“বিশেষ প্রতিবেদন “বেনাপোলের শ্রমিকদের খবর রাখেনি কেউ !

Uncategorized খুলনা গ্রাম বাংলার খবর বিশেষ প্রতিবেদন মানবিক খবর সারাদেশ

বেনাপোলে এসিডের মত পণ্য উঠা-নামার কাজ করতে হয় কোনো ধরণের নিরাপত্তা ছাড়াই। ছবি: মোঃ আসাদুজ্জামান আজকের দেশ বিশেষ প্রতিনিধি বেনাপোল।


বিজ্ঞাপন

 

মোঃ আসাদুজ্জামান (বেনাপোল) :  বেনাপোলের শ্রমিকদের খবর রাখেনি কেউ! বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ে বেনাপোল বন্দরে শ্রমিকদের বড় ভূমিকা থাকলেও তাদের জীবন মান উন্নয়নের খবর রাখেনি কেউ। নিরাপদে পণ্য খালাসের সরঞ্জাম টুকুও জোটেনা কপালে। একদিকে নায্য মজুরী থেকে বঞ্চিত, অন্যদিকে দূষিত পরিবেশে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আর নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বছর জুড়ে কাজ করতে হয় শ্রমিকদের।

জানা যায়, স্থলপথে ভারতের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্যে হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। আমদানির পরিমাণ বছরে ৪০ হাজার কোটি আর রফতানি ৮ হাজার কোটি টাকা। এই বন্দরে পণ্য খালাসের সঙ্গে জড়িত রয়েছে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক। বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের কেন্দ্র বন্দরটি। আর এ রাজস্ব আহরণে বড় ভূমিকা রাখছে বন্দর শ্রমিকরা। সপ্তাহে ৭ দিনে ২৪ ঘন্টা পণ্য খালাসের কাজ করতে হয় তাদের। নিরাপদ সরঞ্জামের অভাবে ভারি মালামাল থেকে শুরু করে এসিডের মত পণ্য উঠা-নামার কাজ করতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। পরিবেশ দূষনে স্বাস্থ্য ঝুঁকিও রয়েছে।

ভারী পণ্যের চাপায়,এসিডে পুড়ে জীবনও হারিয়েছেন কয়েকজন । কাজের নিরাপত্তায় হেলমেট আর হ্যান্ডস গ্লাভসের দাবি থাকলেও এপর্যন্ত সরবরাহ করেনি সংশ্লিষ্টরা। চিকিৎসা সেবায় নেই কোনো হাসপাতাল। নেই বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা।
বন্দর পরিদর্শনে এসে অনেকেই শ্রমিকদের ভাগ্যন্নোয়নে নানান প্রতিশ্রুতি দিলেও এ পর্যন্ত কথা রাখেনি কেউ, এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে শ্রমিকদের।

শ্রমিকরা জানান, ভারী পণ্য খালাসে নিরাপদ সরঞ্জাম মেলেনা। খালি হাতে এসিড ও হেলমেট ছাড়া পাথর খালাস করতে হয়। কাজের স্বার্থে নায্য অধিকার থেকেও হতে হয় বঞ্চিত।

বেনাপোল হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন (৯২৫) এর সাধারণ সম্পাদক অহিদুজ্জামান ওহিদ জানান, বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি পণ্য উঠা-নামানোর কাজে ৯২৫ ও ৮৯১ দুটি শ্রমিক ইউনিয়নের অধিনে প্রায় ২ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে বন্দর শ্রমিকদের ভূমিকা বেশি। তাদের অধিকার বাস্তবায়নে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামছুর রহমান জানান, শ্রমিকদের নায্য দাবি-দাওয়া পূরণে সংশ্লিষ্টদের আরো আন্তরিক হতে হবে। তাদের জীবন মানের দিকটি খুব ভালো করে দেখা প্রয়োজন। একজন শ্রমিকও যাতে কোনো ধরণের অনিশ্চয়তায় না ভুগে এই বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক রেজাউল করিম জানান, ইতিমধ্যে শ্রমিকদের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও বিশ্রামের ব্যবস্থা করা গেছে। বন্দরে শ্রমিকসহ সর্বসাধারনের জন্য একটি হাসপাতাল ও স্কুল তৈরির জন্য জায়গা অধিগ্রহনে কাজ চলমান আছে। পর্যায়ক্রমে তাদের সব অনিশ্চয়তা দূর করা হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *