বিদ্যুৎ চন্দ্র বর্মন : বাংলাদেশ প্যারামেডিকেল ডাক্তার এসোসিয়েশন বিপিডিএ ১ অক্টোবর ২০০৬ সালে পল্লী, প্রাথমিক, প্যারামেডিক্স, ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত (যারা বিএমডিসি’র নিবন্ধিত নয়) দের নিয়ে কাজ করছে। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে এমওইউ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাক্টিসরত বিপিডিএ’র সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ, সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি, জীবন জীবিকার মান উন্নয়নে সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। সংগঠনের সদস্যগণ দীর্ঘদিন যাবৎ প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বল্প আয়ের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছে। বিপিডিএ’র সদস্যদের দক্ষ জনসম্পদে পরিণত করার লক্ষে ও গ্রাম অঞ্চলে দারিদ্র জনগোষ্ঠিকে ভুল চিকিৎসার হাত থেকে রক্ষা, এন্টিবায়োটিক, স্টেরয়েডের অপব্যবহার রোধ, রেফারেল সিস্টেম চালুর মাধ্যমে চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নকল্পে কাজ করলেও শতবাধা-বিপত্তি পেরিয়ে ১ অক্টোবর ২০১৮ সালে রংপুর বিভাগের বিপিডিএ’র সদস্যদের অর্থায়নে বিপিডিএ ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার ও মেজর ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোম প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।
দেশের সকল জেলা ও উপজেলার অন্তর্ভূক্ত সকল (চিকিৎসা বিষয়ক) পল্লী, প্রাথমিক, প্যারামেডিক্স, ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণ প্রাপ্তগণ যারা সর্বনিম্ন এসএসসি পাশসহ পেশাগত প্রশিক্ষণ সনদ আছে এবং বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগোনস্টিক ও ঔষধ কোম্পানীতে কর্মরত আছে তারা বিপিডিএ’র সদস্য হতে পারবেন। এক্ষেত্রে ১০০ টাকা মূল্যমানের বিপিডিএ’র নির্ধারিত ফরম পূরণ করে সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করা যাবে। আবেদন অনুমোদিত হইলে সংগঠনের রসিদ/বিকাশ/ব্যাংক একাউন্ট মূলে ১০৫০ (এক হাজার পঞ্চাশ) টাকা ভর্তি ফি বাবদ জমা দিলে সদস্য পদ লাভ করা যাবে। আবেদনের সাথে প্রশিক্ষণ সনদের ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ০৬ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি ও নমিনীর ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি প্রদান করতে হবে। সদস্য পদ লাভের পর বাৎসরিক ৫০০ (পাঁচশত) টাকা নবায়ন ফি ও তিন বছর পর পর উন্নয়ন ফি বাবদ ৭০০ (সাতশত) টাকা প্রদান করতে হবে।
বিঃ দ্রঃ ওয়েবসাইটে দেয়া ভর্তি ফরম ডাউনলোড করে পূরণ করা যাবে। সেক্ষেত্রে প্রার্থীকে ফরম বাবদ ১০০/- (একশত) টাকা ওয়েবসাইটে দেওয়া বিকাশ নম্বরে পাঠিয়ে একই নম্বরে ট্রানজেকশন আইডি দিয়ে এসএমএস মাধ্যমে কনফার্ম করতে হবে।
বিপিডিএ একটি পেশাজীবি সংগঠন। এই সংগঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হয়। যেমন: সদস্যদের আপদকালীন আর্থিক সহযোগিতা, বৃক্ষরোপন কর্মসূচী, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে গরীব-অসহায়দেরকে আর্থিক ও স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে সহযোগিতা করা এবং সরকারি যে কোন স্বেচ্ছাসেবী কর্মকান্ডে সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ করা। এছাড়াও বিপিডিএ হেল্থ এডুকেশন ট্রেনিং এন্ড টেকনোলজি লিমিটেড ও ডিজএ্যাবিলিটি হিউম্যান রাইটস ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন এর মাধ্যমে নারীদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ফাইলেরিয়া ও প্রতিবন্ধীসহ অঙ্গ হারানো লোকদের মানসিক বিকাশ ও পুনর্বাসনের লক্ষে হস্ত ও কুটিরশিল্প এবং সেলাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণেও কাজ করছে বিপিডিএ ও সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া এন্ড জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ল্যাব। এছাড়াও প্রত্যন্ত এলাকায় চিকিৎসা সেবা সুফল পৌঁছে দিতে নিয়মিত কাজ করছে ফাইলেরিয়া এন্ড জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ল্যাব’র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণসহ বিপিডিএ’র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশেষ টিম অতিদরিদ্র পরিবারকে ফাইলেরিয়াসিস সহ অন্যান্য রোগের ঔষধ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে।
বিপিডিএ দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় এমবিবিএস, বিডিএস, ডিএমএফ, মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ স্নাতক, স্নাতকোত্তর পাশ জনবল এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে একজন করে প্যারামেডিক্স ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। বেকারত্ব বিমোচন, বিশেষ করে নারীদের ক্ষমতায়ন, কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে
বিপিডিএ’র সদস্যগণ সরকারী নির্দেশনা মেনে নিয়মিত ‘টেলিমেডিসিন চিকিৎসায়’ যুক্ত থেকে নিরাপদে প্রাক্টিস করতে পারবেন। টেলিমেডিসিন চিকিৎসা প্রদানকালে আইনগত কোন বাঁধার সম্মুখীন হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ টেলিমেডিসিনের ব্যবহারে বিপিডিএ দেশের প্রথম অনুমোদিত একমাত্র পেশাজীবী সংগঠন, যা সরকার স্বীকৃত। তথাপিও প্রশাসনিক কোন হয়রানির শিকার হলে বিপিডিএ আইনগত সহযোগিতাসহ আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করবে ও সৃষ্ট হয়রানি মামলা সাংগঠনিক।