ঠিক তিনদিন আগে হঠাত করে ট্রাফিক এলার্ট গ্রুপে সিএনজি চালিত রিকশা বন্ধ করা উচিত কিনা এই মর্মে একটা পোস্ট হয় এবং ঢাকাই মধ্যবিত্ত সকলের মতামত নেয়া হয়। কোন রিকশাওয়ালা মামার প্রতিনিধি এই পোস্টটা নিশ্চই করে নাই। পোস্টকারী কে? হঠাত করে ঠিক এই অস্থির সময়েই কেন এই বিষয়টা তার সামনে আনা জরুরী মনে হলো দয়া করে তার পরিচয়টা একটু সামনে আনেন।
আমিনুর রহমান বাদশা : শহর কেন্দ্রিক বেশিরভাগ রিকশা শ্রমিকই আসলে জলবায়ু মাইগ্রেন্ট। খোজ নিলে দেখবেন বেশির ভাগই বানভাসি অথবা খড়ায় ভিটা হারানো মানুষ এরা। এবং সুযোগ পেলে এদের কেউই আসলে গ্রাম ছেরে শহড়ে পরে থাকতে চায় না। এরা সবাই গ্রামে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখা মানুষ। আপনাদের শহড় এমন কিছুই আসলে তাদের অফার করে না যে এরা তাদের ভিটা ছেরে শহড়ে পরে থাকবে। বাংলার নদী নালা খাল বিল এর নাব্যতা ঠিক করলে, দখল মুক্ত করলে, বন্যার প্রকপ কমে আসলে এরা সবাই ভিটাতে ফিরবে। তখন যাতায়াত করার রিকশা আসলে আপনারা পাবেন না। জুলাই এর গন অভ্যুথ্থানে ছাত্রদের সাথে সাথে কারো যদি স্টেক থাকে সেইটা সবার আগে এই শহড়ের রিকশা শ্রমিক মামাদের।
তাদের দাবীদাওয়ার সাথে একমত পোষন করে বলি : এই যে সিএনজি রিকশা এবং ম্যানুয়াল রিকশা শ্রমিককে মুখোমুখি দাড় করিয়ে দিলো তারা আসলে কারা ? দেখেন রাজনীতিতে কোন কিছুই এত সাদা আর কালো না। এই অস্থির সময়ে, যখন হাজার কোটি টাকার মালিকগোষ্ঠীর দল আওয়ামীলীগের মতো একটা শক্তীশালী কাল্ট গ্রুপ নিজেদের নিয়ে সংকটে আছে । এই রকম একটা শক্তীশালী দল যখন মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য ট্রায়াল এর মুখোমুখি আছে, যখন ২০১৩ সালে সক্রিয় অনলাইনের তাদের সকল শক্তি আবার করে ক্রিয়াশীল আছে তখন আল্লাহর দোহাই লাগে এত সরল করে সব কিছু দেইখেন না।
সময়টা খেয়াল করেন এই মুহূর্তে উইএন এর তদন্ত কমিটি বাংলাদেশে সরজমিনে আছে। আওমেলীগ এর পক্ষ থেকে পুলিশের উপর হামলার ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। উইএন এর উপর আওয়ামীলগের তরফ থেকে ক্রমাগত বলা হয়েছে তারা যেন পুলিশের উপর হামলার তদন্ত করে। এবং ঠিক এই সময়ই একের পর এক দাবী দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন শ্রমজীবি মানুষের আইডিতে মাঠে মানুষ নামছে ।
কালকে আনসার এর যে জমায়েত হয়েছে বিকাশে এই সকল আনসারের কাছে অর্থ গেছে বলে খবর আসছে। ২০২৩ সালে প্রথম আলোতে আলী রিয়াজের একটা ডিটেইল লিখা আছে লীগ সরকার কেন কি উদ্দেশ্যে এবং কিভাবে আনসারকে গত দুই বছরে শক্তীশালী করেছে। এমনকি তারা পলিসিতে পরিবর্তন এনে তাদেরকে আমর্ড করেছে এবং সাধারন মানুষকে তল্লাশী কাররা এখতিয়ারও দিয়েছে। শুধু আনসার না। লীগ সরকার যেহেতু জনগনের সমর্থন ছারা ক্ষমতায় থাকার প্ল্যান ছিলো ২০৪২ পযর্ন্ত তারা সেইভাবেই নিরাপত্তা বাহীনির সকল অংশকে তাদের পোটোয়া বাহীনি হিসেবে তৈরী করেছে। তারই ফল আমরা দেখতে পেয়েছি জুলাই হত্যা কান্ডে।
সারা বাংলাদেশে আওয়ামীলিগ নিজেদের নামে আর কোন ধরনের কোন গেদারিং করে রাজনৈতিক অস্থিরিতা তৈরী করতে পারবে না এইটা পরিষ্কার। আগের সমস্ত পাপের হিসাব বাদ দিলেও জুলাই এর দুই সপ্তাহে যে দলের নেতৃর হুকুমে এবং দলের তত্বাবধানে ৮০০ এর বেশি শিশু তরুনকে স্রেফ গুলি করে হত্যা করা হয়েছে সেই দলকে এই দেশের সাধারন মানুষ রস্তায় দাড়াতে দেবে না এইটা আওমেলীগও জানে।
কিন্তু দেশের ভিতর অস্থিরতা তৈরী করা ছারা তাদের রাজনৈতিক প্রাসংগিকতা টিকিয়ে রাখার আর কোন উপায় নাই। কাজেই তারা সবর্চ্চ চেষ্টা করবে এই সরকারের আমলে শেখ হাসিনা ছারা দেশ ভালো চলছে না এই পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত তৈরী করার । এই রাজণৈতিক কুট কৌশলেরই অংশ হিসেবে নিজেদের দলের নামে না দাড়িয়ে বিভিন্ন পেশাজীবি নামের ছত্রছায়ায়, বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে তারা হাজির হচ্ছে এবং হাজির হতে থাকবে। পেশাজীবির নামে হলে সুবিধা যেটা হবে গনতন্ত্রমনাদের মনে নৈতিক সুরসুরি তৈরী করা সম্ভব হবে। সবাইকে একটা এথিক্যাল অবলিগেশনে ফেলে দেয়া যাবে।
আমার কাছে সমাধান একটাই নিজেদের মধ্যে তৈরী হওয়া ঐক্যর ভাঙন না ধরানো। অভ্যুথ্থানে অংশ নেয়া সকল রাজনৈতিক দলকে একত্র হয়ে অস্থায়ী সরকারকে একটা নির্দিষ্ট সময় পযর্ন্ত সহযোগতিা করা। শুধু একটা বিষয় মনে করিয়ে দিতে চাই, যে দলটিকে আপনারা ক্ষমতাচূত্য করেছেন, সেই দলটি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক, বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী এবং সবচেয়ে শ্রুড রাজনৈতিক দল। জুলাই এর হত্যাযজ্ঞ প্রমান করে তাদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনে এমন কিছু নাই তারা করবে না ।