পোষ্টিং নারায়ণগঞ্জ অফিস করেন প্রধান কার্যালয়ে :  নৌপরিবহন অধিদপ্তর কি ফাওজিয়ার কথায় চলে? 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত কর্পোরেট সংবাদ জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক  : হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি বাংলাদেশের স্থপতি স্বাধীনতার মহান কারিগর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া স্বপ্নের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠান নৌপরিবহন অধিদপ্তর। এই প্রতিষ্ঠানটি যখন মহান এই নেতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ঠিক তখনেই ফাওজিয়া রহমান (সহকারী কেমিষ্ট) এর লাগামহীন দুর্নীতি ও অসামাজিক কর্মকান্ডের কারণে প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুন্নসহ স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ের প্রতিবন্ধকথা সৃষ্টি হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

ফাওজিয়া রহমান সামান্য সহকারি কেমিষ্ট পদের একজন কর্মকর্তা হলেও গোটা অধিদপ্তরে তার দাপট সীমাহীন। তার চাল চলন,কথা বার্তা শুনলে মনে হয় তিনিই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। চাকুরী জীবনের শুরু থেকেই একটার পর একটা কেচ্ছা কেলেংকারী ঘটিয়ে সব সময়ই আলোচনায় রয়েছেন তিনি। তাকে নিয়ে সংবাদপত্রে অসংখ্যবার নোংরা খবর প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই তিনি নানা কৌশল প্রয়োগ করে পার পেয়ে গেছেন।


বিজ্ঞাপন

বশীকরণ করেছেন নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের। ফলে তিনি যত সিনিয়র হয়েছেন ততই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। একজন সরকারী কর্মকর্তাকে যে সব বিধি নিষেধ মেনে চলতে হয় তার কোনটিই মানেন না তিনি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে যখন যা খুশি তখন তাইই করে থাকেন। সরকারি বিধি বিধান যেন তার কাছে কোন বিষয়ই নয়। তার অনিয়ম-দুর্নীতি ও কেলেংকারীর বিষয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে অনেকবার লিখিত অভিযোগ জমা পড়লেও বিশেষ কৌশলে সেগুলো হিমঘরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাই বলা হয় যে, “ফাওজিয়ার আঁচলে বন্দী নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর”।
সম্প্রতি তিনি আবার আলোচনায় উঠে এসেছেন।

চাকুরী খেয়ে ফেলার ভয় দেখাচ্ছেন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে। তাদেরকে ব্যবহার করতে চাইছেন নগ্নভাবে। কিন্তু তারা ফাওজিয়ার জালে ধরা না দেওয়ায় ভীষণ চটেছেন তিনি। কালনাগিনীর মত ফোঁসফাস করছেন। বিষাক্ত ছোবল দিতে চাইছেন পদে পদে। “আমি নারী সব পারি”। এই ধারণায় শতভাগ বিশ্বাসী তিনি। অনুগতদের কাছে মাঝে মাঝে এ কথা বলেও থাকেন। ফলে তার থেকে সাবধান থাকতে হয় পুরুষ কর্মকর্তাদের। নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের ‘ভয়ংকর ভাইরাস’ বলা হয় তাকে। অনেক কর্মকর্তা, কর্মচারির মুখেই শোনা গেছে এমন আশংকার কথা।

খোঁজখবর নিয়ে জানাগেছে, ফাওজিয়া রহমানকে (সহকারী কেমিষ্ট) দেশের পরিবেশ রক্ষার্থে নদী দূষণমুক্ত রাখার স্বার্থে নদীর পানি পরীক্ষা নিরীক্ষার নিমিত্তে পরিবেশ রক্ষামূলক প্রকল্পকে রেভিনিউ বাজেট এ স্থানান্তর করে এই অধিদপ্তরের আওতায় নারায়ণগঞ্জের সরকারী প্রতিষ্ঠিত ল্যাবরেটরিতে নিয়োগ দেয়া সত্ত্বেও কোন এক অজানা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে (প্রধান কার্যালয়ে তার নির্দিষ্ট কোন কাজ না থাকা সত্ত্বেও) তিনি তার নিজের ও অন্য কারও কামনা-বাসনা পূরণে প্রধান কার্যালয়ে ঘাপটি মেরে বছরের পর বছর পার করে দিচ্ছেন। যার ফলে দেশের নদীর পানি দূষণমুক্ত কিনা পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সুবাবস্থা থাকলেও যথাযথ ব্যবহার না করার ফলে ৬ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি বিকল ও কেমিক্যাল নষ্ট হয়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনার ফসল সমুদ্রে নারী ক্ষমতায়নের জন্য মেরিন একাডেমীতে প্রশিক্ষিত নারী কর্মকর্তাগণকে সিডিসি প্রদানে বাঁধার সৃষ্টি করতেও দ্বিধাবোধ করেননি ফাওজিয়া রহমান। এ বিষয়ে তৎকালীন মহাপরিচালক তার নারী বিদ্বেষী কুপরামর্শে সায় দিলে মহাপরিচালককে শাস্তিমূলক বদলী করা হয়।

আরো জানাগেছে, ফাওজিয়া রহমান মেরিনারদের সিওপি সম্পর্কীয় বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত থেকে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যা ভুক্তভুগি মেরিনাররা অনেকেই নিশ্চিত করেছেন। ফাওজিয়া রহমান অধিদপ্তরের অনেককেই বিভিন্নভাবে আকৃষ্ট করে অসামাজিক কার্যকলাপও করেছেন এমনকি অনেকের বৈবাহিক জীবনের দাম্পত্য কলহের কারণও হয়েছিলেন।

প্রচার আছে যে, ফাওজিয়া রহমান প্রকল্পের ডিপিপি (টেকনিক্যাল) আবু হায়াত আশরাফুল আলমের বাসাবোস্থ বৌদ্ধমন্দিরের উল্টো দিকের ১ম লেনের বাসায় করোনাকালীন সময়ে তার বউয়ের অনুপস্থিতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। যা বাসাবো এলাকায় বসবাসকারী প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ নিশ্চিত করেছেন।

হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষিত স্পেশাল ব্যাচের উদ্যোক্তা ফাওজিয়া। তৎকালীন মহাপরিচালকের সাথে বিশেষ সম্পর্কের মাধ্যমে স্পেশাল ব্যাচের উদ্যোগ নিয়ে প্রথম ব্যাচের ১৭৭ জনের কাছ থেকে জনপ্রতি ১ লক্ষ টাকা করে সর্বমোট ১ কোটি ৭৭ লক্ষ কামিয়েছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা না হয়েও স্পেশাল ব্যাচের ফাইল ই নথিতে উপস্থাপন করেছেন টাকার বিনিময়ে।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে আরো জানাগেছে, প্রথমত,আই এম ও এর লন্ডন কনভেনশনের বাস্তবায়নের জন্য গৃহীত প্রকল্পটির অধীনে যন্ত্রপাতি ফেলে রাখার ফলে ঢাকার চারপাশের নদীগুলো কি পরিমাণ দূষিত হয়ে যাচ্ছে তা নৌপরিবহণ অধিদপ্তর মনিটর করতে পারে নি।

দ্বিতীয়ত, প্রকল্পের অধীন জনবল ল্যাবরেটরিতে কাজ না করে অন্য কাজে নিয়োজিত থাকার ফলে সরকারের নির্দেশনা সঠিকভাবে প্রতিপালিত হয়নি। সহকারী কেমিস্ট ফাওজিয়া সহ ল্যাবরেটরিতে নিয়োজিত জনবল বর্তমানে প্রধান কার্যালয়ে নিয়োজিত থাকায় তাদের নিয়োগের শর্তাবলী লঙ্ঘিত হয়েছে।

তৃতীয়ত, সরকারের অনুমোদন ছাড়াই স্থায়ী সম্পদ অন্য প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দেওয়ায় আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। এই বিষয়ে তদন্ত করে দায়ী ব্যাক্তিদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন।

চতুর্থত, বর্তমানে ল্যাবরেটরি না থাকায় প্রকল্পের অধীনে নিয়োজিত জনবলকে উদ্ধৃত্ত ঘোষণা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করা প্রয়োজন।

উপরোক্ত অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে স্বাধীন কোন সংস্থা যেমন মন্ত্রণালয়, দুদক, ডিজিএফআই, এনএসএই দ্বারা তদন্ত করলে আলোচ্য সকল দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া যাবে।

এ বিষয়ে যথাযথ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের আশু পদক্ষেপ কামনা করেছেন অধিদপ্তরের দেশ প্রেমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *