যশোর প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলার সদরথানাধীন কাশেমপুর সাকিনস্থ মো: রইচ উদ্দিন সরদার এর ছেলে মোঃ সালমান হোসেন(২৮) পেশায় একজন ইজিবাইক চালক। চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারী সকাল অনুমান ১০ টার সময় সাতক্ষীরা পলেটেকনিক মোড় হতে অজ্ঞাতনামা ০২ জন ব্যক্তি যশোর জেলার কেশবপুর থানা এলাকায় যাওয়ার কথা বলে ১২০০/- টাকায় ইজিবাইক ভাড়া করে। তাদেরকে নিয়ে চুকনগর মঙ্গলকোট বাজারের আগে আখ পট্টির ২০০ গজ উত্তর দিকে ফাঁকা জায়গায় অনুমান ১১.৪০ ঘটিকার সময় পৌঁছালে তারা সালমানকে গাড়ী থামাতে বলে। তখন সালমান তাদের কথায় রাস্তার বামপাশে গাড়ী থামায়।
সেসময় তারা ব্যাগ থেকে বিস্কুট ও পানি বের করে খায় এবং সালমানকে খেতে দেয়। উক্ত বিস্কুট ও পানি খাওয়াার পর সালমান জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তখন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সালমানের ইজিবাইক এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে গত ১৪/০৩/২০২৩ তারিখে ভিকটিম সালমান পিবিআই যশোর জেলা অফিসে এসে অভিযোগ দায়ের করলে পিবিআই, যশোর জেলা উক্ত ঘটনার বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজি, বাংলাদেশ পুলিশ এর সঠিক তত্ত¡বধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্তে এসআই (নিঃ) মোঃ মনিরুল ইসলাম সঙ্গীয় এসআই (নিঃ) স্নেহাশিস দাশ ও এসআই (নিঃ) রেজোয়ান সহ যশোর জেলার চৌকস দল ছায়া তদন্তকালীন সময়ে ভিকটিম সালমানের মোবাইল ফোনের সূত্রধরে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ হলে যশোর শহরস্থ গাড়িখানা রোড শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসের সামনে থেকে আসামি মোঃ আশিকুর রহমান শাকিল (২৬), পিতা-মোঃ আলাউদ্দিন শেখ, সাং-ঘোড়াদাড়ি এবং আসামি মোঃ রাফি শেখ রাব্বি(২৭), পিতা-মোঃ লিয়াকত আলী শেখ, সাং-কেকানিয়া, উভয় থানা ও জেলা-গোপালগঞ্জদ্বয় কে গত শুক্রবার ১৫ মার্চ গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকালে আসামি শাকিলের নিকট হতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। আসামিদ্বয়ের স্বীকারোক্তি মোতাবেক মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে খালিয়া বাজারস্থ জনৈক মোঃ আহাদ আলী শিকদার এর ঔষধের দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর থেকে আসামি মোঃ এমেজ লস্কার (৩২), পিতা- মোঃ ফারুক লস্কার, সাং- খালিয়া, থানা- মোহম্মদপুর, জেলা-মাগুরা এর দখল হতে ১টি ইজিবাইকটি উদ্ধার করে। পরবর্তীতে আসামি মোঃ আমিনুর ইসলাম (৪০), পিতা-মৃত আইনুদ্দিন শিকদার, সাং-সাতদোহাপাড়া, থানা ও জেলা-মাগুরা খালিয়া বাজারস্থ জামে মসজিদের সামনে পাকাঁ রাস্তার উপর হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আসামি এমেছ ও আমিনুর ইসলামের স্বীকারোক্তি মোতাবেক মাগুরা শহরস্থ ঢাকা রোড শিকদার অটো হাউজে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রাখা ছিনতাইকৃত ইজিবাইক এবং আসামি আসামি মোঃ নাইমুল ইসলাম (৪০), পিতা-মৃত আইনুদ্দিন শিকদার, সাং-সাতদোহাপাড়া, থানা ও জেলা-মাগুরা এর নিকট হতে উদ্ধার করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে আসামিদের কাছ থেকে ৬টি ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করলে কেশবপুর থানার মামলা নং-১১, তারিখ: ১৬/০৩/২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ধারা-৩২৮/৩৯২/৪১১ পেনাল কোড ও মনিরামপুর থানার মামলা নং-১৮, তারিখ-১৬/০৩/২০২৪ খ্রিঃ ধারা-৩২৮/৩৯২/৪১১/৪১৩/৪১৪ পেনাল কোড পৃথক দুটি মামলা রুজু হয়।
মামলা তদন্তকালে আরো জানা যায়, মোঃ আশিকুর রহমান শাকিল (২৬), মোঃ রাফি শেখ রাব্বি (২৭), এমেজ লস্কার (৩২), আমিনুর ইসলাম (৪০) এবং নাইমুল ইসলাম (৪০) ইজিবাইক চোর চক্রের সদস্য। তারা জানায় যশোর জেলায় কেশবপুর ও মনিরামপুর থানা এলাকা হতে উল্লেখিত ইজিবাইক গুলি চুরি করে মাগুরায় বিক্রয় করে। আসামি শাকিল ও রাব্বি জানায় কৌশলে ভিকটিম সালমানকে চেতনানাশক ঔষধ মিশ্রিত বিস্কুট ও পানি পান করিয়ে অজ্ঞান করতঃ তার ইজিবাইক চুরি করার পর উপরোক্ত আসামি এমেজ লস্কার এর কাছে চোরাই ইজিবাইক বিক্রয় করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার কৃত আসামি আমিনুর ইসলাম ও নাইমুল ইসলাম চোরাই ইজিবাইক সংরক্ষণ, ক্রয় ও অসাধুভাবে জ্ঞাতসারে চোরাই ইজিবাইক গোপন করার অপরাধের জড়িত বলে স্বীকার করলে আজ শনিবার ১৬ মার্চ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমলী আদালত, কেশবপুর, যশোর ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমলী আদালত, মনিরামপুর, যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয়। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।