নিজস্ব প্রতিনিধি (চট্টগ্রাম) : অনিয়ম দূর্নীতির বেড়াজাল থেকে কোনভাবেই বের হতে পারছেনা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগ। সরেজমিনে দেখা যায় যে রাজস্ব সার্কেল ৫ এ হোল্ডিং এবং লাইসেন্সে যে দুজন কর কর্মকর্তা রয়েছে তারা দুজনেই অর্থ আত্মসাৎ এ অভিযুক্ত ব্যক্তি। একজন হলো এ.কে.এম সালাউদ্দিন কর কর্মকর্তা (লাইসেন্স) ও আরেকজন হলো নাসিরউদ্দিনের চৌধুরী কর কর্মকর্তা দুজনেই সার্কেল ৫ কে নিয়ন্ত্রণ করে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব বিভাগের আওতাধীন লাইসেন্স শাখায় ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ওই সময় লাইসেন্স ইস্যু বাবদ ৫২ লাখ টাকা সিটি কর্পোরেশনের তহবিলে জমা না দিয়ে ২৮ জন লাইসেন্স ইন্সপেক্টর নিজেরা আত্মসাৎ করেন। টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় পর সিটি করপোরেশন লাইসেন্স শাখার ২৮ জন ইন্সপেক্টর কে সাসপেন্ড সহ বিভিন্ন আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করে।
চসিকের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায় যে বর্তমানে ৫ নং সার্কেল কর কর্মকর্তা (লাইসেন্স) (ভারপ্রাপ্ত) এ.কে. এম সালাউদ্দিন ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত লাইসেন্স ইন্সপেক্টর থাকাকালীন সময়ে ৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লাইসেন্সের টাকা জমা না করে আত্মসাৎ করেন। যার ফলে সালাউদ্দিন সহ অন্যদের প্রথমে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় পরবর্তীতে ২০০৪ সালে ২ ফেব্রুয়ারী চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত এ.কে.এম সালাউদ্দিন কে এক চিঠিতে (স্বারক নং১৩২) টাকা আত্মসাতের বিভাগীয় মামলার (নং- ২২/২০০১) অফিস আদেশ দেয়া হয়। আদেশে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি তাকে চাকরি থেকে অবসর দেয়া হয়। এরপর পলাতক থাকা অবস্থায় সালাউদ্দিন সহ অন্যান্যরা সাবেক মেয়র মনজুর আলমের কাছে সুকৌশলে মুচলেকা দিয়ে ৭ বছর পর ২০০৮ সালে শর্ত মেনে পরিচ্ছন্ন বিভাগে যোগদান করেন।
এই সময় চাকরিতে পুর্নবহালের শর্ত ছিল যে রাজস্ব অথবা আর্থিক খাতে পোস্টিং না দেয়া। কিন্তু পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে প্রশাসনের যোগসাজশে রাজস্ব শাখায় ক্রোকি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করে পরবর্তীতে অবৈধ ভাবে উপ কর কর্মকর্তার পদন্নোতি লাভ করেন।
একই ভাবে রাজস্ব সার্কেল ৫ এর কর কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন চৌধুরী ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা অর্থ আত্মসাৎ করে দন্ডিত হয়ে বর্তমানে কর কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়াও সার্কেল ৭ এর লাইসেন্সের উপ কর কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দিদারুল আলম খান ৬৭ হাজার টাকা আত্মসাত করে ওই দুজনের মতো দন্ডিত হয়েছিলেন। ২০১৯ এর নীতিমালা অনুযায়ী ডিটিও পদে পদোন্নতি পেতে হলে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে কিন্তু দিদারুল আলম খানের স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি নেই যা তার গ্রেডেশন তালিকায় উল্লেখ আছে।
সদ্য সাবেক মেয়র এর আস্থাবান হয়ে ও পরিবর্তিত পরিস্থিতি বুঝে বর্তমানে চসিক প্রশাসনকে কোটা আন্দোলন এর কথিত সমন্বয়ক এর হুমকি দিয়ে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও কর কর্মকর্তা হওয়ার জন্য তদবির করছেন। অতএব সাধারণ জনগণ মনে করছে এখন পরিবর্তনের হাওয়া বইছে তাহলে কিভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ সার্কেল দুইজন অভিযুক্ত ব্যক্তি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন এ ছাত্র জনতার বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চসিক এর এই চিহ্নিত দূর্নীতিবাজ সুবিধাবাদী চক্র আবার নতুন সুবিধা আদায় করতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন।
গত ৭ আগস্ট ২৪ চট্টগ্রাম নগরীর ওয়াসা মোড়ে একটি রেস্টুরেন্ট এ কে এম সালাহউদ্দিন ও বিদ্যুৎ বিভাগের এক প্রকৌশলীর নেতৃত্বে চসিক এ কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন নিয়ে এক গোপন সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর হতে চক্রটি সিটি কর্পোরেশন এর সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে তালিকা করার, পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদ প্রচার করে সম্মানহানি ইত্যাদির ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি আদায় করছে।
১/১১ সেনা সমর্থিত সরকারের সময় সালাহউদ্দিন সেনাবাহিনীর ভূয়া কর্মকর্তা পরিচয়ে চসিক কার্যালয়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের ফোন করে আতংকিত করে রাখার বিষয়ে অনেক কর্মকর্তা জানত।