একে একে খুলছে এমপি আনার হত্যা রহস্যের সব জট

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক  : বাংলাদেশের কোন এমপির পাশের দেশ ভারতে গিয়ে এমন খুনের ঘটনা নজির বিহীন। দ্বন্দ্বের জেরে বিশ্বস্ত বন্ধুই ছোবল মারলো বন্ধুকে। লাস টুকরো টুকরো করে গায়েব করা হয়েছে শরীরের এক একটি অখন্ডাংশ। এমনভাবে সরিয়ে বলা হয়েছে যা খুঁজে পাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। ঝিনাইদহ ৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের লোমহর্ষক হত্যার কাহিনী এখন টক অব দ্যা কান্ট্রি। পাশের দেশ ভারতে চিকিৎসার জন্য যাওয়া বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যকে ভারতে কেন হত্যা করা হবে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে নানা সন্দেহ।


বিজ্ঞাপন

কোথায় গেল লাশ : লাশ এখনো না মিললেও কলকাতায় বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার যে খুন হয়েছেন তা বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের কর্মকর্তাদের তরফেই বলা হচ্ছে। গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে মাত্র আধা ঘণ্টায় কিলিং স্কয়ারমিশন সম্পন্ন করা হয়,মেরে ফেলা হয় শ্বাস রোধ করে। এরপর লাশ অসংখ্য খন্ড খন্ড করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়। যার হদিস মেলা দুষ্কর। খন্ডিত মরদেহ সম্ভাবনা যে কম তা গ্রেফতারকৃত আসামিরাও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী কলকাতা ট্রিপলেক্স ফ্লাটে খুনের পর লাশ টুকরো করে হলুদ আর মসলা দিয়ে মেখে সরানো হয় ট্রলিতে। আর এ কারণেই মরদেহ উদ্ধারের সম্ভাবনাও কম। এরপরও লাশের কিছু টুকরো উদ্ধারের আপ্রাণ চেষ্টায় দুদেশের গোয়েন্দা সংস্থা।


বিজ্ঞাপন

বন্ধুর কষা ছকে ফাঁসলো এমপি আনার :  ১২ই মে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে কলকাতায় যাওয়া পর থেকে এম পি আনোয়ারুল আজিমের নিরুদ্দেশ হওয়ার ব্যাপারে জট বাঁধতে থাকে সন্দেহ। এ বিষয় বিভিন্ন প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আলোচনায় আসে। একজন সংসদ সদস্য কেন সঙ্গীহীনভাবে ভারতে এলেন? তার সঙ্গে কেন একটি হ্যান্ডব্যাগ ছিলো? সীমান্ত অতিক্রম করার সময় কে ধারণ করলো এই এক মিনিটের ভিডিও? কার গাড়িতে বরানগর থেকে উঠে এলো এমপি আনার? ফোনে কথা না বলে যে খুদে বার্তা দিলেন সেটা কি আদৌ তার লেখা? ৮ দিন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর মাত্র দুদিন মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাক করা সম্ভব হয়। পরে হঠাৎ কেন ট্রাক করা সম্ভব হয়নি? চলমান নির্বাচনের সময় হঠাৎ কেন ভারতে এসেছিলেন এমপি?

কেন ভারতে হত্যা :  গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ঝিনাইদহ ৪ আসনের সংসদ সদস্য আনারুল আজিম আনার। এজন্য গত ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে কলকাতার সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। সেই স্বর্ণ চোরাচরনের আন্ত:দেশের কোন্দলের জেরে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়। এজন্য পাতা হয়েছিল নারী দিয়ে ভয়ংকর ফাঁদ, সন্দেহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। আর সেখানেই হানি ট্র্যাপের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয় তরুণী শিলাস্তি রহমানকে। জানা যায় এই নারী, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহিনের বান্ধবী। ভারত আসা যাওয়ার সুবাদে সেখানে খুন করতে নেওয়া হয় সঞ্জীভা গার্ডেনের ওই ফ্লাটে। আর সেখানেই তাকে হত্যা করা হয়। এজন্য দু-তিন মাস আগে থেকেই পরিকল্পনার ছক করা হয়।

এমনকি হত্যার মূল হোতা আখতারুজ্জামান শাহিনের বাংলাদেশের গুলশান ও বসুন্ধরার দুটি ফ্ল্যাটে এ নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করা হয়।পরিকল্পনা মোতাবেক মূল হত্যাকারী শিমুল ভুইয়া,তার সহযোগী তানভীর ভূঁইয়া এবং শাহিনের গার্লফ্রেন্ড শিলাস্তি রহমান এপ্রিলের তিন তারিখ কলকাতায় যান। কত সন্ত্রাসী শিমুল দিয়া মূল হত্যাকারী হলেও তিনি আমানউল্লাহ আমান নামে নতুন একটি পাসপোর্ট করে ভারতে যান। ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে হত্যার পরিকল্পনা করে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীন, তিনি এমপি আনারের বাল্যবন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার। ঘটনার পরপরই গাঁ ঢাকা দিয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *