!!  সড়ক ও জনপদের সিবিএ নেতা ফারুকের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই !!  ধর্ষণ, গর্ভপাত, বিয়ে, নির্যাতন, অবশেষে একতরফা তালাক!!!

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের কার্যসহকারী আকতার ফারুক


বিজ্ঞাপন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের কার্যসহকারী আকতার ফারুক। সংস্থার কল্যাণপুর শাখায় তিনি চাকরি করেন। তিনি সংস্থাটির কর্মচারীদের একটি অংশের ট্রেড ইউনিয়ন সিবিএর যুগ্ম সম্পাদক। কয়েক মাস পর অবসরে যাবেন তিনি। বছর পাঁচেক আগে মিরপুর মাজার শরীফে আকতার ফারুকের সঙ্গে পরিচয় হয় ঈশিতার। নানা ধরনের আলাপচারিতায় ধীরে ধীরে সম্পর্ক গভীর হয় তাদের।


বিজ্ঞাপন

পরবর্তীতে ঈশিতার পরিবারের সাথেও ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে আক্তার ফারুকের । প্রায়ই ঈশিতার মায়ের হাতে টাকা দিতেন ফারুক। ঈশিতাকেও বিভিন্ন উপহার দিতেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে সিবিএ নেতা হিসেবে তাঁর ক্ষমতার কথাও বলতেন।

সেই সুবাদে ঈশিতার বাসায় আসা-যাওয়া করতেন আকতার ফারুক। ইসিতার অভিযোগ, ২০১৯ সালের শেষের দিকে বাসায় একা পেয়ে তাঁকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন ফারুক। এরপর ঢাকা থেকে গ্রামে ফিরে গেলে ফারুক মুঠোফোনে নিয়মিত কল করতেন ঈশিতার কাছে। গ্রামে ফেরার (২০২০ সালে) দু-তিন মাসের মধ্যে তাঁর গর্ভধারণের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। ঈশিতার মা তাকে প্রচণ্ড মারধর করলে মায়ের কাছে সব ঘটনা খুলে বলেন ঈশিতা। এরপর ঈশিতার মা ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তিনি তাঁদের ঢাকায় চলে আসতে বলেন।

ফারুকের উপস্থিতিতে ঢাকার শ্যামলীতে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ঈশিতার গর্ভপাত করানো হয়। এ সময় ফারুক ধর্ষণের ঘটনার জন্য ঈশিতা ও তাঁর মায়ের কাছে ক্ষমা চান বলেও জানান ভুক্তভোগী তরুণী। এরপরে পূর্বের এলাকা থেকে বাসা ছেড়ে দিয়ে মিরপুরে বাসা ভাড়া নেয় ঈশিতা ও তার পরিবার। এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেলে পুনরায় বিয়ের কথা বলে ভুক্তভোগীর সঙ্গে মেলামেশা শুরু করেন ফারুক। তবে বিয়ে নিয়ে নানা অজুহাতে টালবাহানা করছিলেন ফারুক। প্রথম স্ত্রী আছে তাই নিবন্ধন ছাড়া কলেমা পড়ে বিয়ে করতে চান ফারুক। এছাড়াও তিনি বলতেন, তার সরকারি চাকরি, জানাজানি হলে তাঁর চাকরির সমস্যা হবে।তবে ঈশিতা আবারও গর্ভধারণ করলে,ফারুক ঈশিতাকে নিয়ে ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে যান গর্ভপাতের জন্য।

কিন্তু,চিকিৎসক ভুক্তভোগীর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় গর্ভপাত করাতে রাজি হননি। চিকিৎসক নৈতিক কিছু কথাও বলেন, যা শুনে ঈশিতা সন্তান জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি তিনি অস্ত্রোপচারের (সিজার) মাধ্যমে ছেলেসন্তানের জন্ম দেন ঈশিতা। সিজারের সময় হাসপাতালের চুক্তিপত্রে সন্তানের বাবা হিসেবেও স্বাক্ষর করেন আকতার ফারুক। এরপর কিছুদিন খোঁজখবর রাখলেও পরে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন ফারুক। এই নিয়ে নানা কলহে ফারুক ঈশিতার বড় বোনের বাসায় এসে ঈশিতাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন এবং তাঁর সন্তানকেও মেরে ফেলার চেষ্টা করেন।

তখন বিয়ের কোনো কাবিননামা না থাকলেও ফারুক তাঁকে তালাকের নোটিশ পাঠায়। ঈশিতা তালাকের নোটিশ পেয়ে বিষয়টি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নানকে মৌখিকভাবে অবহিত করেন। কাউন্সিলর ভুক্তভোগী থেকে পুরো ঘটনা শুনে স্থানীয় এমপির কাছে মেয়েটিকে পাঠিয়ে দেন এবং তিনি নিজেও ফোন করে এমপি মহোদয়কে পুরো ঘটনার বিস্তারিত জানান।

জানা যায়, ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. মাইনুল হোসেন খাঁন নিখিল ঈশিতা ও আকতার ফারুকের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা যাচাই বাছাই করে নিশ্চিত হন যে, ঈশিতা ও ফারুকের বিয়ের কোন নিবন্ধন করা নেই। তাই তিনি তার অফিসেই ২০২৪ সালের ১৮ মার্চ (৫ই রমজান) কাজী ডেকে বিয়ে পড়ানোর ব্যবস্থা করেন।

এমপির অফিসে শরীয়ত মোতাবেক ৫ লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হলেও বেশিদিন সংসার করা জোটেনি ঈশিতার কপালে।ফারুক বিয়ের পর থেকেই নানা অজুহাতে ভুক্তভোগী কে শারীরিক মানসিক নির্যাতন করতেন বলেও জানায় ঈশিতা ।

গত ২০ এপ্রিল সোমবার বিকেলে মিরপুর পাইকপাড়ার সড়ক গবেষণাগারে ফারুকের প্রথম স্ত্রী যেখানে থাকেন, সেখানে ঈশিতাকে মুঠোফোনে ডাকেন আক্তার ফারুক। ওই এলাকায় পৌঁছালে ভুক্তভোগীকে রাস্তা থেকেই মারধোর শুরু করেন ফারুকের প্রথম স্ত্রী মাকসুদা মল্লিকা তার ছেলে শান্ত, মেয়ে কলি ও ফারুকের পালিত মেয়ে বিজলী।

তাদের অমানুষিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী মাটিতে পড়ে গেলে তারা তার চুল ধরে টেনে-হিছড়ে বাসার ভিতরে নিয়েও অমানুষিক নির্যাতন করে বলেও জানা যায়। এ সময় ঈশিতা নির্যাতন সইতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে যায়। ঘন্টা দুইয়েক পরে তার জ্ঞান ফিরে আসে। এদিকে এই সুযোগে আকতার ফারুকের প্রথম স্ত্রী মাকসুদা মল্লিকা ৯৯৯ ফোন করে কৌশলে ঘটনাস্থলে পুলিশ নিয়ে আসেন। পুলিশের উপস্থিতিতে ঈশিতাকে ফারুক একটি ডিভোর্স লেটার হাতে ধরিয়ে দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।

আরও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওইদিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন মিরপুর মডেল থানায় কর্মরত পুলিশের এস আই সিদ্দিকুর রহমান ও তার টিম। ঘটনা শুনে প্রথমে ফারুক ও তার পরিবারের উপর চোটপাট করলেও পরক্ষণে কোন এক অজ্ঞাত কারণে ভুক্তভোগীকে কোনরকম সহযোগিতা করেননি এস আই সিদ্দিকুর রহমান। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্যের দ্বারস্থ হয়ে মারধোর ও নির্মম -নির্যাতনের ঘটনা খুলে বললে, আইনের সহায়তা নিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেন তিনি ।

এ বিষয়ে এসআই সিদ্দিক গণমাধ্যম কে  বলেন, ৯৯৯ এর মাধ্যমে অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে আসি, এবং মারধরের ঘটনায় যে ঘটেছে এটা সত্যি। তিনি আরও বলেন উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরেরদিন মিরপুর মডেল থানায় ঈশিতা নিজে বাদী হয়ে একটি মারামারির মামলা দিয়েছেন, (যাহার মামলা নং ৪১, তারিখ ২২/০৫/২০২৪,)  এবং আইও আইও এস আই মারুফ।

এছাড়া মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার বিষয়ে জানতে,সিবিএ নেতা আকতার ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যম কে  বলেন, এবছরের মার্চ মাসের ১৮ তারিখ ঢাকা ১৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মাইনুল হোসেন খান নিখিল তার অফিসে কাজী ডেকে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন করেন। কিন্ত আমার দ্বিতীয় স্ত্রী ঈশিতা বিভিন্ন যায়গায় আমার বিরুদ্ধে নানা কু-রুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলে বেড়ায়। বিভিন্ন সময় মারধর ও নির্যাতনের বিষয় তিনি বলেন, চলতি মাসের ১৯ তারিখে ঈশিতা আমার বাসায় হামলা চালায়। তখন আমার বাসায় তার সাথে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। যার ফলে আমার প্রথম স্ত্রী ৯৯৯ ফোন করে পুলিশ নিয়ে আসে। আপনার বাসায় হামলা হলে তো আপনিসহ আপনার পরিবার আহত হওয়ার কথা ছিলো? এবং তার বিরুদ্ধে আপনার আইনী ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ ছিলো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

২০১৯ সালের শেষের দিকে বাসায় একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ তার প্রথম সন্তান গর্ভ অবস্থায় নষ্ট করা হয়েছে করা হয়েছে! এ বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। তবে কাগজপত্র ছাড়া বিয়ে করে পরবর্তী সন্তান জন্ম দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন আকতার ফারুক।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *