নিজস্ব প্রতিনিধি (চট্টগ্রাম) : ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আহুত সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার নেতৃবৃন্দ। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বক্তারা বলেন, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সর্বস্তরের পেশাজীবীদের মর্যাদাপূর্ণ প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে আজকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত প্রিন্ট, ইলিক্ট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন নিউজ পোর্টাল সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিত্বকারী সাংবাদিক বন্ধুদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। একইসাথে বিপ্লবী অভিনন্দন ও নিঃশর্ত সমর্থন জানাচ্ছি বিশ্বনন্দিত ব্যক্তিত্ব নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে, তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের প্রতিটি সদস্যকে, যাঁরা একনদী রক্ত, ঘাম আর ত্যাগী জীবনের বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে অর্জিত বিপ্লবের আদর্শ ধারণ করে দেশ পূনর্গঠনের চ্যালেঞ্জিং দায়িত্ব নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে চলছেন।
একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী অভূতপূর্ব আলোড়নতোলা জুলাই ৩৬, ২০২৪ এর ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, আন্তরিক কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করছি এ মহাবিপ্লবের বীর সিপাহসালারদের, আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী ছাত্র-জনতা, মা-বোনদের যাঁদের অপরিসীম ত্যাগ আর সাহসের সম্মিলিত প্রয়োগ না হলে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হত না। ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন আর সম্প্রসারণবাদী শক্তির সৃষ্ট কৃষ্ণ গহবর থেকে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ কখনো মুক্তি পেত না।
দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের ১ মাস পূর্তির এই মহালগ্নে আমরা আরো শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে চাই বিগত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দেয়া বীরদের, গুম, খুন আর জেল জুলুমমের শিকার হওয়া অগুনিত গণতন্ত্রকামী মানুষের, হাসিনা দুঃশাসনের বিরুদ্ধে অবিরাম আপোষহীন লড়াইয়ের ভ্যানগার্ড ‘মাদার অব ডেমোক্রেসী’ বেগম খালেদা জিয়ার অপরিসীম ত্যাগ আর শির উঁচু করা সাহসের অকুন্ঠ প্রশংসা করছি।
আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক ও দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে যাঁর ফ্যাসিবাদ ও দুর্নীতি বিরোধী সাহসী লড়াই দেশবাসীকে নতুন রেঁনেসায় উদ্বুদ্ধ করেছিল।
বক্তারা আরও বলেন, ‘ মাদার অব হিপোক্রেসী’ শেখ হাসিনা বিগত ১৫ বছর ধরে মানবাধিকার আর ভোটাধিকার হরণের মাধ্যমে জগদ্দল পাথরের মত জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছিল। তার সরকার মেগা প্রজেক্ট, মেগা করাপশন আর মেগা মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে দেশ ও অর্থনীতিকে এক দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় নিয়ে গেছে। গণতন্ত্র আর মানবাধিকারকে নির্বাসনে পাঠিয়ে উন্নয়ন আর মুজিববাদদের বডি গেলানোকে স্বাধীনতা প্রিয় দেশবাসী কারাগারে শিকলবন্দী মানুষজনকে বিনামূল্যে সস্তা খাবার দিয়ে কোনো মতে বাঁচিয়ে রাখার অপকৌশল হিসেবে দেখেছে। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনকাল পৃথিবীর অন্যতম নিকৃষ্ট ফ্যাসিবাদী রেজিমের কুখ্যাতি অর্জন করেছে। শিক্ষক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, আলেম-ওলেমা সহ কোনো শ্রেণী পেশার মানুষই তার অপমান আর নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পাননি।