উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধি নিষেধে এসেছে কিছু পরিবর্তন

Uncategorized আইন ও আদালত জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন রাজনীতি সারাদেশ

স্কোয়াড্রন লীডার (অবঃ)সাদরুল আহমেদ খান, সদস্য অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপকমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।


বিজ্ঞাপন

 

বিশেষ প্রতিবেদন :  ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রোডম্যাপ অনুযায়ী দেশের ৪৮১টি উপজেলায় চারটি ধাপে ভোট গ্রহন করবে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে দুই ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ ৮ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১৬১টি উপজেলায় ভোট হবে ২১ মে এবং তৃতীয় ধাপে ১১২ টি উপজেলার ভোট হবে ২৯ মে। চতুর্থ ধাপের তফসিল এখনো ঘোষণা করা হয়নি।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০২৪ এর আচরণবিধিতে কিছু পরিবর্তন সাধন করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

প্রথম ধাপের উপজেলাসমূহে অনলাইনে প্রার্থীতা দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে কমিশন, আগে প্রার্থীরা রিটার্নীং বা সহকারী রিটার্নীং অফিসারের নিকট দল বল নিয়ে প্রার্থীতা জমা দিতেন।

এবার মনোনয়নপত্রে লিঙ্গ হিসেবে ‘হিজড়া’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ হিজড়ারা চাইলে হিজড়া পরিচয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। গত উপজেলা নির্বাচনে এই বিধান ছিল না, এবার তা সংযুক্ত করা হয়েছে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে এত দিন ২৫০ জন ভোটারের সমর্থনসূচক সই মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হতো। এবার সে বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে।

এত দিন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের জামানত হিসেবে ১০ হাজার টাকা জমা দিতে হতো। এবার দিতে হবে ১ লাখ টাকা। ভাইস চেয়ারম্যান পদে দিতে হবে ৭৫ হাজার টাকা। প্রার্থীরা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জামানত রক্ষায় আগে প্রদত্ত ভোটের এক–অষ্টমাংশ বা প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট পেলে জামানত রক্ষা হতো। এবার প্রার্থীদের পেতে হবে প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো পদে একাধিক প্রার্থী সমান ভোট পেলে আবার ভোট করার বিধান ছিল। এখানে এবার একাধিক প্রার্থী সমান ভোট পেলে ফলাফল নির্ধারণ করা হবে লটারিতে।

মনোনয়ন দাখিলে বাধা দেয়া, অবৈধভাবে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করা, নির্বাচন কর্মকর্তাকে অস্ত্র প্রদর্শন বা শারীরিক বল প্রয়োগ করা, স্বাভাবিক নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করা, করেন, ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করার ইত্যাদি অপরাধে দুই বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আনা হয়েছে আগে যা ছিল সর্বোচ্চ পঞ্চাশ হাজার টাকা বা এক বছর বা উভয় দন্ড।

২০০৮ সাল থেকে নির্বাচনী প্রচারে রঙিন পোস্টার করা বন্ধ ছিল। এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাদা–কালো বা রঙিন পোস্টার, ব্যানার করার বিধান আনা হয়েছে।তবে প্রচারের পোস্টার বা ব্যানারে পলিথিন ব্যবহার করা যাবে না।

এতোদিন প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারের সুযোগ পেতেন না। এবার সীমিত পরিসরে প্রচারের সুযোগ রাখা হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রার্থীরা সর্বোচ্চ পাঁচজন কর্মী–সমর্থক নিয়ে জনসংযোগ করতে পারবেন। প্রতীক বরাদ্দের আগে ডিজিটাল মাধ্যমেও প্রচার চালাতে পারবেন প্রার্থীরা।

নির্বাচনে প্রতি উপজেলায় একটির বেশি প্রধান নির্বাচনী ক্যাম্প বা কার্যালয় স্থাপন করতে পারবেন না প্রার্থীরা। প্রতি ইউনিয়নে একটি বা পৌরসভার প্রতি তিনটি ওয়ার্ডে একটি নির্বাচনী ক্যাম্প বা শাখা অফিসের করতে পারবেন। শাখা ক্যাম্প বা অফিসের হতে হবে আয়তন ৬০০ বর্গফুট এবং কেন্দ্রীয় ক্যাম্প বা কাযালয়ের আয়তন হবে সর্বোচ্চ ১২০০ বর্গফুট। আগে এই পরিমাপ ছিল ৪০০ বগফুট।

নির্বাচনী প্রচারণায় একটির বেশি মাইক বা জনসভায় চারটির বেশি মাইক ব্যবহার করা যাবে না বলে বলে নতুন বিধিনিষেধ এসেছে। শব্দদূষণ প্রতিরোধে শব্দবর্ধনকারী যন্ত্রের শব্দের মান মাত্রা ৬০ ডেসিবলের বেশি হতে পারবে না।

লেখক : স্কোয়াড্রন লীডার (অবঃ)সাদরুল আহমেদ খান, সদস্য অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপকমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *