মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় জমি বিক্রির উদ্দেশ্যে ব্যবসায়ীর কাছে থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসায়ীকেই ব্লাকমেইল করার অভিযোগ উঠেছে গোলাম মোস্তফা নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে । টাকা আত্মসাৎ করার অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন নাটকীয় মিথ্যা অভিযোগ করেছে প্রতারক গোলাম মোস্তফা। এমতাবস্থায় জীবনের নিরাপত্তানীতায় ভুগছে ব্যবসায়ী হাজী সোহরাব হোসেন। বিপাকে পড়ে ইতিমধ্যে প্রতারক গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন।
জানাগেছে, গোলাম মোস্তফা সাটুরিয়া উপজেলার চর সাটুরিয়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেনের আর গোলাম মোস্তফার বাড়ি পাশাপাশি হওয়া একে অপরের সাথে পূর্ব থেকে সুসম্পর্ক থাকায় গোলাম মোস্তফা তার নাবালক সন্তানের নামে থাকা ৮ শতাংশ জমি ৫৫ লক্ষ টাকা মূল্যে বিক্রির প্রস্তাব করেন। পরে জমি বিক্রি বাবদ ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেনের কাছ থেকে নগদ ৩৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নেন গোলাম মোস্তফা। টাকার প্রমাণ হিসেবে সাটুরিয়া শাখার ন্যাশনাল ব্যাংকের স্বাক্ষরিত একটি চেক দেন গোলাম মোস্তফা। জমি নাবালক সন্তানদের নামে থাকায় দলিল রেজিস্ট্রি করতে জটিলা সৃষ্টি হয়। এর সুযোগ পেয়ে গোলাম মোস্তফা সোহরাব হোসেনকে জমি লিখে দিতে তালবাহানা শুরু করেন। পরে ব্যবসায়ী নিরুপায় হয়ে চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারী গোলাম মোস্তফার দেয়া ব্যাংক চেক নিয়ে ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে এ্যকাউন্টে অপর্যাপ্ত তহবিল ( Insufficient fund) মন্তব্যে চেক ডিসঅনার হয়। ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন হতাশায় পড়ে ১৪ ফেব্রুয়ারী গোলাম মোস্তফাকে একটি ডিমান্ড নোটিশ পাঠান।
নোটিশ পেয়ে প্রতারক গোলাম মোস্তফা ব্যবসায়ী সোহরাবের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করে যাচ্ছে। নিরুপায় হয়ে ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, সোহরাব হোসেন একজন ভালো মনের মানুষ। তার সাথে গোলাম মোস্তফা সমাজের কিছু কুচক্রী মানুষ নিয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে। সোহরাব একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসাখাতে তার সুনাম রয়েছে। এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন বলেন, গোলাম মোস্তফা আমার কাছে জমি বিক্রির প্রস্তাব করেন। ৮ শতাংশ জমির দাম ৫৫ লক্ষ্য টাকা দাম নির্ধারণ করে চলতি বছরের ২৯ ডিসেম্বর ৫ লক্ষ্য ৫০ হাজার টাকা বায়না নেন। পরে ১১ ফ্রেব্রুয়ারী আবার ৩০ লক্ষ্য টাকা বায়না নেন। যেহেতু নাবালক সন্তানদের নামে জমির দলিল সে কারণে বায়না দলিল করতে ঝামেলা হবে। আমি গোলাম মোস্তফাকে বললাম টাকা যেহেতু নিবেন তাহলে প্রমাণ হিসেবে কিছু দেন। তখন গোলাম মোস্তফা আমাকে ২৯ ডিসেম্বর তারিখ উল্লেখ করে ৩৫ লক্ষ্য ৫০ হাজার টাকার স্বাক্ষরিত একটি ব্যাংক চেক দেন।
এর কয়েকদিন পর এক লোকের মাধ্যমে জানতে পারলাম গোলাম মোস্তফা আমাকে জমি দিবে না। অন্য লোকের কাছে থেকে ২১ লক্ষ্য টাকা বায়না নিয়ে প্রতারণা করে ৫ ফেব্রুয়ারী জমি বিক্রি করেছে। আমি জেনে হতভাগ হয়ে পড়ি। পরে দিশেহারা হয়ে ১২ ফেব্রুয়ারী তার দেয়া চেক নিয়ে ব্যাংকে যাই টাকা তুলতে। ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চেক ডিসঅনার করে দেন।
এরপর দিন জানতে পেলাম গোলাম মোস্তফা থানায় জিডি করতে গিয়েছে যে তার চেক বই হারানো গিয়েছে। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারী তিনি আরো ২টি লিখিত অভিযোগ করেন মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরাবর এবং সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। ইউএনও’র কাছে অভিযোগ করেন তার চেক রুপসী বাংলা নামের এক এনজিও অফিসে জমা ছিল। এবং পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগে বলেছে রুপসী বাংলা এনজিও অফিসে তার ঋণ পরিশোধ করতে গেলে তারা গড়িমসি করে। শুরু হয় গোলাম মোস্তফা চেক নাটক। আমাকে সমাজের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেন। এমতাবস্থায় আমি আমার পাওনা টাকাও পাচ্ছি না। অপরদিকে নিজের জীবনের নিরাপত্তায় ভুগছি। তিনি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সহযোগিতার দাবী জানান।