নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাগল কাণ্ডে এনবিআরের সদস্য মতিউরের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি দেশজুড়ে অলোচিত হলেও কাস্টমস কর্মকর্তা তাজুলের বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে আছে। আজ থেকে আড়াই বছর আগে তাজুল পরিবারের শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ নিয়ে ঢাকা প্রতিদিনসহ একাধিক দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়। দুদক এনবিআর ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগও দায়ের করা হয়।
কিন্তু রহস্যজনক কারণে সরকারের কোনো দপ্তরই বিষয়টি আমলে নেয়নি। রাজশাহীতে শাস্তিমুলক বদলি করা হলেও তিনি তদবিরের জোরে ঢাকায়ই থেকে যান। সরকারি চাকরিজীবী হয়েও এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণসহ বিপুল দান খয়রাত করে রাতারাতি আলোচনায় এসেছেন তিনি। দেশে তাজুল -মতিউরের সংখ্যা কয়েকশ’ ছাড়িয়ে যাবে বলে সচেতন মহলের ধারণা।
দুর্নীতির মাধ্যমে শত কোটি টাকার মালিক এই কাস্টমস কর্মকর্তা ড. তাজুল ইসলাম কলেজসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের দাতা সদস্য হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছেন। এমনই একটি ফেসবুক পোস্টে আয়ের উৎস জানতে চেয়ে মন্তব্য করায় তার সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রাণনাশের হুমকিতে চার মাস যাবত বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। তদন্তপূর্বক তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রদানে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার বাসিন্দা ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান খান।
শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তিনি।
লিখিত বক্তব্যে মেহেদী হাসান খান জানান, সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাকে ও তার পিতা নায়েব আলী খানকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। তার হুমকির শিকার হয়েছেন আরো একাধিক ব্যক্তি। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করার পর তাজুল ইসলাম নোঙ্গর কমিউনিটি সেন্টার ও তার গ্রামের বাড়ীতে গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে ৭০ জনের মত সন্ত্রাসী পাঠায়।
পরে তিনি ফোনে যোগাযোগ করে জানান, সেতো সরকারি ফান্ডের টাকা লুটপাট করে ফুলবাড়ীয়ায় আনছে, লোকজনের চাকুরি দিচ্ছে। সেতো আমাদের টাকা লুটপাট করছে না। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বললে প্রাণে মেরে ফেলার ও কমিউনিটি সেন্টারে তালা মারার হুমকি দেয়। পরে জোবায়ের রহমান তৌহিদ নামের এক সন্ত্রাসীও পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এছাড়াও তাজুল ইসলাম স্বশরীরে ৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে কোনো কথা বললে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসেন।
তিনি আরও জানান, ড. তাজুল সরকারি চাকুরীজীবি হয়েও প্রকাশে বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশ ও মিটিংয়ে নিয়মিত অংশগ্রহণ করছেন। যা সরকারি চাকুরি বিধি অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে লাখ লাখ টাকা ডোনেশন দেন। কিন্তু একজন সরকারি চাকুরিজীবীর এতো টাকা বেতন না হলে এই টাকা তিনি কোথা থেকে আনছেন। ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে দুই’শ কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা করেছে দুদক। ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য থাকাকালীন ভর্তি বাণিজ্যে জড়িত থাকায় তাকে সেখান থেকে বহিস্কার করা হয়েছিলো।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে। সেসব তদন্ত পূর্বক তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জোড় দাবি জানান ভুক্তভোগী।
এদিকে, সংবাদ সম্মেলনের আগে ও পরে তাজুলের গুণ্ডাবাহিনীকে ডিআরইউ এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। এর মধ্যে ছিলেন সাবেক ছাত্রদল নেতা জাহাঙ্গীর ও কথিত সাংবাদিক আকবর আলী। এক পর্যায়ে কথিত সাংবাদিক আকবর আলী সংবাদ সম্মেলন চলাকালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে উপস্থিত সাংবাদিকগনের ধাওয়া খেয়ে দ্রুত সংবাদ সম্মেলন স্থল ত্যাগ করেন ।
তবে উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন সাংবাদিক এর বক্তব্য টা ছিলো এমন ” এটি একটি বিতর্কিত সংবাদ সম্মেলন। আমি সেখানে ছিলাম।
সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তার কোন প্রমান ভুক্তভোগী পরচয়দানকারী জনাব দিতে পারেননি।
এমনকি উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব তিনি সঠিক করে বলতে পারেননি। এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের তোপের মুখে পরে সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন। কারো পেইড এজেন্ট হয়ে হয়তো তিনি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
অপর এক সাংবাদিক মন্তব্য করেন যে, ” সকালে খুব আসা নিয়ে গিয়েছিলাম হয়তো ২য় কোন বেনজির বা মতি ভাইয়ের তথ্য ফাস হবে। তবে গিয়ে দেখি চাউর রয়েছে, জানতে পেরেছি, লোকজন বলছে এমন সব তথ্য তিনি সম্মেলনে দেন। সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য প্রমান উপস্থাপন করতে পারেননি