মোঃ জাহিদুল ইসলাম শিহাব, (সন্দ্বীপ) চট্টগ্রাম : সন্দ্বীপ উপজেলার কালাপানিয়া জগৎ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজে ব্যাপক ধীরগতির কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। পাঠদান ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শিশুরা খেলাধুলা করার ক্ষেত্রেও দুরাবস্থার শিকার। নির্মাণ কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় ১ বছর আগে । কিন্তু কাজের এখন ও ৫ ভাগ শেষ হয়নি। দীর্ঘদিন থেকে কাজ ফেলে রাখায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা দুর্ভোগে পড়েছেন। ঠিকাদারের অবহেলায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার থাকায় দিন দিন সমস্যা আরো বাড়ছে।
স্কুল গেইটে ন্যাম প্লেটে দেখা যায় ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর ৪ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে MDSP প্রকল্পের নির্মান কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্হাপন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা। নির্মান কাজের সময় ধরা হয় ২৪ মাস, সে সময় অতিবাহিত হয়েছে এখন ১০ মাস হতে চললো কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়াহেদ কনেকষ্টাশন স্কুল মাঠে বালু ফেলে রেখে আর আসে নি।
জানা গেছে ১৯৬২ সালে কালাপানিয়া ইউনিয়নে জগৎ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এদিকে বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে জরাঝীর্ণ ঘরে। নতুন ভবন নির্মাণের করা হচ্ছে এটাইভেবে তাই পুরোন ভবনটি ২০১৪ সালে ভেঙে ফেলা হয়েছে। ফলে বেড়া দিয়ে কোনো রকমে ঘর ঘেরাও করে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। নতুন ভবনের কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে বলতে পারে না কেউ।
পাঠদান অব্যাহত রাখার জন্য বাঁশের খুঁটি, বেড়া ও টিনের চাউনি দিয়ে অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা হয় ২০১৪ সালে । নড়বড়ে উক্ত স্থাপনাটি ঝড় বৃষ্টিতে গত ১০ বছর পর্যন্ত কয়েকবার বিধ্বস্ত হয়। এতে পাঠদান কার্যক্রম দূরূহ হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড তাবদাহে ও বৈরী আবহাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
ইতোমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী অত্র বিদ্যালয় ত্যাগ করে অন্যত্র চলে গেছে, যা সত্যিই খুবই দুঃখজনক বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে পড়ালেখা করছে ১৩০ জন শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের রেজাল্ট ও ভালো। কিন্তু শ্রেণিকক্ষের সংকট কারনে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
কালাপানিয়া জগৎ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলমগীর হোসন বলেন আমি ১১ বছর এই বিদ্যালয়ে কর্মরত আছি, যখন এ স্কুলে আসি তখন এখানে ২ টি ভবন জরাজীর্ণ ছিল ১৪ সালে আমরা ২ টি ভবন ঝুকিপূর্ণ বিধায় ভেঙে পেলার টেন্ডার দিয়েছি। তারপর বিদ্যালয় কতৃপক্ষ গাছ ও টিন দিয়ে ছোট্ট ঘর নির্মান করে কোন রকম স্কুলের পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি । কিন্তু ক্লাস রুম গুলো অত্যন্ত ছোট।
ভবন না থাকায় শিক্ষক রুম ও পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে, দশবছর আগে বিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রী ছিল ৩৫০ বর্তমান আধুনিক যুগে ভবন না থাকায় এলাকায় কোন অভিভাবক তাদের সন্তান দের এই স্কুলে না দিয়ে অন্য স্কুল বা মাদ্রাসা দিয়ে দিচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থী সংকটে হুমকির মধ্যে পড়তে পারে, বর্ষাকালে শ্রেণীকক্ষে পানি প্রবেশ করে উপর থেকে ও পানি পড়ে। গরমে ক্লাস করা ছাত্র-ছাত্রীদের কষ্টকর হয়ে পড়ে, এই থেকে দ্রুত আমরা উত্তরণ চাই।
এই বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খোরশেদ আলম কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এমডিএসফির আমাদের সন্দ্বীপে প্রায় ২৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের কাজ সবগুলো একই অবস্থার মধ্যে পড়ে আছে। বার বার আমরা বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কে জানিয়েছি।