নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিইউজে কার্যালয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, তালা এবং সংবাদ মাধ্যমে হামলা ও অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ায় ডিইউজে’র উদ্বেগ অন্তবর্তী সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি জানিয়েছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ডিইউজের নেতৃবৃন্দ্, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিচল ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, তালা দেয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ডিইউজে নির্বাহী পরিষদ। সংগঠনটির নির্বাহী পরিষদের পক্ষে সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন আজ শুক্রবার (১৬ আগস্ট ২০২৪) এক বিবৃতিতে বলেন, গত ৫ আগষ্ট সারাদেশব্যাপী যে হামলা, নৈরাজ্য, নাশকতা, লুটপাট ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) কার্যালয়ে ২০/২৫ জন দুর্বৃত্ত অনুপ্রবেশ করে। এই সময় তারা অফিসের কর্মচারী মো. শওকতকে মারধর করে চাবি ছিনিয়ে নেয়। তারা কার্যালয়ের কম্পিউটার ভাঙচুর করে। পাশাপাশি কার্যালয়ের আলমারি ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ নথি, কাগজপত্র এবং সংগঠনের কাজে সংরক্ষিত টাকা লুট করে। এই সময় দুর্বৃত্তরা আসবাবপত্র ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে তারা কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। এই দুর্বৃত্তরা এ ঘটনার মাধ্যমে সাংবাদিকতার ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করলো।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ইউনিয়ন কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে এই দুর্বৃত্তরা মূলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সাংবাদিকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে তাদের কন্ঠরোধ করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। এছাড়া একইদিন সময় টিভি, ডিবিসি, এটিএন নিউজ, ৭১ টিভি, মাই টিভিসহ বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম কার্যালয়ে হামলা ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাংবাদিকদের উপরও হামলা করেছে। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। গত ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিয়েছে ছাত্র নামধারী কিছু দুর্বৃত্ত।
শুধু তাই নয়, একটি গোষ্ঠী বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে অব্যাহতভাবে অস্থিরতা সৃষ্টি করে চলেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পদায়নের ক্ষেত্রে ওই গোষ্ঠীটি নগ্ন হস্তক্ষেপ করে চলেছে। যার ফলে সাংবাদিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দাবি জানান।
বিবৃতিতে ডিইউজে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংবাদ মাধ্যম, সাংবাদিক সংগঠনের কার্যালয় ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, তালা দেওয়া, সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা এবং সংবাদ সংগ্রহে বাধা দান
স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে পরস্পরের প্রতি যে আস্থার সংকট তৈরি হবে তা দীর্ঘ মেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ ধরনের ঘটনার সূত্র ধরে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এরইমধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এমনটি কখনোই কাম্য নয়।
ডিইউজে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অবিলম্বে সংবাদমাধ্যমে অস্থিরতা নিরসনে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ জানিয়েছে। ডিইউজে মনে করে, মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ অথবা জোর করে মত চাপিয়ে দেয়ার বিষয়টি কখনোই শুভ ফল বয়ে আনে না। তাই সব পক্ষকে সতর্ক থাকা উচিত।