বিশেষ প্রতিবেদক : বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশকে যে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে, তার পরিমাণ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৫ শতাংশ। বৃহস্পতিবার সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার এবং গ্রিনপিসের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া শাখার করা এ গবেষণায় প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জীবাশ্ম জ্বালানি যে বায়ুদূষণ ঘটাচ্ছে, তাতে বিশ্বের প্রতিদিন ৮০০ কোটি ডলারের (প্রাক্কলিত) আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। টাকার এই অঙ্ক বিশ্বের মোট জিডিপির ৩.৩ শতাংশ।
আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে ১৪০০ কোটি ডলার যা মোট জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ।
‘বিষাক্ত বাতাস আর জীবাশ্ম জ্বালানির খেসারত’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন বায়দূষণের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়েও একটি ধারণা দেয়া হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাতাসে ২.৫ পিএম (পার্টিকুলেট ম্যাটার) আকারের ভারী কণার দূষণে ২০১৮ সালে ৪৫ লাখ মানুষের জন্য ডেকে এসেছে অকাল মৃত্যু। এর মধ্যে ৪০ হাজার শিশু মারা গেছে বয়স পাঁচ বছর হওয়ার আগেই। আর বাংলাদেশে অকালমৃত্যু হয়েছে ৯৬ হাজার মানুষের।
প্রতিবেদনটি বলছে, ওই বছর বায়ুদূষণের কারণে বিভিন্ন বয়সী ৭৭ লাখ মানুষকে অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।
বায়ুদূষণের প্রভাবে অসুস্থতায় ২০১৮ সালে পুরো বিশ্বের মানুষ যত কর্মদিবস ছুটি কাটাতে বাধ্য হয়েছে, সব যোগ করলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ১৮০ কোটি দিন।
কয়লা ও পেট্রোলিয়ামের মত জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে যে দূষণ ঘটছে মূলত তার ভিত্তিতেই এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার এবং গ্রিনপিস। নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড, ওজন এবং ২.৫ পিএম (পার্টিকুলেট ম্যাটার) আকারের ভারী কণার দূষণের জন্য ক্ষতির মাত্রা হিসাব করা হয়েছে আলাদা করে।
আর ক্ষতি হিসাব করার ক্ষেত্রে অকালমৃত্যুজনিত ক্ষতি, চিকিৎসা ব্যয় এবং কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিতির কারণে উৎপাদনে বিঘœ ঘটার মত বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।