নিজস্ব প্রতিবেদক : মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসগুলোর (এমএফএস) তথ্য ভা-ার থেকে আর্থিক লেনদেনের রিয়েল টাইম তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কৌশল নির্ধারণের জন্য মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এমএফএস নির্বাহীদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দুদকের মহাপরিচালক (মানিলন্ডারিং) আ ন ম আল ফিরোজ।
সভার শুরুতেই দুদক মহাপরিচালক দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের নির্দেশনা উদ্ধৃতি করে জানান, দুদকের গোয়েন্দা ইউনিট জানিয়েছে, একটি সরকারি দফতরের এক কর্মকর্তা মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে ঘুষের টাকা গ্রহণ করেছেন। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট দুদকে কোনো সন্দেহজনক লেনদেনের রিপোর্ট (এসটিআর) করেনি। বিষয়টি উদ্বেগজনক।
দুদক মহাপিরচালক বলেন, যেকোনো সরকারি কর্মকর্তা যদি সন্দেহজনক লেনদেনে সম্পৃক্ত থাকেন তা অবশ্যই দুদককে জানাতে হবে। তিনি আরও বলেন, গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলারের মাধ্যমে এমএফএস একাউন্টের সকল ধরনের ক্যাশ ইন/ক্যাশ আউটের ডিজিটাল মানি রিসিটের বিস্তারিত তথ্য দুদকের অনুসন্ধান বা তদন্তের প্রয়োজনে সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে।
একই সার্কুলারের মাধ্যমে এমএফএসসমূহের গ্রাহক এবং লেনদেনের তথ্য ভা-ার থেকে দুদককে রিয়েল টাইম তথ্য প্রদানের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়েছে এবং একাধিক একাউন্টের মাধ্যমে অস্বাভাবিক লেনদেনরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়েও পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া দুদক আইন,২০০৪-এর মাধ্যমেও এ জাতীয় তথ্য পাওয়ার আইনি অধিকার দুদকের রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-এর প্রতিনিধি মো. আজমল হোসেন জানান, ঘুষ সংক্রান্ত কোনো এসটিআর থাকলে তা অবশ্যই দুদককে জানানো হবে। এখন থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের যেকোনো সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পেলে দুদককে জানানো হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, সম্প্রতি একজন সরকারি কর্মকর্তার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য তারা দুদককে জানিয়েছেন।
দুদক মহাপরিচালক আ ন ম আল ফিরোজ বলেন, এমএফএস প্রতিষ্ঠানসমূহের নিজস্ব ডাটাবেজ থেকে অ্যাপ্লিকেশন ইন্টারফেসের মাধ্যমে গ্রাহক লেনদেনের তথ্য দুদকে দিতে হবে। এসব মাধ্যমে যেসব ঘুষের লেনদেন হচ্ছে তা নিয়ন্ত্রণে দুদক আইনি দায়িত্ব পালন করবে। দুদক অর্থের গতিবিধি অনুসরণ করবে। ব্যক্তির অবস্থান চিহ্নিত করে, অপরাধীদের আইন-আমলে নিয়ে আসবে।
এসময় নগদের প্রতিনিধি মো. সাফায়েত আলম দুদককে এ জাতীয় তথ্য প্রদানে তাদের সম্মতির কথা জানান। বিকাশ এবং রকেটের প্রতিনিধি জানান ইতোমধ্যেই দুদককে তথ্য প্রদানের জন্য তারা ফোকালপয়েন্ট কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন। দুদক যেকোনো তথ্য চাইলেই তারা তা এখনই দিতে পারেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদকের মানিলন্ডারিং অনুবিভাগের পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী, দুদকের ফোকালপয়েন্ট কর্মকর্তা ও সিস্টেম এনালিস্ট রাজীব হাসান, রকেটের এসইভিপি আবেদুর রহমান সিকদার, ডাকবিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোঃ হারুনুর রশীদ প্রমুখ।