গাজিপুর ( শ্রীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ২ নং গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদে প্রহসনের নির্বাচনের অবৈধ চেয়ারম্যান, অপসারণের দাবিতে অষ্টম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন।
অষ্টম দিনে অবস্থান কর্মসূচি সঞ্চালনায় ছিলেন, মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক মন্ডল, সাবেক ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক গাজীপুর ইউনিয়ন ছাত্রদল ও যুগ্ম সম্পাদক গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপি।
প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন, মোঃ আব্দুল হাকিম পিন্টু, সাবেক ছাত্রনেতা ও সম্মানিত সদস্য গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপি। সভাপতিত্ব করেন,এডঃ মামুনুর রশীদ, যুগ্ম সম্পাদক গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক শ্রীপুর উপজেলা বিএনপি।
গত ৫ই আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত অনেকেই চলে যান আত্মগোপনে।তাদের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ অনেক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন অন্তবর্তী কালীন সরকার গঠনের পর আস্তে আস্তে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। সারাদেশে স্কুল কলেজ অফিস আদালত চালু হয়েছে।
আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানরা, যে সব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন, সে সব জায়গায় তালা ঝুলিয়ে, পালিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান। এমনকি তাদের কে বাড়িতে বা এলাকার কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্র জনতা ও সাধারণ জনগণ।
প্রধান অতিথি আব্দুল হাকিম পিন্টু বলেন, সারাদেশের বেশ কিছু জেলায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে মিছিল, মানববন্ধন, অপসারণ কর্মসূচিও চলছে।
আওয়ামী লীগ নেতা এমন কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদেরকে ফোনে পাওয়া যায় নি। শুনা গেল তিনি বিগত দিনের অপকর্মের কারণে বর্তমান পলাতক। মাঝে মধ্যে গোপনে ইউনিয়ন পরিষদের হাজিরা উঠাতে আসে। এমন পলায়নে জনগণের বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আনদোলনের সময়, ছাত্রদের উপর হামলা করে এই স্বৈরাচারী চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মাতাব্বর।
আমরা আমাদের গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আজ অষ্টম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। প্রহসনের নির্বাচনে ভোট বিহীন চেয়ারম্যান অপসারণ করে, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদেকে দুর্নীতিবাজ মুক্ত করবো। গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। অতি বিলম্বে বিনা ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান কে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।
সভার সভাপতি এডঃ মামুনুর রশীদ বলেন. সারাদেশে সাড়ে চার হাজারের ওপরে ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। এসব ইউনিয়ন পরিষদের বেশিরভাগেই নির্বাচন হয়েছে দুই বছর আগে। ২০১৮ সালের পর স্থানীয় সরকারের সব ধরনের নির্বাচন বয়টক করে বিএনপি ও অনান্য রাজনৈতিক দলগুলো। যে কারণে গত ৬ বছরে হাত গোনা কিছু ইউনিয়ন, উপজেলা বাদে বেশিরভাগেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।
বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক জোটের উপস্থিতি ছাড়াও এসব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও এসবের অনেকগুলো নির্বাচন নিয়ে রয়েছে অনিয়ম কারচুপির অভিযোগ।
দেখা যাচ্ছে দেশে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বর্তমানে ধারাবাহিকভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। ফলে ইউনিয়ন পরিষদের জনসেবাসহ সাধারণ কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।অষ্টম দিনে অবস্থান কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত বিনা ভোটের অত্যাচারী স্বৈরশাসকের চেয়ারম্যান অপসারণ না হবে, আমরা পিচু হটবো না।
আসা করছি শিরাজুল হক মাতাব্বর অতিবিলম্বে ইস্তফা দিয়ে পরিষদ থেকে চলে যাবে। শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসনের আমাদের বিনীত নিবেদন আমরা সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে একজন চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান চাই। আপাতত পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন প্যানেল চেয়ারম্যান করে, স্বৈরাচারী অবৈধ চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মাতাব্বর কে সরিয়ে দেওয়া হোক।
বদিউল আলম সবুজ বলেন, “গত বেশ কয়েক বছর ধরে এমন সব নির্বাচন হয়েছে যে নির্বাচন নিয়ে মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। সরকার পরিবর্তনের ফলে মানুষ এখন ক্ষোভ প্রকাশ করছে। তাদের অপসারণ চাইছে”।
তবে, যে সব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র বা অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারা নির্বাচিত হয়েছেন সে সব জায়গায় চেয়ারম্যানদের খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা অবস্থান করছি, আমাদের দাবি একটাই অবৈধ চেয়ারম্যান অপসারণ।
এই চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিতে অষ্টম দিনের মতো অবস্থান করছি। প্রয়োজনে আরও দীর্ঘমেয়াদী অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো। তবুও এই অবৈধ চেয়ারম্যান কে অপসারণ করে ছাড়বো। অনেক বক্তৃতায় একটি কথা বার বার আসে। যদিও দেশের সংকটময়কাল অতিবাহিত হচ্ছে। তবু আমাদের দাবি যারা, প্রসাশনিক দায়িত্বরত তাদের সবিনয় অনুরোধ করছি। আমাদের এই ধারাবাহিক অবস্থান কর্মসূচি বিষয়টি অনতিবিলম্বে সমাধান করবেন।