৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খোকনের ফুটপাথে চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির  অভিযোগ

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন


বিজ্ঞাপন

 

 

মোস্তাফিজুর রহমান  :  ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকনের ফুটপাথে চাঁদাবজি ও দুর্নীতির অভিযোগসহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা । রায়ের বাজার কবরস্থানের গলিসহ বিভিন্ন যায়গায় ফুটপাতে চাঁদা তুলেছেন চেনা পরিচিত মুখ। তাদের ভঁযে সাধারণ জনগণ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা। রাস্তায় চলাচলের জন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের বিড়ম্বনা নিয়ে যাতায়াত করতে হয়।


বিজ্ঞাপন

একদিকে ফুটপাথের চাঁদাবাজ অন্যদিকে মাদক কারবারী ও কি্শোরগ্যাংয়ের বড় একটি অংশ বাধার সম্মূখীন হয়ে দাড়িযেছে। রক্ষক ভক্ষক হলে বিচার দেওয়ার যায়গা থাকেনা। মানুষের কল্যাণে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এগিয়ে আসার কথা থাকলেও উল্টো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন তাঁরা । এ কাউন্সিলরের বলয়ে গড়ে ওঠা মাদক ব্যবসায়ীসহ কিশোরগ্যাংরা নানা অপরাধে জড়িযে সাধারণ মানুষের ক্ষতি করলে বিচার চেয়েও কোনো প্রতিকার মেলেনা। কাউন্সিলরের ইশারায় সব কিছু হচ্ছে। আবার বিচার দিয়ে উল্টো অপমানিত হয়ে ফিরে আসার প্রমাণ রযেছে এলাকায়। সরকারি দলের একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,কাউন্সিলর যা করেছেন তা দলের জন্য কাম্য নয়। সে ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছেন। এখানে চাঁদাবাজ মাদক ব্যবসায়ী মাদক সেবি কিশোরগ্যাংদের উৎপাতে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। আমরা এর একটি প্রতিকার চাই। আপনারা লেখেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে।

জানা গেছে ৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসে বিচার চাইলে সম্মান নিয়ে ফিরে আসা যায় না। এই হলো রায়ের বাজার ৩৪ নং ওয়ার্ডের প্রতিদিনের রুটিন। ফুটপাতে মোবাইল কোর্ট হয়, কাউন্সিলর এর ইচ্ছে অনুযায়ী। তিনি চাইলে, তার অফিসে যোগাযোগের মাধ্যমে দাবীকৃত টাকা জমা দিলে আপনার দোকান রাস্তার মাঝে হলেও উচ্ছেদ হবে না। কিশোর গ্যাং আপনার বাড়ীতে আক্রমন করবে না, কবরস্থানে কবরের জন্য ঘাস, ফুল, পানি, বাঁশ সিরিয়াল পাইতে আপনাকে অতিরিক্ত পাঁচ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে, টাকা দিতে না পারলে আপনার জন্য কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে। রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে অঘোষিত মালিক কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকনের ভাই যুবদল নেতা শাকিল ।

ফুটপাতের চাঁদা উঠায় এবং কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করেন এপিএস ওয়ালটন । পাল সমিতির জমি দখল করে আছেন কাউন্সিলর নিজেই। ৩৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এখন বিরোধী দলে, কাউন্সিলর বিএনপিতে থাকাকালীন আওয়ামী লীগারদের দ্বারা কিছুটা প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিলেন। আজ কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন খোকন রাজনৈতিক প্রতিশোধ নিচ্ছেন।

কাউন্সিলরের এসব অপকর্মের বিষয় জানতে চাইলে ৩৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল আলম অপরাধ বিচিত্রাকে বলেন, আদর্শহীন দল ছুটো নের্তৃত্ব কখনো দলের সুনাম রক্ষার দায়ীত্ব পালন করবে না। তারা টাকার জন্য দল বদল করে। আমাদের ভাগ্যে আরও কি পরিণতি অপেক্ষা করছে জানিনা।

আমারা এখন অভিভাবকহীন অবস্থায় বসবাস করছি। বিচার দেওয়ার জায়গা নাই। এই সমস্ত নোংরা বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। এলাকা ঘুরে দেখা গেলো শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রক্তে ভেজা বটগাছটিকে গলাটিপে হত্যা করা হচ্ছে। অবৈধ দখলদারিত্বে কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন নিজেই বাড়ী করে আছেন, অথচ এই বটগাছের উপরে নিষেধাজ্ঞা আছে। মোহাম্মদপুর থানায় জিডি করা আছে। আইনের লোক হয়ে, আইন কে অভজ্ঞার নজির স্থাপন করেছেন ৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন আমার ৫০ বছর রাজনৈতিক জীবন এই অরাজকতা  দেখিনি। আওয়ামীলীগ একটি সুসংগঠিত দল, এই দলে যে সম্মান পেয়েছি আদর্শের নজির দেখেছি, এখন মনে হয় কল্পনা। আমি এখন চিনতে পারি না, আচরণে বুঝবার উপায় নাই এই ছেলেরা আওয়ামী রাজনীতির অংশ। বাঙালি জাতীয়তাবাদে ছুঁয়া নাই, রাজনৈতিক আদর্শ, সালাম কালামের বালাই নাই। কাউন্সিলর অফিস এখন কিশোর গ্যাং এর আড্ডা খানা বলতে পারেন। মিছিল অস্ত্র থাকে, নিজেরা নিজেরা মারামারি করে। ভয় লাগে মিছিলে যাইতে। দল ছাড়তে পারি না বলে একা একা যাই। ফুটপাতের দোকানদার আবুল বলেন, প্রতিদিন তিনশত করে টাকা দিচ্ছি, টাকা কোথায় যায় বলতে পারবো না।

কবরস্থানে সামনের দোকান কেনো ভাঙ্গা হলো না, এমন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারলেন না ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ কারী দল নেতা। শুধু বললেন কাউন্সিলর খোকন যা দেখিয়েছেন, যা বলেছেন আমরা তাই করেছি। কবর রক্ষণাবেক্ষণের দায়ীত্বে থাকা একজন মালির কাছে প্রশ্ন করা হয়, পাঁচ হাজার টাকা চাইলেন কেনো ?

সোজা উত্তর, আমরা কাজ করি বেতন পাই। টাকার কথা বলতে পারবেন কাউন্সিলরের ভাই। সারাদিন ৩৪ নং ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, নাগরিক সুবিধার বালাই নাই যন্ত্রণার শেষ নাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ছুঁয়া থেকে বঞ্চিত এই ওয়ার্ড, মনে হয়েছে কোনো গুহা। পার্ক আছে কিন্তু ব্যবহারের উপযোগী নয়, রাস্তা আছে কিন্তু সেই রাস্তা দিয়ে হেটে গেলে, পেটের বাচ্চা মরে যাবে। রাস্তা দিয়ে চলাচলের উপযোগী নয়।

স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে কাউন্সিলর খোকন এতই বেপরোয়া তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে শুরু হয় স্টিমরোলার অমানবিক নির্যাতন । যে কারণে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। রায়ের বাজার বসবাসকারীরা খোকনের কাছে জিম্মি।

এসব অনিয়মের বিষয় জানতে চাইলে ৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন গণমাধ্যম কে জানান, ,রাজনীতি করলে অভিযোগ থাকবে। সবার মন জয় করা যায়না। পক্ষে বিপক্ষের লোক থাকবে,কেননা আমার বিরুদ্ধে আমার দলের একটি অংশ অপপ্রচার চালায়। আপনি তো দলছুট নেতা বিএনপি থেকে আওয়ামীলীগে যোগদান করছেন আপনার দলের সাথে মিলতে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হবে। এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিবেদককে বলেন,শতভাগ সফল রাজনীতি কেউ করতে পানেনা। আমি কেন কেউ পারবেনা। তাহলে চাঁদাবাজি বন্ধ করবেন কিনা এমন প্রশ্নের কোনো সদত্তর দিতে পারেনি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *