কুমিল্লাবাসীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই :  নবাগত পুলিশ সুপার

Uncategorized আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

তাপস চন্দ্র সরকার, (কুমিল্লা) :  কুমিল্লার কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন সদ্য যোগদানকৃত পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম। বুধবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই মতবিনিময় সভায় কুমিল্লায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা জেলা নানান সমস্যা পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন।


বিজ্ঞাপন

সভায় জেলার আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নসহ নাগরিকদের শান্তিতে রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন নবাগত পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম। তিনি কুমিল্লাবাসীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদক এবং কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে জোরালো ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।


বিজ্ঞাপন

ওই সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মংনেথোয়াই মারমা, খন্দকার আশফাকুজ্জামান, কাজী মো. মতিউল ইসলাম, মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি রাজেশ বড়ুয়াসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন মোঃ সাইদুল ইসলাম। তিনি পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালন শেষে কুমিল্লার পুলিশ সুপারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

জানা গেছে সদ্য যোগদানকৃত পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম ২৫তম বিসিএস (পুলিশ) এর মাধ্যমে ২০০৬ সালে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, রাজশাহীতে মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে তিনি সর্বপ্রথম র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে (র‌্যাব-৫) পদায়ন লাভ করেন। তারপর র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামে আড়াই বছর কর্মরত ছিলেন। পরে বরিশাল জেলার গৌরনদী সার্কেল ও ঠাকুরগাঁও সদর সার্কেলের এএসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পরবর্তীতে তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি লাভ করে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আইভরি কোস্টে দায়িত্ব পালন করেন। শান্তিরক্ষা মিশন সম্পন্ন করে তিনি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) নিযুক্ত হন। পরবর্তীকালে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে পদায়ন লাভ করেন। বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই ইউনিটে তিনি টানা দীর্ঘ ৭ বছরের অধিক সময় সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন।

এ সময় তিনি এডিসি হিসেবে গুলশান ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশন বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও মতিঝিল ডিভিশনে ট্রাফিকের এডিসি, ওয়ারী ডিভিশনে ট্রাফিকের ডিসি হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের অনির্বাণ চেতনায় উদ্ভাসিত এই পুলিশ কর্মকর্তা প্রতিটি কর্মস্থলেই দেশপ্রেম, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে প্রশংসিত হন।

সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট থেকে তিনি দক্ষিণবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ জনপদ পটুয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দুই বছর সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। গত ৯ জুলাই তিনি কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।

কর্মজীবনে অসাধারণ কর্মদক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ এই চৌকস কর্মকর্তা বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বিপিএম, পিপিএম ও একাধিকবার আইজিপি ব্যাজ অর্জন করেন।

উল্লেখ্য, সদ্য যোগদানকৃত পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে সততা, কর্মদক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও সেবাগ্রহীতাদের সাথে উত্তম ব্যবহারসহ সার্বিক কর্মকান্ড বিবেচনায় জাতীয় শুদ্ধাচার পুরষ্কারে ভূষিত হন।

পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম ১৯৭৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পাবনা শহরের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মোঃ আব্দুল মজিদ এবং মাতা রাজিয়া বেগম। ছয় ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। পারিবারিক জীবনে তিনি দুই পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর সহধর্মিণী মোছাম্মৎ আসমা ইসলাম পাপড়ি পেশায় একজন শিক্ষক। পুলিশ সুপার মোঃ সাইদুল ইসলাম পাবনা জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন।

এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, তুরষ্ক, চীন, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডসহ দেশে বিদেশে প্রশিক্ষণ লাভ করেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *