নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক জনবাণী ও দৈনিক আলোচিত জামালপুর পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মাসুদুর রহমানকে মুঠোফোনে হুমকি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান হেলাল। বুধবার (২১ আগস্ট) রাত ১২:৩০ মিনিট এ হেলাল তার ব্যক্তিগত ০১৭১৪০৩৫৪৫০ নাম্বার থেকে ০১৯৭৮৫০৫২৪৪ নাম্বারের হোয়াটসঅ্যাপ কল দিয়ে হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন বলে অভিযোগ করেন মাসুদুর রহমান।
জানা যায়, নৌকা প্রতিকে জয়ী হয়ে ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নাগরিক ও মেম্বারদের সাথে খারাপ আচরণ ,রাষ্ট্রের স্বার্থ বিরোধী কাজ , ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রকাশ্যে ঘুষ-বাণিজ্য,অসৎ আচরণ , টিআর, জিআর, কাবিখা,কাবিটা, এডিপি, এলজিএসপি,পিআইসি ,১% সহ উপজেলা পরিষদের সরকারি বিভিন্ন বরাদ্দে নানা অনিয়ম, ভুয়া বিল বাউচার, বেনামি একাউন্টের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা স্থানান্তর সহ বিভিন্ন কৌশলে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন। যার ফলে তিনি দায়িত্ব নেওয়ার থেকেই তার পালিত ক্যাডার ও সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছিল এ ডোয়াইল ইউনিয়নে ।ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন তার মন মতো করে অনিয়মের মধ্য দিয়ে পরিষদ পরিচালনা করে আসছে ।
এ ছাড়াও ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে টেস্ক থেকে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারী পর্যন্ত ৩৫০০৭৫ টাকা , ট্রেড লাইসেন্স থেকে ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত ৪৭০৯৪৬ টাকা , ১২৪০০ জনের থেকে জন্ম নিবন্ধন থেকে ১০০ টাকা হারে ১২৪০০০০ টাকা, ৯১৪টি ওয়ারিশ সনদ থেকে ১৮২৮০০ টাকা, মৃত্যু সনদ থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকা সর্বমোট =২,২৪৩,৮২১ টাকা। এখান থেকে বিভিন্ন ভুয়া বিল বাউচার পর্যন্ত প্রায় ৬ লক্ষ টাকা ব্যয় দেখিয়ে সম্পুর্ন টাকা চেয়ারম্যান নিজেই আত্মসাৎ করেন।
উল্লেখ্য যে, জন্ম নিবন্ধন ৫০ টাকার জায়গায় ১৫০ টাকা করে আদায় করা হতো। এর ভিতর থেকে আবেদনের জন্য ৫০ টাকা রাখা হয়।অবশিষ্ট ১০০ টাকার মধ্যে ৫০ টাকা সরকারী ফি জমা হয় আর ৫০ টাকা করে অবশিষ্ট টাকার কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
গত ২২ ফেব্রুয়ারী ইউনিয়নের ২ জন নারী ইউপি সদস্য সহ ৯ ইউপি সদস্য তার বিভিন্ন অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অনাস্থা প্রস্তাব ও অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করলে ২ এপ্রিল উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ কান্তি দত্ত ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে তদন্তের কাজ শুরু করেন।
পরে তিনি বিশেষ সভা ডাকেন৷ বিশেষ সভায় ২ জন নারী ইউপি সদস্য সহ ৮ জন নারী ইউপি সদস্য আবারো অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন৷ আরেক জন ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় তিনি উপস্থিত থাকতে না পারায় অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে লিখিত প্রদান করেন৷ গত ১৮ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদারের স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ ২০ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷ নোটিশে বলা হয়েছে, অনাস্থা প্রস্তাবে ৯ জনের মধ্যে ৮ জন অনাস্থা প্রস্তাব করায় আইনী ভাবে ঠিক হয়নি৷ দাখিলকৃত অভিযোগের মধ্যে সকল অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দৈনিক জনবাণীর স্টাফ রিপোর্টার মাসুদুর রহমান জানান, হঠাৎ রাত ১২:৩০ মিনিটের সরিষাবাড়ী আ’লীগ নেতা মাহবুবুর হেলাল ভাই কল দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে৷ পরে তোর সাথে দেখা হবে৷ ভাল থাক। ডোয়াইল ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও অনাস্থা প্রস্তাব থাকায় একাধিক সংবাদ করেছিলাম৷ হঠাৎ দেখলাম সিনিয়র সহকারী সচিব মহোদয় নোটিশ করেছেন৷ সেখানে বলেছেন অনাস্থা প্রস্তাব অননুমোদিত এবংং যে অভিযোগ গুলো করা হয়েছে সেগুলো সত্যতা পায়নি৷ কত প্রমাণ লাগবে প্রমাণ হবে৷ এখানে ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন এর জন্য অনেক তদবীর হয়েছে৷ তদবীরের পর তাকে দুর্নীতির হাত থেকে বাচাতে এই নোটিশ করা হয়েছে বলে আমি মনে করি৷ আমাকে ফোন হুমকি দেওয়া হয়েছে৷ মামলা দায়ের করা হবে৷
এ বিষয়ে ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন ও আ’লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান হেলালকে একাধিক বার কল দেওয়া হলে নাম্বারটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।