নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে ছিলেন তারা। সেখানেই হয়েছে জালমুদ্রা তৈরির হাতেখড়ি। রাজধানীর বাসাবো-কদমতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের আটজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। জব্দ করা হয়েছে কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় জালমুদ্রা (রুপি) ও জালরুপি তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে এই রূপি ভারতে পাচার করা হতো বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চক্রের প্রধান বশিরুল্লাহ বছর কয়েক আগে মাদকসহ গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন। আর মনির গ্রেফতার হয়েছিলেন চেক জালিয়াতির মামলায়। জেলের ভেতরে মুদ্রা জাল তৈরি করার দীক্ষা পান তারা। এক সময় জামিনে বের হয়ে এসে শুরু করেন মুদ্রা জাল করার কাজ।
বাসাবো কদমতলার ছয়তলার এই ফ্ল্যাটে ঢুকে মুদ্রা বানানো অবস্থায় গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন আটজন। এদের মধ্যে আছেন রুপি তৈরির কারিগর, আছেন বিপণনকারী, মহাজন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারতের লোক এসে নিয়ে যায় জাল মুদ্রা (রুপি)।
তাদের একজন বলেন, দুরুদ জামান নামে একজন লোক আছে। সে আমাদের শেখায় কীভাবে এটার কাজ করতে হয়। সেখান থেকে শেখার পর বশির আমাকে অফার করে যে, মাসে অনেক টাকা আয় করা যাবে।
বাসায় তল্লাশি চালিয়ে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের তৈরিকৃত জাল রুপি ও বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এদের কেউ কেউ আগেও একই অপরাধে গ্রেফতার হয়েছিল গোয়েন্দা পুলিশের হাতে।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে যে লোকগুলোকে অনুসরণ করা হচ্ছিল, বাংলাদেশের এই ছোটখাটো লোকগুলোর কাছ থেকে জাল রুপিগুলো কিনে বর্ডার পেরিয়ে অন্য দেশে পাঠাতো। এটার মাস্টার মাইন্ড বশিরুল্লাহকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দেয়া তথ্যমতে, আরো দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা পুলিশের।
বাংলাদেশি মুদ্রা জাল করার অভিযোগে বিভিন্ন সময় অনেককেই গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। তবে সম্প্রতি ভারতীয় মুদ্রাও জাল করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে এই জালকারবারীদের মধ্যে। বাংলাদেশের পুলিশ বলছে, এসব কাজে বাংলাদেশের যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার করছেন, তারা আর যেসব ভারতীয় নাগরিক জড়িত আছেন তাদের ব্যাপারে দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে অবহিত করা হবে।