মানিকগঞ্জ সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) কামরুল ইসলাম।
নিজস্ব প্রতিবেদক : মানিকগঞ্জ সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি ও নামজারি করতে আসা এক সেবা গ্রহীতার কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সিঙ্গাইর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড এর কাছে অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী ঐ সেবা গ্রহীতা।ভুক্তভোগী এই সেবা গ্রহীতার নাম লুৎফর রহমান খান।
তিনি জানান, “আমার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া চরকালিগঙ্গা মৌজায় সম্পত্তি নামজারি করার জন্য আবেদন করতে গেলে নায়েব কামরুল ইসলাম আমাকে বলে স্যার আপনাকে এই নামজারি দিবে না, তখন আমি উনাকে বললাম তাহলে কি করতে হবে নায়েব কামরুল ইসলাম আমাকে বলে, যদি টাকা পয়সা খরচ করেন তাহলে আমি খারিজের ব্যবস্থা করে দিব, আমার থেকে নগদ দেড় লক্ষ টাকা বুঝিয়া নিয়া নিজ উদ্যোগে আমার জমি খারিজ করিয়া দিবার জন্য আমার নিকট হইতে সকল কাগজপত্র গ্রহণ করে, এবং তার নিজ অফিসের কম্পিউটার থেকে ব্যাক্তিগত সহকারী সামির এর মোবাইল নম্বর দিয়ে আবেদন করে,যার আবেদন নং-৯৯৮৫৬৫৭, এবং মামলা নম্বর ২০৪৬,আমি তখন উনাকে বললাম আমার মোবাইল নম্বর দিলেন না, তখন সে বলে সমস্যা নাই আপনার মোবাইল নাম্বার লাগবে না আমি আমার অফিসের নাম্বার দিয়ে আপনার কাজটা করে দিব এই কাজটি প্রায় ৮-১০ দিন হয়ে যাওয়ার পর, ও কাজটি করে নাই ফাইলটি অফিসেও জমা দেয় নাই তার নিজের কাছে রেখে দিয়েছে,,আজ২২ আগস্ট আমাকে ফোন করে বলে আপনার কাজটি স্যার করবে না।
তখন আমি টাকা ফেরত চাইলে আমাকে বলে আপনার টাকা আমি এখন ফেরত দিতে পারবো না আপনি যা পারেন করেন”। ঘুষের বিনিময়ে নামজারি করার আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে এই ভূমি সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বলেও জানান লুৎফর রহমান খান।
চান্দহর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) কামরুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলায়। অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষের টাকায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন কামরুল। আওয়ামী লীগের দলীয় কোটায় তার চাকরিতে নিয়োগ হয়। ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতো সে। গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্দান্ত প্রভাবশালী নায়েব হিসেবে ধরাকে সরা জ্ঞান করত সে। গত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দমন পিরনের জন্য ছাত্রলীগকে অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে এই কামরুল। নামজারি ও ভূমি সেবার নামে ঘুষ বাণিজ্য করে সাভার এলাকায় বহুতল বিশিষ্ট আলিশান বাড়ি তৈরি করেছেন। মানিকগঞ্জ সদরে রয়েছে প্লট, তার গ্রামের বাড়ি হরিরামপুরে কিনেছেন বিঘায় বিঘায় সম্পত্তি।
ঘুষের টাকা নিয়ে কাজ না করে দেওয়ার কারণে তার পূর্ববর্তী কর্মস্থল সিংগাইর পৌর ভূমি অফিসে থাকাকালীন সময়ে স্থানীয়রা গণধোলাই দিয়েছিল বলেও জানা গেছে। সে যেখানেই চাকরির সুবাদে বদলি হন সেখানেই গড়ে তুলেন দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিস না করার অভিযোগ রয়েছে। দিনের বেলায় এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ায় সন্ধ্যার পরে অফিস খুলে কাজ করেন। তার বিরুদ্ধে আরো নানান চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে। অবৈধ ইটের ভাটা থেকে নিয়মিত মাসোহারা তোলেন। সরকারি জমি থেকে মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী লুৎফর রহমান আরো জানান, “এসি ল্যান্ড এর কাছে হোয়াটসঅ্যাপ এর মাধ্যমে অভিযোগ দিয়েছি, তিনি বিষয়টি লিখিত আকারে অভিযোগ দিতে বলেছেন, এবং এ বিষয়ে সর্বোচ্চ ব্যবস্থার গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন”।
এ বিষয়ে কথা বলতে চান্দহর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) কামরুল ইসলামের মুঠো কোণে একাধিক বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।