মো: সফিকুল ইসলাম নাহিদ, (হবিগঞ্জ) : নবীগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর বাজারে সিএনজিতে যাত্রী উঠানোর জেরে এক চালকের ছুরিকাঘাতে আরেক চালক খুন হয়েছেন! খুন হওয়া সিএনজি চালকের নাম হাফিজুর রহমান (৩৫)। সে আউশকান্দি ইউনিয়নের উমরপুর এলাকার মৃত আব্দুস সালামের পুত্র। আর ঘাতক সিএনজি চালক মো: শিপন মিয়া একই ইউনিয়নের চৈতন্যপুর এলাকার আব্দুল আহাদের পুত্র৷ জানা গেছে- উপজেলার সৈয়দপুর বাজারের সিএনজি ষ্ট্যান্ডে গত ২৫ আগষ্ট রাত অনুমান ১১টার দিকে সিএনজিতে যাত্রী উঠানোকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে শিপন দারালো ছুরি দিয়ে ভিকটিম হাফিজুরের গলায় উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে হাফিজুর গুরুত্বর জখম প্রাপ্ত হলে তাকে প্রথমে সিলেট ওসমানী হসপিটালে চিকিৎসার জন্য ২৬ আগষ্ট ভোর রাতে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করলে ঐ দিনই তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট, শের-ই বাংলানগর ঢাকায় ভর্তি করা হয়। হাফিজুরের চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল (২৯ আগষ্ট) সন্ধ্যা ৬ ঘটিকায় সেখানে মৃত্যু হয়। এদিকে নিহত হাফিজুরের চিকিৎসাধীন সময়ে সিলেট ওসামানী হসপিটাল পুলিশ বক্সের এক পুলিশ সদস্যের ধারা ছল-চাতুরীর শিকার হয়েছেন তার স্বজনরা বলে অভিযোগ করেন নিহত হাফিজুরের চাচাতো ভাই আজিজুর।
আজিজুর প্রতিবেদকে জানান- তারা যখন হাফিজুরকে নিয়ে ওসমানী হসপিটালে আসেন তখন তার অনেক রক্ত যাচ্ছিলো আর ডাক্তারা তাকে চিকিৎসা দিতে বিলম্ব করায় আমরা তাৎক্ষণিক ডাক্তারের সঙ্গে রাগারাগি করি। এক পর্যায়ে ওসমানী হসপিটাল পুলিশ বক্সের কনস্টেবল কাজী ইখতিয়ার উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হয়ে আমাদের থামান এবং উনি নিজেকে এই হসপিটালের পুলিশ বক্সের ইনচার্জ পরিচয় দিয়ে আমাদের রোগী সহ আমাদের রোগীর উপর হামলার ঘটনায় আমাদের নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরে সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন। পরে ওসমানীর ডাক্তাররা যখন বলেন হাফিজুরের অবস্থা খারাপ তাকে ঢাকায় নিতে হবে।
তখন ওই পুলিশ সদস্য আমাকে জানান তাকে খুশি করার জন্য তখন আমি আইনী সহযোগিতার আসায় সরল বিশ্বাসে উনাকে নগদ ১ হাজার টাকা দেই আর উনাকে জানাই যে এখন রোগী নিয়ে আমরা ঢাকায় যাবো যখন আমরা মামলা করব তখন উনার সঙ্গে যোগাযোগ করর।
কিন্তু দু:খের বিষয় আমার ভাই ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে ঢাকার হসপিটাল কর্তৃপক্ষ লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করতে পারবে না বলে জানালে আমি নিরুপায় হয়ে ওসামানীর ওই পুলিশ কনস্টেবলকে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে জানালে তিনি বলেন “আরে বেটা আমি ওসমানীর ইনচার্জ তুমরা লাশ নিয়ে ওসমানীতে আসো যা করা লাগে আমি করব”। উনার কথা মতো ঢাকা থেকে আজ (৩০ আগষ্ট) সকাল ৫টায় আমরা ওসমানীতে পৌঁছানোর পর উনাকে দফায় দফায় ফোন দিলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেন নি।
এখন নিরুপায় হয়ে ফের সিলেট থেকে আমরা হবিগঞ্জে যাচ্ছি লাশের ময়নাতদন্তের জন্য। এ ব্যাপারে ওসমানী হসপিটালের কনস্টেবল কাজী ইখতিয়ার উদ্দিনের ব্যবহৃত সেলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- এসব বিষয়ে আমি ফোনে কথা বলতে পারবো না যা জানার আপনি দেখা করে জানেন।
তবে এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ বলে তার দাবি। এ ব্যাপারে ওসামানী হসপিটাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এস/আই জাফর ইমাম জানান- সে একজন কনস্টেবল যদি সে ইনচার্জ পরিচয়ে কোন অপকর্মে লিপ্ত হয় তাহলে তার দায়ভার তাকেই নিতে হবে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলী বলেন, এই বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি।