ সমস্ত প্রোডাক্টে কালার ফ্লেভার ও অতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করে ঔষধ তৈরি করছে। এসব ওষুধ সেবন করে অনেক রোগীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানা যায় ডাক্তারদের ভাষ্য অনুযায়ী এই প্রোডাক্টগুলো দ্রুত ড্রাগস টেস্টিং ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করলে সত্যতা পাওয়া যাবে।

সুরমা ফার্মাসিউটিক্যালসের (ইউনানী) : আরক পুদিনা (সুরমিন্ট), সেব-এস (শরবত সেব) নামক ৪৫০মিলি সিরাপ রাজধানীসহ সারাদেশে মুড়িমুড়কির মতো বিক্রি হচ্ছে এর কারন সরুপ জানা যায় উক্ত ভিটামিন সিরাপ দুটিতে মাত্রাতিরিক্ত গবাদিপশু মোটাতাজা জাত করন ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে কারন এই দুটি ভিটামিন সিরাপ সেবন করলে অতিদ্রুত স্বাস্থ্য বৃদ্ধি, রুচি বৃ্দ্ধি হয় যে কারনে জনসাধারন এই দুটি ভিটামিন সিরাপ কিনতে ঔষধের দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নারায়নগঞ্জ এলাকার দায়িত্বরত একাধিক কর্মকর্তা একাধিকবার সুরমা র্ফামাসিউটিক্যালস এর উৎপাদিত ভিটামিন সিরাপ আরক পুদিনা (সুরমিন্ট), সেব-এস (শরবত সেব) এর গুনগত মান যাচাই এর জন্য ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে উল্লেখিত দুটি ভিটামিন ঔষধের নমুনা পাঠিয়ে ও অধ্যবধি নমুনা পরিক্ষার রিপোর্ট হাতে পায়নি।এর কারন সরুপ জানা যায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উর্ধতন কতৃপক্ষ এবং ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরির কর্মকর্তাদের নিয়মিত অবৈধ সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছে সুরমা ফার্মাসিউটিক্যালস এর মালিক ফিরোজের কাছ থেকে ।

হ্যাপি ল্যাবরেটরীজ ইউনানী :  উৎপাদন লাইসেন্স নং-ইউ-০৩৯ , হ্যাপি-জেড ৪৫০মিঃ লিঃ সিরাফ ডি,এ,রেজি নংঃ৩৯-এ-০৪৪ ব্যাচ নাম্বার ১৭ মুল্য ৪০০টাকা, হ্যাপিটন ন্যাচারাল ভিটামিন সিরাপ ৪৫০ মিঃলিঃ ডি এ আর নং- ইউ- ৭১-এ-১২ব্যাচঃ নং১৭ মুল্য ৩০০টাকা এছাড়াও বিভিন্ন ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করছে । তার কোম্পানির হাকিম কবিরাজ নামমাত্র রেখেছেন কারখানায় গেলে খুঁজে পাওয়া যাবে না, এছাড়া গাছ গাছড়ার বদলে মিটফোর থেকে খোলা বাজারের কেমিক্যাল কিনে ঔষধ তৈরিতে ব্যবহার করছে বিশ্বস্ত সূত্রে নিশ্চিত করেছেন ।

অখ্যাত কোম্পানিগুলো এসব ঔষধ বাজারজাত করে। গুগল সার্চ করে এদের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়।কিন্তু সেই নম্বরে কল দিলে তিনটি ফোনই বন্ধ পাওয়া যায়। অনুসন্ধানের জন্য প্রতিবেদক সুরমা ল্যাবরেটরিজের ঠিকানা ১২০/১,মতিঝিলে গিয়ে সেখানে এই নামের কোন কিছুর অস্তিত্ব খুঁজে পাননি । আশেপাশের কেউ কোন তথ্য দিতে পারেননি।

হামজা ল্যাবরেটরীজ (ইউনানী) :  এর অফিস গোধুলী প্রাঙ্গণ এর দ্বিতীয় তলায় হোল্ডিং নামবার ৮৩১ ইব্রাহিমপুর। এই অফিস থেকেই হামজা ল্যাবরেটরীজ এর সকল প্রকার ঔষধ কোম্পানির নিজস্ব পরিবহনে সারাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই অফিসে হামজা ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি) এর তৈরি করা ঔষধ সামগ্রীর বিশল  মজুদ এখানে বাজারজাতের জন্য সংরক্ষণ করা হয়। মুলত হামজা ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি) কর্তৃপক্ষ ৮৩১ ইব্রাহিমপুরের এই অফিস টি ঔষধের ডিপো হিসেবে ব্যাবহার করছেন। হামজা ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি)  এর তৈরি করা  এইচপি তুলসী ৪৫০ মিলি, এইচপি তুলসী ১০০ মিলি, ট্যাবলেট হামজা রুচিক্যাপ, ক্যাপসুল পেঙ্কুল, ক্যাপসুল হামজা গ্যাস্কুল, সিরাপ হামজাপ্লেক্স (শরবত আমলা), ট্যাবলেট সুপার ক্যাপ (ভিটামিন এ টু জেড), ক্যাপসুল নিমভিট, ট্যাবলেট স্লিফিট, হামজাক্যাল- ডি, সিরাপ কফকুল, ক্যাপসুল নোএজমা, সিরাপ জিনবিট ৪৫০ মিলি (শরবত জিনসিন), সিরাপ জিনবিট ১০০ মিলি (শরবত জিনসিন), হালুয়া গ্রেফোট, সিরতাপ এয়াপেলটন ৪৫০ মিলি, সিরাপ সিইলিভ। যৌন উত্ত্বেজক ওষুধ সিলড্রেনাফিন, সাইট্রেট ও ট্রাডালাফিন সাইট্রেট নামক ভায়গ্রার উপাদান ব্যবহার করছে বলে ও ওষুধ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত একটি সূত্রের দাবি। সূত্রটি আরও দাবি করেন, জ্বরের ওষুধে প্যারাসিটামল, গ্যাস্ট্রিক ও আলসারে ওষুধে এন্টাসিড, রেনিটিডিন, ওমিওপ্রাজল এবং ব্যথা ও ব্যথানাশক ওষুধে ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম বিপি নামক এলোপেথিক ওষুধের কাঁচামাল ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে। এ ওষুধের বিষয়ে হেকিম, কবিরাজ, ইউনানী ও  বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসকদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন এই ওষুধগুলোর মান খুবই খারাপ যা মানুষের শরীরে দীর্ঘমেয়াদী রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী হতে পারে।

জেনিয়াল ইউনানি ল্যাবরেটরীজ‍ হেমায়েতপুর সাভার : জেনিয়াল ইউনি ল্যাবরেটরীজ এর উৎপাদন লাইসেন্স নাম্বার -২১৭ এর উৎপাদিত সকল ঔষধের মান অত্যন্ত নিম্নমানের এসকল ঔষধ তৈরি কালে সম্পূর্ণ কালার ফ্লেভার ও কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় ফলে এসব ঔষধ সেবনে দেহের কোন উপকারে আসে না উপরন্ত বিভিন্ন প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার শিকার হয়ে সাধারণ জনগণ কে মোটা অংকের অর্থ গচ্ছা দিতে হয়। উক্ত কোম্পানির উৎপাদিত ভিটামিন যৌন শক্তি বর্ধক ট্যাবলেট ক্যাপসুল সিরাপ ব্যথার আসুক ট্যাবলেট ক্যাপসুল সিরাপ ছাড়াও বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন ট্যাবলেট ক্যাপসুল সিরাপ উৎপাদন কালে বাংলাদেশ জাতীয় ইউনানী ইউনানী ফর্মুলারির নিয়মকানুন মানা হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে।

এর মধ্যে মেলটোন ৪৫০ মিলি সিরাফ,হিমোজেন ক্ষুধা বর্ধক ও রক্ত বর্ধক ৪৫০মিলি সিরাপ ,গাওয়াজেন ৪৫০মিলি সিরাফ, লুবুব কবীর ১০০ গ্ৰাম হালুয়া, ভিগোরী ৪৫০মিলি শক্তি বর্ধক সিরাপ, জেনিয়াল তুলসি ১০০ মিলি (এ্যালকোহল মুক্ত) সিরাপ, লিমোজেন ৪৫০ মিলি সাধারণ দুর্বলতা ও ক্ষুধা বর্ধক সিরাপ, জি-ট্যাব ন্যাচারাল ক্যালসিয়াম ৩০ টি ট্যাবলেট এর পট , রিউপেন (হাব্বে সুরঞ্জন) বাত-বেদনায় দ্রুত কার্যকরী বলে দাবি করা হয়, মা’জুন লানা নামক ১০০ গ্রাম, হালওয়া, গার্লজেন ৫০ টি ক্যাপসুল, এ্যাজমাটন ৫০টি ট্যাবলেট, মা – জুন মুগাল্লিয, জেনঅয়েল ২০ গ্রাম ( বিশেষ অঙ্গের) মালিশ, আমরোজেন  (শরবত আমরুদ) ৪৫০ মিলি সিরাপ উল্লেখযোগ্য।

সচেতন মহলের মতে,  ঢাকার ডেলকো ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, নেচার ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, হামজা ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, হ্যাপি ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, আশুলিয়া সাভার এলাকার চিত্রা ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, গুড হেল্থ ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, গুড লাইফ ল্যাবরেটরীজ আয়ু, বোটানিক ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, জেনিয়াল ল্যাবরেটরীজ ইউনানি, বায়ো-সাইন্স ল্যাবরেটরীজ আয়ু এবং রবিন ল্যাবরেটরীজ আয়ু লি: এর ঔষধের কারখানা ও তাদের তৈরি করা ঔষধের নমুনা পরিক্ষা করলে দেশের জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কিছুটা হলেও বাস্তবায়ন হবে এবং উপকৃত হবে দেশের জনসাধারণ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *